কিলিয়ান এমবাপে জন্মভূমি ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় ক্লাব পিএস জি ছেড়ে রিয়ালে যোগ দেওয়ার পরে সমালোচনা কম হয়নি। স্বাভাবিকভাবে রেকর্ড ১৫ বারের ‘ইউরোপ চ্যাম্পিয়নদের’ সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্রথম দিকে সময় লাগছিল বিশ্বকাপ জয়ী ফুটবলারের। তাতেই ‘সমালোচনার তীরে বিদ্ধ’ হচ্ছিলেন ২৬ বছর বয়সী এই উইঙ্গার। তবে শেষ ৫ ম্যাচে ৮ গোল করে সেই সমালোচনা বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। আর শনিবার (২৫ জানুয়ারি, ২০২৫) রাতে তো করে বসলেন রিয়ালের জার্সিতে প্রথম হ্যাটট্রিক!

শনিবার এমবাপের হ্যাটট্রিকে লা লিগার ম্যাচে রিয়াল ভায়াদোলিদকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। তাতে কার্লো আনচেলত্তির দল টেবিলের শির্ষ স্থানটি আরও পোক্ত করল। ২১ ম্যাচে রিয়ালের পয়েন্ট ৪৯। সমান ম্যাচে অ্যাথলেটিকোর পয়েন্ট ৪৫। এক ম্যাচ কম খেলে বার্সেলোনা মালিক ৩৯ পয়েন্টের।

আরো পড়ুন:

এমবাপের জোড়া গোলে টেবিলের চূড়ায় রিয়াল

১৫ ম্যাচ পর অ্যাটলেটিকোর হার

 

ঘরের মাঠ হোস জোরিলা স্টেডিয়ামে ম্যাচের প্রথম দিকে অতিথি রিয়ালের রীতিমত পরীক্ষা নিয়েছে ভায়াদোলিদ। তবে ‘সোনার হরিণ’ গোলের দেখা পায়নি স্বাগতিকরা। উল্টো ৩০ মিনিটের মাথায় তাদের জালে প্রথমবার বল জড়িয়ে দেন এমবাপে। জুড বেলিংহ্যামের সঙ্গে বল আদান-প্রদান করতে করতে ডি-বক্সের ভেতর প্রবেশ করে দুর্দান্ত এই গোল করেন তিনি।

এমবাপে দ্বিতীয় গোল করেন ৫৭ মিনিটে। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষে যখন মনে হচ্ছিল আরেকটি ‘জোড়া গোলের’ রাত পার করবেন ফরাসি তারকা ঠিক তখনই প্রতিক্ষের ১৮ গজের মধ্যে ট্যাকেলের শিকার হন জুড বেলিংহ্যাম। সেই সুবাদে দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে (৯১ মিনিটে) পেনাল্টি থেকে লক্ষ্যভেদ করে রিয়ালের জার্সিতে প্রথম হ্যাটট্রিক পূরণ করেন এমবাপে।

ম্যাচ শেষে এমবাপে বলেন, “হ্যাটট্রিকের করে খুশি। তবে জয়ের জন্য আরও বেশি খুশি। আজকের জয়টা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিশেষ কর অ্যাতলেটিকোর ড্রয়ের পরে আমাদের উপর বেশি চাপ ছিল।”

এমবাপের সামনে সুযোগ আছে লা লিগার সর্বোচ্চ স্কোরার হওয়ার। তবে এই ফরাসি তারকা মনে করিয়ে দিলেন, দলের জয়টাই তার কাছে সবার আগে, “আমি সর্বোচ্চ স্কোরার হতে পারলে ভালো, না হলেও ক্ষতি নেই, ক্যারিয়ারে অনেকবারই এটা হয়েছি (ফরাসি লিগ ওয়ানে)। তবে আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো লিগ জয় করা।”

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ল য় ন এমব প প এমব প র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্যাসিবাদ নির্মূল না করে গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না: নুর

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেছেন, “গণঅভ্যুত্থানের আট মাসেও গণহত্যার বিচার ও গণহত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক দলগুলো নিজদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত ও আধিপত্য কায়েমে ব্যস্ত হয়ে গেছে। যে কারণে আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা রাজপথে নেমে হুঙ্কার দিচ্ছে। কিন্তু ফ্যাসিবাদ নির্মূল না করে গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না।”

জুলাই আগষ্টের গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শুক্রবার মোহাম্মদপুর বসিলা বাসস্ট্যান্ডের পাশে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর আ‌য়ো‌জিত গণসমাবেশে তি‌নি এ কথা ব‌লেন।

নুর ব‌লেন, “জুলাই বিপ্লবের পর দলগুলো নিজেদের সমীকরণ মেলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। যে কারণেই অভ্যুত্থানের আট মাস পার হলেও নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর যারা হামলা চালিয়েছে, গুলি চালিয়েছে তাদের বিচার করা সম্ভব হয় নাই।”

আরো পড়ুন:

আদালত চলতো হাসিনার নির্দেশে, রায় আসতো গণভবন থেকে: নুর

উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনসহ চার দফা দা‌বি গণঅধিকার প‌রিষ‌দের

“প্রশাসন আগের মতো দলবাজি শুরু করছে। ২/১ টি দলের সাথে সখ্যতা গড়ে তাদের কাজ চালাতে চাচ্ছে। প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যারা দলবাজি করবে তাদের পরিণতি হারুন-বেনজীরদের মতো হবে।”

তি‌নি ব‌লেন, “সড়ক-পরিবহন, কল-কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন এলাকায় এখনো চাঁদাবাজি-দখলবাজি চলছে। কিশোর গ্যাং, মাদক ব্যবসায়ীসহ অপরাধীদের রাজনৈতিক নেতারা শেল্টার দিচ্ছে, জনগণ এগুলো পছন্দ করছে না।এদের বিরুদ্ধে জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এদেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম, অধিকার আদায়ে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ, কৃষক-শ্রমিক জীবন দেয় আর সুযোগ-সুবিধা ভোগ ভাঁওতাবাজ ও ভণ্ড নেতারা, ওপর তলার কিছু লোকেরা। তাই সাধারণ এখন নেতৃত্ব এগিয়ে আসতে হবে।”

রাষ্ট্রের সংস্কার করে গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার আহ্বান জা‌নি‌য়ে নুর ব‌লেন, “ফ্যাসিবাদ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না। ফ্যাসিবাদ নির্মূলে আজ থেকে গণঅধিকার পরিষদের প্রতিরোধ শুরু হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের অংশীদার রাজনৈতিক দলসমূহকে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে অবস্থান পরিস্কার করার আহ্বান জানাই।”

“জুলাইয়ের বীর-জনতাকে আরেকটু ধাক্কা দিয়ে ফ্যাসিবাদ নির্মূল করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে ফ্যাসিবাদকে চিরতের উৎখাত করতে জুলাই আন্দোলনের সব অংশীজনকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানাই।”

নুরুল হক নুর বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ নিয়েও রাজনীতি চলছে যা মোটেও কাম্য নয়। বর্তমান রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলে দেশের সংষ্কার প্রয়োজন বলেই সরকারের বিরুদ্ধে গণঅধিকার পরিষদ কোন বক্তব্য দেয় নাই। তবে আহতদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতি পূরণ না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো রাষ্ট্র পরিচালনা করলে তা মেনে নেওয়া হবে না।”

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা অংশ নিয়েছেন, যারা ফ্যাসিবাদ হটাতে সক্রিয় ছিলেন, আগামী বাংলাদেশে নেতৃত্ব দিতে তাদেরকে প্রস্তুত হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

এ সময়ে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান ভূঁইয়াকে ঢাকা-১৩ আসনে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী হিসেবে উপস্থিত নেতাকর্মী-জনতার মাঝে পরিচয় করিয়ে দেন নুরুল হক।

গণঅধিকার পরিষদ মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি নাজিম উদ্দীন, ঢাকা মহানগর উত্তরে সহ-সভাপতি রকিবুল হাসান রাকিব, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুজ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারজানা কিবরিয়া, যুগ্ম সাধারণ মো. ইমরান প্রমুখ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ