নৌপরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, “জাপান বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, জ্বালানি পরিবহন ও অবকাঠামো খাতে জাইকা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। জাইকার সার্বিক সহযোগিতায় মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মিত হচ্ছে। সমুদ্র বন্দর ব্যবস্হাপনায় জাপানের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে।” 

রবিবার (২৬ জানুয়ারি)  সচিবালয়ে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা) বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি দলের সাথে অনুষ্ঠিত  বৈঠকে এসব কথা বলেন।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, গত পঞ্চাশ বছরের বেশি সময়েও বাংলাদেশে কোনো সমন্বিত বন্দর ব্যবস্থাপনা কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়নি। প্রত্যেকটি বন্দর পৃথকভাবে তাদের কার্যক্রম ও উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকে। উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এখন আধুনিক ও সমন্বিতভাবে কার্যকর বন্দর ব্যবস্থাপনা সময়ের দাবি। বিশ্বের বিখ্যাত বন্দরগুলো এখন অটোমেশনের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর ফলে সেখানে বেশি বেশি বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে।” 

তিনি বলেন, “আমাদের মেরিটাইম সেক্টরেও আরো বেশি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে এবং একটি কার্যকর ও টেকসই বন্দর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার ‘ন্যাশনাল পোর্ট র্স্ট্যাটেজি’ প্রণয়ন করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই কৌশলপত্রের মাধ্যমে একটি সমন্বিত, শক্তিশালী ও যুগোপযোগী বন্দর কাঠামো গড়ে তোলা হবে। বন্দর কেন্দ্রিক সকল সেবাকে একটি প্লাটফর্মে আনতে মেরিটাইম সিঙ্গেল উইন্ডো চালু করা হবে।” 

জাইকার সহযোগিতায় ‘ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্যাটেজি’ প্রণয়নের মাধ্যমে দেশের মেরিটাইম সেক্টরে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা। 

জাইকার প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নে উপদেষ্টার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশ জাপানের অকৃত্রিম বন্ধু। জাপান সব সময় বাংলাদেশের জনগণের পাশে রয়েছে।” 

ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন জাইকার প্রতিনিধি দল। 

বৈঠকে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের অগ্রগতি পর্যালোচনাপূর্বক বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। ২০৩০ সালের মধ্যেই মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হবে বলে বৈঠকে আশা প্রকাশ করা হয়।

বৈঠকে জাইকা, বাংলাদেশ এর চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ Mr.

Ichiguchi Tomohide এর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/এএএম/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট সহয গ ত প রণয়ন

এছাড়াও পড়ুন:

রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা প্রয়োগে নীতিমালা কেন প্রণয়ন করা হবে না: হাইকোর্ট

সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার সম্পর্কে বলা রয়েছে। উল্লেখিত ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে নীতিমালা (গাইডলাইন) কেন প্রণয়ন করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রুল দেন। উল্লেখিত ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়নে নিষ্ক্রিয়তা সংবিধানের ৭, ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হিসেবে কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে, কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের দেওয়া যেকোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির রয়েছে। এই ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা নেই উল্লেখ করে এ বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে গত ২০ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান রিটটি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী ইশরাত হাসান নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যটার্নি জেনারেল মোহাম্মদ মহসিন কবির।

পরে আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিবসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।’

রিট আবেদনকারী আইনজীবীর ভাষ্য, সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতি সাজাপ্রাপ্ত কাউকে ক্ষমা করতে পারেন। এই ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে ইতিমধ্যে অনেক সাজাপ্রাপ্ত আসামি ক্ষমা পেয়েছেন, এর বেশির ভাগ হত্যা মামলার আসামি। ক্ষমা করার এই ক্ষমতা প্রয়োগে কোনো নীতিমালা নেই। অর্থাৎ কিসের ভিত্তিতে ও কোন কোন দিক বিবেচনায় ক্ষমা করা হয়—এ–সংক্রান্ত কোনো নীতিমালা নেই। এ ছাড়া বিভিন্ন ঘটনাদৃষ্টে সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের অপব্যবহার হয়, যেখানে রাজনৈতিক আদর্শ বিবেচনায় দণ্ডিতকে ক্ষমা করতেও দেখা যায়। যা সংবিধানের ৭, ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সে জন্য ক্ষমা করার এই ক্ষমতা প্রয়োগে নীতিমালা প্রণয়ন আবশ্যক। তাই জনস্বার্থে রিট করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা প্রয়োগে নীতিমালা কেন প্রণয়ন করা হবে না: হাইকোর্ট