বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সম্মানজনক পদে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের দায়িত্ব পালন দেশের জন্য মর্যাদাহানিকর বলে মন্তব্য করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন।

বিবৃতিতে তিনি জানান, রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার এবং নিয়মবহির্ভূত কার্যকলাপের আশ্রয় নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে ডব্লিউএইচওর আঞ্চলিক পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে দুদক। দুর্নীতি দমন কমিশনের পাওয়া অভিযোগের ওপর পরিচালিত অনুসন্ধানে পাওয়া প্রাথমিক তথ্য থেকে জানা গেছে, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশের মনোনয়নের ভিত্তিতে পদায়নের জন্য রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার এবং নিয়মবহির্ভূত কার্যকলাপের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।

আকতারুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে- যুক্তিযুক্ত কোনও কারণ ছাড়াই সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সফরে সঙ্গী করা হয়। তাছাড়া, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতা হিসেবে প্রদত্ত তথ্যাদি যথাযথ ছিল না। ওই মনোনয়নকালে তিনি কানাডার পাসপোর্টধারী তথা কানাডার নাগরিক ছিলেন বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৭৬তম সম্মেলন উপলক্ষ্যে ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত দিল্লিতে বাংলাদেশ থেকে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় করে শতাধিক কর্মকর্তা ও প্রতিনিধি দল উপস্থিত হয়। এক্ষেত্রে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল নিজের পারিবারিক প্রভাব এবং তার নিকটাত্মীয়দের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাংলাদেশ সরকারের বিপুল অর্থ ক্ষতিসাধন করেছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের পাওয়া ভিন্ন একটি অভিযোগের ওপর পরিচালিত অনুসন্ধানকালে জানা গেছে, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে এবং তার পরিবারিক রাজনৈতিক প্রভাবের অপব্যবহারের মাধ্যমে বেআইনিভাবে ঢাকার পূর্বাচল নতুন শহর আবাসিক প্রকল্পের ডিপ্লোমেটিক জোনে ১০ কাঠা প্লট করায়ত্ব করেন। সে কারণে তার ও অন্যদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা দায়ের করেছে।

এছাড়াও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ‘সূচনা ফাউন্ডেশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে বিভিন্ন সামাজিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে জোরপূর্বক উপঢৌকন আদায় এবং অর্থ আত্মসাৎ করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের আওতায় অটিস্টিক সেলকে ব্যবহার করে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে রাষ্ট্রের বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করে নিজে লাভবান হয়েছেন। ওই অভিযোগ মতে, তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওপর অবৈধ প্রভাব বিস্তার করে বর্ণিত ফাউন্ডেশনের নামে পাওয়া অর্থ করমুক্ত করিয়ে নেন। যাতে সরকারের বিপুল অর্থের ক্ষতিসাধন হয়।

দুদক কর্মকর্তা আরও বলেন, সার্বিকভাবে দেখা গেছে- সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে। এমন একজন ব্যক্তি বাংলাদেশের মনোনীত হয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি সম্মানজনক পদে দায়িত্ব পালন করে যাওয়া দেশের জন্য মর্যাদাহানিকর। এতে বিশ্বে দেশের সুনাম ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র অপব যবহ র ব যবহ র র জন য পর চ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বাউফলে তরমুজভর্তি ট্রলার ছিনতাইয়ের মামলায় যুবদল কর্মীসহ গ্রেপ্তার ৩

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নদীবেষ্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে চাঁদার দাবিতে কৃষকের তরমুজভর্তি ট্রলার ছিনতাই ও চাঁদাবাজির অভিযোগে হওয়া মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর পাশাপাশি ছিনতাই হওয়া পাঁচ শ তরমুজ উদ্ধার করে ওই কৃষকের ছেলেকে বুঝিয়ে দিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের যুবদল কর্মী মো. সাইফুল, মো. মেহেদী হাসান (২০) ও গোলাম মুর্তজা (৪০)। এর মধ্যে মামলার প্রধান আসামি সাইফুলকে গত বুধবার রাতে এবং মেহেদী ও মুর্তজাকে আজ শনিবার সকালে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাইফুল নাজিরপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তাঁকে উপজেলা ছাত্রদল বহিষ্কার করেছে। বর্তমানে তিনি যুবদলের সক্রিয় কর্মী বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

পুলিশ, স্থানীয় চাষি ও ভুক্তভোগী কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার খেত থেকে ৮৬০টি তরমুজ কেটে ট্রলারে উঠিয়ে বরিশাল নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কৃষক মো. মানিক ব্যাপারী। দুপুর ১২টার দিকে বিএনপি নেতা এনায়েত হোসেনের ছেলে মো. সাইফুল (৩৫) দেশি অস্ত্রসহ ২০-২৫ জনের একটি দল নিয়ে ট্রলারের চালককে মারধর করেন। এরপর চর রায়সাহেব থেকে তরমুজভর্তি ট্রলারটি ছিনিয়ে নিয়ে নিমদী লঞ্চঘাটের দক্ষিণ পাশে ইটভাটার কাছে নিয়ে নোঙর করে রাখেন তাঁরা। খবর পেয়ে কৃষক মানিক ব্যাপারী সেখানে গিয়ে ট্রলারসহ তরমুজ ফেরত চাইলে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন সাইফুল ও তাঁর লোকজন। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে মানিক ব্যাপারী ও তাঁর ছেলে সাগরকে মারধর করে তরমুজ অন্য ট্রলারে উঠিয়ে নিয়ে যান সাইফুল। পরে ছয় হাজার টাকার বিনিময়ে ট্রলার ফেরত দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় বুধবার রাত ১২টার দিকে মো. মানিক ব্যাপারী বাদী হয়ে মো. সাইফুল ইসলামসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে আরও ২৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে বাউফল থানায় মামলা করেন। ওই রাতেই পুলিশ সাইফুলকে গ্রেপ্তার করে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সাইফুলের বিরুদ্ধে আগে থেকে দুটি মাদক মামলা, চাঁদাবাজিসহ অন্তত ছয়টি মামলা আছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘প্রধান আসামিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লুট হওয়া পাঁচ শ তরমুজ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আশা করছি খুব কম সময়ের মধ্যে বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুলিশকে গুলি ছোড়া সাজ্জাদ কেন ধরা পড়ছে না, যা জানা গেল
  • বাউফলে তরমুজভর্তি ট্রলার ছিনতাইয়ের মামলায় যুবদল কর্মীসহ গ্রেপ্তার ৩