বিশেষ মার্কিন অভিবাসন ভিসায় আফগানদের ফ্লাইট স্থগিত
Published: 26th, January 2025 GMT
বিশেষ মার্কিন অভিবাসন ভিসা পাওয়া আফগান নাগরিকের যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার ফ্লাইট স্থগিত হয়ে গেছে। সম্প্রতি সব বৈদেশিক সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত রাখার যে সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিয়েছেন, তার কারণেই যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া নিয়ে ৪০ হাজারের বেশি আফগান নাগরিক এ অনিশ্চয়তায় পড়লেন।
তবে এ ঘটনায় এসব আফগান নাগরিক আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের প্রতিশোধের শিকার হতে পারার ঝুঁকিও রয়েছে। প্রভাবশালী একজন আইনজীবী ও এক মার্কিন কর্মকর্তা শনিবার এসব তথ্য জানান। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ সব তথ্য উঠে এসেছে।
দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে অনেকগুলো নির্বাহী আদেশ জারি করেন ট্রাম্প। এমনই একটি আদেশে বিভিন্ন দেশের জন্য প্রায় সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করেন তিনি। পাশাপাশি নতুন করে কোনো সহায়তা দেওয়া বন্ধেরও নির্দেশ দেন। তবে জরুরি খাদ্যসহায়তা এবং ইসরায়েল ও মিসরের জন্য সামরিক সহায়তা কার্যক্রম চলমান রাখা রয়েছে।
আফগানদের নিয়ে কাজ করা একটি বেসরকারি সংগঠন ‘হ্যাশআফগানইভ্যাক’–এর প্রধান শন ভ্যানডাইভার বলেন, ওই আফগানদের অধিকাংশই আফগানিস্তানে এবং অন্যরা পাকিস্তান, কাতার ও আলবেনিয়ায় আটকা পড়েছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান সব বৈদেশিক সহায়তা কার্যক্রম ৯০ দিনের জন্য স্থগিত থাকবে। এ সময়ে এসব সহায়তা কার্যক্রম পুনর্মূল্যায়ন করা হবে। সহায়তা কার্যক্রমের কার্যকারিতা ও ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতির জন্য তা গুরুত্বপূর্ণ কি না, সেসব বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার দিনই ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, বৈদেশিক সহায়তার ওপর কঠোর বিধিনিষেধসংক্রান্ত ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ অর্থাৎ ‘সবার আগে আমেরিকার স্বার্থ’ নীতি গ্রহণ করবেন তিনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছে, বৈদেশিক সহায়তা স্থগিতের ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে ও আন্তর্জাতিক ত্রাণসহায়তা কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। ঘোষণাটির ফলে বৈশ্বিক পুষ্টি, স্বাস্থ্য, টিকাদান ও অন্যান্য কর্মসূচিও স্থগিত হয়ে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসে আগ্রহী আফগানদের স্পেশাল ইমিগ্রেশন ভিসার (এসআইভি) আওতায় দেশটিতে আবাসন, স্কুল ও চাকরি সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের তহবিলে অর্থায়নও আটকে গেছে ওই সিদ্ধান্তে।
নির্বাহী আদেশ জারির আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার চালানোর সময়ই ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসন নিয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
ভ্যানডাইভার বলেন, ‘মার্কিন বিশেষ ভিসার অনুমোদন পাওয়া আফগানদের ফ্লাইট স্থগিত করা উদ্দেশ্যমূলক বলে আমি মনে করি না। আমার ধারণা, এটি ভুলক্রমে হয়েছে।’
তবে তার প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসন ওই সিদ্ধান্ত থেকে আফগানদের বাদ দেবে। কেননা, আফগানিস্তানে যুদ্ধচলাকালে এই আফগানরা মার্কিন সরকারের পক্ষে কাজ করেছেন। ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তান থেকে চূড়ান্তভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে এ যুদ্ধের পরিসমাপ্তি হয়।
‘এই আফগানরা আমাদের পাশে থেকে লড়াই করেছেন এবং আমাদের মতো তাদেরও রক্ত ঝরাতে হয়েছে’ উল্লেখ করে ভ্যানডাইভার আরও বলেন, এসআইভি আবেদন মঞ্জুর হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন আরও হাজারো আফগান।
এ প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউস ও মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের মন্তব্য জানতে চাইলে তারা এখন পর্যন্ত সাড়া দেয়নি।
২০২১ সালে পশ্চিমা মদদপুষ্ট আশরাফ গনি সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানের শাসনক্ষমতা গ্রহণ করেন তালেবান যোদ্ধারা। এর আগে দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর দীর্ঘ ২০ বছর ধরে চালানো তথাকথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে বহু আফগান সে দেশের হয়ে কাজ করেছেন। বিশিষ্ট ব্যক্তি ও পরামর্শক গোষ্ঠীর জোট ‘হ্যাশআফগানইভ্যাক’ এই আফগানদের দেশত্যাগ ও পুনর্বাসনে কাজ করছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন আফগ ন স ত ন ক জ কর র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’