শনিবার (২৫ জানুয়ারি,২০২৫) অবনমন অঞ্চলে থাকা ইপসউইচ সিটির বিপক্ষে হেসেখেলে ৪-১ ব্যবধানে জিতল লিভারপুল। তাতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ‘অল রেডদের’ শীর্ষ স্থান আরও মজবুত হলো। আপাত দৃষ্টিতে দেখলে আর তেমন আর বিশেষ কিছুই নেই এই ৯০ মিনিটে। তবে এই ম্যাচে ১টি গোলের দেখা পেয়েছেন ‘অল রেড’ তারকা মোহাম্মদ সালাহ। আর তাতেই এই মিশরীয় ছুঁয়ে ফেললেন লিভারপুলের জার্সিতে ভিন্নরকম এক ‘একশ’ গোলের মাইলফলক।

রোমা থেকে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে লিভারপুলে যোগ দেওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৩৮১ ম্যাচে ২৩৪ গোল করেছেন সালাহ; করিয়েছেন আরও ১০৫টি। শততম গোল তো তাহলে বহু আগেই এসেছে এই রাইট উইঙ্গারের! মূলত শনিবার রাতে ‘প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচের হিসেবে’ লিভারপুলের ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে ১০০ গোলের দেখা পেয়েছেন সালাহ! এই মিশরীয় চলমান মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় এখন পর্যন্ত ৩২ ম্যাচে ২৩ গোল এবং ১৭ অ্যাসিস্ট করেছেন।

‘অল রেড’দের জয়ে জোড়া গোল করেছেন কোডি গাকপো। আর একটি করে গোল করেছেন মোহাম্মদ সালাহ ও দমিনিক সোবোসলাই।

আরো পড়ুন:

ইউরোপিয়ান মঞ্চে সালাহর বিশেষ ‘ফিফটি’

পিএসজিতে যাবেন সালাহ!

খেলা শুরু ১১ মিনিটেই স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন দমেনিক সোবোসলাই। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে ব‍্যবধান দ্বিগুণ করেন সালাহ। ডাচ ফরোয়ার্ড হাকপোর ক্রসে লাফিয়েও বলের নাগাল পাননি সোবোসলাই। দূরের পোস্টে বল পেয়ে যান অরক্ষিত সালাহ। গতিময় শটে ইপসউইচ গোলরক্ষক ক্রিস্টিয়ান ওয়াল্টনকে পরাস্ত করেন তিনি। আর তাতেই তার অ্যানফিল্ডে গোলের ‘সেঞ্চুরি’ হয়ে যায়।

বিরতিতে যাওয়ার ঠিক আগে (৪৪ মিনিটে) কোডি গাকপো তৃতীয় গোলটি করেন। আর এই ডাচ ফরোয়ার্ড ৬৬ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলটা করে ইপসউইচের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকে দেন। ম্যাচের একদম শেষে একটি গোল শোধ করে অতিথি দলটি।

ম্যাচ শেষে লিভারপুল ম্যানেজার আর্নে স্লট বলেন, “আমরা আক্রমণাত্মক এবং প্রাধান্য বিস্তারকারী ছিলাম। ম্যাচের ৮৫ মিনিট পর্যন্ত (ইপসউইচ) আমাদের অর্ধে খুব একটা আসতেই পেরেনি। অবশ্যই কর্নার থেকে গোল হজম করাটা আমাদের যন্ত্রণা দিচ্ছে। কিন্তু তার আগ পর্যন্ত আমাদের পারফরম্যান্স ছিল নিখুঁত।” 

২২ ম্যাচ শেষে লিভারপুলের পয়েন্ট ৫৩। একই রাতের অন্য ম্যাচে জয় পেয়েছে ১০ জনের আর্সেনালও। উলভসের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ে দুই নম্বরে থাকা গানারদের সংগ্রহ ২৩ ম্যাচে ৪৭ পয়েন্ট।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

হিজরতের ৫টি শিক্ষা

সাহাবিদের হিজরতের ঘটনাবলি কেবল ইতিহাসের অংশ নয়, বরং তা মুমিন জীবনের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। তাদের হিজরতের ঘটনা ও ত্যাগের আদর্শ থেকে কয়েকটি মৌলিক শিক্ষা উঠে আসে:

১. হিজরত প্রথমত আল্লাহর আদেশ পালন

হিজরত কেবল কৌশলগত পরিকল্পনা ছিল না, বরং ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা এক ইবাদতমূলক নির্দেশ। এই কারণে সাহাবিরা সবচেয়ে প্রিয় বস্তু—ঘরবাড়ি, সম্পদ, আত্মীয়স্বজন—সহজে ত্যাগ করতে পেরেছিলেন। (মুহাম্মদ সাইদ রমাদান আল-বুতি, ফিকহুস সিরাহ, পৃষ্ঠা: ১৫৬, দারুল ফিকর, দামেস্ক, ২০০৪)

২. ইমানের জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ

হিজরত শেখায় যে একটি জাতির ভিত্তি স্থাপন এবং সত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য চরম মূল্য দিতে হয়। সুহাইব তাঁর সব সম্পদ, আবু সালামা তাঁর পরিবার এবং বনু জাহশ (রা.) জন্মভূমি ত্যাগ করে এই মূল্য পরিশোধ করেছিলেন। এই ত্যাগ বিনা মূল্যে অর্জিত হয়নি।

আরও পড়ুনমদিনায় হিজরত: ইসলামের ৬টি মাইলফলক০২ জুলাই ২০২৫৩. ইমানের সম্পর্ক অন্য সব সম্পর্ক থেকে ঊর্ধ্বে

ওমর (রা.) আইয়াশকে যখন তার মায়ের দোহাইয়ের ফিতনা থেকে সতর্ক করেছিলেন, তা প্রমাণ করে যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি আনুগত্যের বন্ধন অন্য সব জাগতিক সম্পর্ক (গোত্র, পরিবার, রক্ত) থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।

৪. ঐকান্তিক প্রচেষ্টার সঙ্গে আল্লাহর ওপর ভরসা

হিজরত মোটেই বিশৃঙ্খল ছিল না। ওমর (রা.)-এর পরিকল্পনা, কাফেলাবদ্ধ হয়ে যাত্রা এবং কৌশল অবলম্বন—সবই প্রমাণ করে যে আল্লাহর ওপর নির্ভরতার পাশাপাশি মানবীয় প্রচেষ্টা ও সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণ করাও আবশ্যক।

আরও পড়ুনমহানবী (সা.)–র হিজরত মদিনায় হলো যে কারণে২৯ জুন ২০২৫৫. আল্লাহর দয়ার বিশালতা

এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ফিতনা ও দুর্বলতা মানুষের জীবনে আসতে পারে। কিন্তু যখন তারা মক্কায় বন্দী হয়ে নিজেদের পাপী মনে করছিলেন, তখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াতটি নাজিল করে আশার দরজা খুলে দেন, ‘বলো, “হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের ওপর বাড়াবাড়ি করেছ (পাপ করেছ), তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করে দেন।”’ (সুরা জুমার, আয়াত: ৫৩)

এই আয়াতটি ছিল তাঁদের জন্য এক ঐশী ক্ষমা ও নতুন সুযোগের বার্তা।

হিজরত কেবল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়; এটি একটি অক্ষয়–দর্শন—যেখানে ইমান, ধৈর্য এবং আত্মত্যাগের সমন্বয়ে একটি আদর্শ সমাজ গঠনের বীজ নিহিত ছিল। এই দর্শনই মুসলমানদের নতুন এক দিগন্তে পৌঁছে দেয়।

আরও পড়ুনআবিসিনিয়ায় নারী সাহাবিদের দ্বিতীয় হিজরত১৪ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ