বাইডেনের আটকে দেওয়া বোমা ইসরায়েলকে দিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প
Published: 26th, January 2025 GMT
ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচার হামলা চালানোয় ইসরায়েলের জন্য তৈরি করা ‘২০০০ পাউন্ডের’ শক্তিশালী বোমার একটি চালান আটকে দিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
তবে নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের ওপর বাইডেনের আরোপিত ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য মার্কিন সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
আরো পড়ুন:
স্টারমারের প্রশংসায় ট্রাম্প
নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে ১৪ এপ্রিলকে বাংলা নববর্ষ হিসেবে স্বীকৃতি
এতে বলা হয়, শনিবার (২৫ জানুয়ারি) ডোনাল্ড ট্রাম্প এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের জানান, তিনি মার্কিন সেনাবাহিনীকে ইসরায়েলে ২০০০ পাউন্ড ওজনের বোমা সরবরাহের ওপর সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন।
ট্রাম্প বলেন, “বোমার চালানটি আমরা ছেড়ে দিয়েছি। ২০০০ পাউন্ড ওজনের বোমা সরবরাহের চালানটি আমরা আজ ছেড়ে দিয়েছি। এবং তারা (ইসরায়েল) সেটি পাবে। তারা (ইসরায়েল) এটির জন্য অর্থ প্রদান করেছিল এবং দীর্ঘ সময় ধরে এটির জন্য অপেক্ষা করছে।”
রয়টার্সের খবর অনুসারে, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের সময় বেসামরিক জনগণের ওপর, বিশেষ করে গাজার রাফায় এই বোমার প্রভাব কতটা ভয়ানক হতে পারে, সে বিষয়ে উদ্বেগের কারণে বাইডেন এই বোমা সরবরাহের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন।
২০০০ পাউন্ড ওজনের বোমা শক্তিশালী অবকাঠামো ধ্বংসস্তুপে পরিণত করতে পারে। গত বছর রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজার স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর, বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলে ২০০০ পাউন্ড ওজনের হাজার হাজার বোমা পাঠিয়েছিল কিন্তু একটি চালান আটকে রেখেছিল।
গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ওয়াশিংটন ইসরায়েলের জন্য কোটি কোটি ডলারের সাহায্য ঘোষণা করেছে।
কেন তিনি শক্তিশালী বোমাগুলো সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন জানতে চাইলে ট্রাম্প উত্তর দেন, “কারণ তারা (ইসরায়েল) এগুলো কিনেছে।"
শনিবার ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে বলেন, “অনেক জিনিস যা ইসরায়েল অর্ডার করেছিল এবং যার জন্য অর্থ প্রদান করেছিল, কিন্তু বাইডেন পাঠায়নি, এখন তা হাতে আসছে!”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরবর হ র ইসর য় ল র জন য ইসর য র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
থাই হাসপাতাল ছাড়ছে মিয়ানমারের শরণার্থীরা
বিদেশে মার্কিন সহায়তা স্থগিত করতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিশ্বজুড়ে। ইতোমধ্যেই দেশটির অর্থায়নে চলমান প্রকল্পের কাজ বন্ধ বা স্থগিত করা হয়েছে। এ অবস্থায় বন্ধ করা হয়েছে জাতিসংঘের বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার কার্যক্রম।
এর প্রভাবে থাইল্যান্ড-মিয়ানমার সীমান্তে লাখ লাখ শরণার্থীকে চিকিৎসা দেওয়া স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি (আইআরসি)। বাধ্য হয়ে থাই কর্মকর্তারা এখন কেন্দ্রগুলোর গুরুতর অসুস্থ রোগীদের অন্য হাসপাতালে সরিয়ে নিচ্ছেন।
স্থানীয় এক কর্মকর্তা ও ক্যাম্প কমিটির দুই সদস্যের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ক্লিনিকগুলোতে অর্থ দেওয়া আইআরসি আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সীমান্তের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো বন্ধ করতে বলেছে। এ প্রসঙ্গে মন্তব্য চাইলেও আইআরসি তাতে সাড়া দেয়নি।
বিশ্বজুড়ে বৈদেশিক সহায়তায় পরিমাণের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অবদান সর্বোচ্চ। কিন্তু আমেরিকা ফার্স্ট নীতিকে প্রাধান্য দেওয়া ট্রাম্প ক্ষমতায় যাওয়ার প্রথম দিনেই প্রায় সব বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করার নির্বাহী আদেশ জারি করেন। তাঁর এ স্থগিতাদেশ বৈশ্বিক সহায়তা খাতকে ব্যাপক অস্থিরতার দিকে ঠেলে দেয়।
মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ট্রাম্পের স্থগিতাদেশ সত্ত্বেও জীবনরক্ষাকারী মানবিক ত্রাণ সহায়তা বন্ধ থাকবে না। তাদের এই ছাড়ে থাই-মিয়ানমার সীমান্তের হাসপাতালগুলো চালু থাকবে কিনা, কিংবা লাখ খানেক লোককে আশ্রয় দেওয়া ৯টি ক্যাম্পের কতটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র উপকৃত হবে, তাৎক্ষণিকভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সীমান্তের এসব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো যুদ্ধবিধ্বস্ত মিয়ানমারের লাখ লাখ লোককে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছিল।
থাইল্যান্ডের পশ্চিমাঞ্চলীয় তাক প্রদেশের থা সং ইয়াং জেলার মায়ে লা ক্যাম্পের শরণার্থী কমিটির সদস্য বুয়েহ সে ও স্থানীয় এক স্কুলশিক্ষক বুধবার জানান, আইআরসি ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো থেকে অনেক রোগীকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি তারা অন্তঃসত্ত্বা নারী ও অক্সিজেন ট্যাঙ্কের ওপর নির্ভরশীল শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীদের সরঞ্জাম ও ওষুধ সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে। ক্যাম্পের পানি সরবরাহ ও আবর্জনা নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনায় সংস্থাটির সহায়তাও বন্ধ বা সংকুচিত হচ্ছে, বলেছেন তারা।
সহায়তা স্থগিতে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে শরণার্থী ক্যাম্পগুলোর মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা ক্ষতিগ্রস্ত হবে– এমন উদ্বেগ বাড়ছে, বলেছেন দক্ষিণ মিয়ানমারের সংগঠন হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন অব মোনল্যান্ডের (হারফম) প্রকল্প পরিচালক নাই অয়ে মোন।
তাক প্রদেশের গভর্নর চুচিপ পংচাই থাই বলেছেন, গুরুতর অসুস্থ রোগীদের স্থানীয় প্রাদেশিক হাসপাতালগুলোতে স্থানান্তর করা হবে। থাই কর্মকর্তারা আইআরসির কাছে তাদের যন্ত্রপাতি ব্যবহারের অনুমতিও চেয়েছেন। থা সং ইয়াং হাসপাতালের পরিচালক ড. তাওয়াতচাই ইংতাউইসাক বলেছেন, রোগীদের অবস্থা খতিয়ে দেখতে তিনি শরণার্থী শিবিরে যাচ্ছেন। কোন কোন রোগী বাড়ি যেতে পারবেন, কাদের অক্সিজেন এবং অন্যান্য সহায়তা লাগবে তা পর্যালোচনা করতে হবে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের পর জাতিসংঘ সংস্থাগুলো তাদের বৈশ্বিক সহায়তা কার্যক্রম বন্ধ করতে শুরু করেছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, ১৩৬টি দেশের বাস্তুচ্যুত ১২২ মিলিয়ন মানুষকে জীবনরক্ষাকারী সহায়তা প্রদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মার্কিন তহবিল স্থগিত হওয়ায় এ কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে বলে দেশগুলোকে ই-মেইলের মাধ্যমে জানানো হয়েছে।