নিজেকে প্রতি মুহূর্তের লেখক মনে করি: মনি হায়দার
Published: 26th, January 2025 GMT
কথাসাহিত্যিক মনি হায়দারের জন্ম ১৯৬৮ সালের পহেলা মে। তিনি বেড়ে উঠেছেন বৃহত্তর বরিশালের পিরোজপুর জেলার ভানডারিয়া উপজেলার প্রমত্ত কচানদীর পারে, বোথলা গ্রামে। ১৯৮৬ সালে তার প্রথম লেখা প্রকাশ হয় অধুনালুপ্ত ‘দৈনিক বাংলার বাণী’ পত্রিকার শাপলা কুঁড়ি পাতায়। মনি হায়দারের প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ষাটের অধিক। তিনি দীর্ঘদিন কাজ করেছেন বাংলাদেশ বেতারে। এরপর ২০১৫ সাল থকে বাংলা একাডেমিতে পাণ্ডুলিপি সম্পাদক হিসেবে কর্মরত। টিভি অনুষ্ঠান উপস্থাপনায়ও দেখা যায় তাকে। মনি হায়দার দুই-দুইবার অর্জন করেছেন অগ্রণী ব্যাংক শিশু সাহিত্য পুরস্কার। এ ছাড়াও নানা পুরস্কার রয়েছে তার অর্জনের তালিকায়। ২০২৫ বইমেলায় এই কথাসাহিত্যিকের একাধিক বই প্রকাশ হচ্ছে। প্রকাশিতব্য বইয়ের বিষয়বস্তু নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন মনি হায়দার। সাক্ষাৎকার গ্রহণে স্বরলিপি।
রাইজিংবিডি: ২০২৫ বইমেলায় আপনার একাধিক বই প্রকাশ হচ্ছে। বিষয়বস্তুর দিক দিয়ে প্রত্যেকটা আলাদা। আলাদা বিষয়বস্তু নিয়ে একযোগে কীভাবে কাজ করেন?
মনি হায়দার: শুরুতেই ধন্যবাদ জানাই। আসছে বইমলোর অগণিত পাঠকের জন্য শুভ ভালোবাসা। একজন লেখক খণ্ডকালীন লেখক নন, তিনি প্রতি মুহূর্তের লেখক। আমি নিজেকেও প্রতি মুহূর্তের লেখক মনে করি। লেখকের চিন্তা-করোটিকলার মধ্যে যখন কোনো আখ্যান প্রবেশ করে, তখন থেকেই সেই চিন্তা বা আইডিয়া ডেপলভ হতে থাকে, নানা ধরনের বিষাক্ত পরিস্থিতির মধ্যেও। ঠিক সেইভাবে লেখা বা গল্প বা উপন্যাসের কোনো আখ্যান আমার করোটিতে জায়গা করে নিলে ওই আখ্যান ভেতরে ভেতরে নানা ধরনের কর্মের মধ্যেও কাজ করে যাই ঘুণ পোকার মতো। ঠিক সেইভাবে একের পর আমি আমার আখ্যানগুলো সাজাই এবং সরাসরি কম্পিউটারে লিখি। একটা আখ্যান থেকে আর একটা আখ্যান, পটভূমি, বিন্যাস, ঘটনার পরম্পরা একেবারেই ভিন্ন, সুতরাং একটা গল্প বা উপন্যাস থেকে আর একটা ভিন্ন হবে, স্বাভাবিক।
রাইজিংবিডি: ‘ফ্যান্টাসি’ বইটিতে কি ধরনের গল্প স্থান পেয়েছে?
মনি হায়দার: গল্পই আমার সাধনার ক্ষেত্র। প্রতি বছর বইমেলায় আমার একটা করে গল্পের বই প্রকাশিত হচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছর আসছে ‘ফ্যান্টাসি’ গল্পের বই। দশটা গল্প ধারণ করে ‘ফ্যান্টাসি’ গল্পের বইটা। প্রকাশ করছে নবভাবনা। আমার কয়েকটা সিরিজ গল্প আছে— যেমন মাইকেল মধুসূদন দত্ত, বাংলা সাহিত্যের অতুলনীয় চরিত্রটা নিয়ে আমি ইতিমধ্যে চারটে গল্প লিখেছি, তার একটা গল্প— মৃত্যুর পর মহান মাইকেল, আর একটা সিরিজ আহীর আলমের বাম পা— সেই সিরিজের গল্প, জীবনাননন্দ দাশ নিয়ে নিয়ে সিরিজ— সেই সিরিজের বনলতা সেন গল্প, সত্তুর দশকে গ্রামে চিঠি দিয়ে ডাকাতেরা ডাকাতি করতো, তার পটভূমি এবং পরিণতি ধারণ করে গল্প— ধিকিধিকি, মুক্তিযুদ্ধ আমার প্রিয় অনুসঙ্গ— সেই অনুসঙ্গের একাত্তরের পারিবারিক সংকট লোভ ও লালসার পরিধিতে গল্প ক্র্যাচ, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূর্ত চরিত্র- স্বাধীন বাংলাদেশের একজন মানুষ হিসেবে আমি বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করি- সেই পটভূমির গল্প শিথানে শেখ সাব, শৈশবে বৈশাখ মাসে নতুন পানি উঠলে কোলায় মাছ ধরতে যেতাম এবং একবার পথ হারিয়ে প্রায় মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলাম, সেই ঘটনা নিয়ে গল্প— পানির উপর বিড়াল হাঁটছে.
রাইজিংবিডি: মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস ‘কিংবদন্তীর ভাগীরথী’। ইতিহাসভিত্তিক এই উপন্যাসের তথ্য-উপাত্ত কীভাবে সংগ্রহ করেছেন। সত্য ঘটনা উপন্যাসে স্থান দিতে গিয়ে একজন ঔপন্যাসিককে কোন কোন সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়?
মনি হায়দার: ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে বরিশালের মহকুমা শহর পিরোজপুরে ভাগীরথীকে দখলদার পাকিস্তান আর্মী কেপ্ট করে রেখেছিল ক্যাম্পে। ভাগীরথী মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে তথ্য দিলে মুক্তিযোদ্ধারা ‘এ্যামবুশ’ করলে অনেক পাকিস্তানী আর্মী মারা যায়। পাকিস্তান আর্মীরা বুঝতে পেরে ভাগীরথীকে নারকীয় শাস্তি দেয়। জীবিত অবস্থায় জীপ গাড়ির পিছনে বেঁধে পিরোজপুর শহরের রাস্তার ওপর টেনে টেনে মুমূর্ষ যন্ত্রনায় তিলে তিলে হত্যা করে। সেই পটভূমি ধারণ করে আমার উপন্যাস ‘কিংবদন্তির ভাগীরথী’। বইমেলায় চতুর্থ মুদ্রণ আসছে জাগতিক থেকে। ভাগীরথী সর্ম্পকে আমি প্রথম জানতে পারি আফসানা কিশোয়ারের একটি গল্পে, যতদূর মনে পড়ে নাম ছিল ‘কাল ও ভূপাল’। আমি পিরোজপুরের সন্তান। ইতিমধ্যে বেহুলাবাংলার প্রকাশক চন্দন চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের সত্যি ঘটনা নিয়ে একশোটা উপন্যাস প্রকাশের ঘোষনা দেয়। আমার মধ্যে একটা তাড়না অনুভব করি। উপন্যাসে ভাগীরথীকে আঁকবার জন্য আমি পিরোজপুরে যাই। আমাকে সাহায্য করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সামসুজ্জোহা মিলন, কবি সোহাগ সিদ্দিকী।
আমি ভাগীরতীর বাড়িতে যাই। ওনার ছেলে ও পাড়াপ্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলি। কিন্তু স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা ছিল ভাগীরথীর বিপরীতে। যাইহোক, আমি আমার মতো করে পরম স্বাধীনতার চরম শহীদ এক নারীর মৃত্যকারতযন্ত্রনা তুলে ধরবার চেষ্টা করেছি কিংবদন্তির ভাগীরথী উপন্যাসে। পাঠকেরা আগ্রহ করে কিনছেন, আমার শ্রম স্বার্থক। ভাষা আন্দোলনের আর এক মহত্তম চরিত্র কল্যাণী রায় চৌধুরী বা মমতাজ বেগমকে নিয়ে আর একটি উপন্যাস লিখেছি ফাগুনের অগ্নিকণা নামে। প্রকাশিত হয়েছে বেঙ্গল পাবলিকেন্স থেকে। আগামী বছর লিখবো কুমিল্লার লাকসামের নবাব ফয়জুন্নেসাকে নিয়ে।
ইতিহাসকে ধারণ করে সব সময়ে সঠিক প্রজ্ঞায় উপন্যাস লেখা যায় না। কল্পনার সঙ্গে বাস্তবের অনুসঙ্গ মিলিয়ে বিশ্বাসযোগ্যভাবে আখ্যান ফুটিয়ে তোলা কঠিন। কিন্ত লিখতে এসে কঠিন বলে তো দায় বা অন্তরের দৃষ্টিভঙ্গিকে তো অস্বীকার করতে পারি না।
রাইজিংবিডি: পাতলাদা সিরিজের প্রথম উপন্যাস 'উড়িতেছে সোনার ঘোড়া' সম্পর্কে জানতে চাই।
মনি হায়দার: আমার লেখালেখির যাত্রা শিশুদের জন্য লেখা গল্প দিয়েই। ইতিমধ্যে শ’দেড়েক গল্প লিখেছি শিশুদের জন্য। বইও অনেক। এক সময়ে মনে হলো একটা ক্যারেকটার দাঁড় করাই। সেই চিন্তা থেকেই পাতলাদা। পাতলাদ মোটেই পাতলা নয়, যথেষ্ট স্বাস্থ্যবান। বখতিয়ার খলজি মার্কা বড় লম্বা হাত। পুরোনো ঢাকার জুরাইন কেন্দ্র করে পাতলাদার যতো কাণ্ডকারখানা। ইতিমধ্যে ত্রিশটি গল্প লিখেছি। সেই গল্প নিয়ে পাঞ্জেরী থেকে এসেছে গতমেলায় পাতলাদা গল্প সমগ্র।
এবার আসলো পাতলাদা সিরিজের প্রথম উপন্যাস ‘উড়িতেছে সোনার ঘোড়া’। পাতলাদা জুরাইনের ভূগর্ভস্ত কারখানায় এই ঘোড়াটা তৈরি করে। ঘোড়াটার বৈশিষ্ট – পানিতে চলতে পারে, আকাশে উড়তে পারে, আবার ট্রেনের গতিতে মাটিতেও...। খুবই আকর্ষণীয় ঘোড়াটা শত্রু দেশ ফাকিস্তান কেড়ে নিতে চায় বা চুরি করে দখল করতে চায়। বাকিটা আর লিখবো না, পাঠক বন্ধুরা পড়েই মজা নেবে। পাঞ্জেরী পাবলিকেন্স এর আধিকারিক শায়ক (কামরুল হাসান শায়ক) ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে, পাতলাদার সব গল্প উপন্যাস প্রকাশিত হবে, এখান থেকে। আগামী বছর মেলায় আসবে পাতলাদার উপন্যাস ‘বাঘের পিঠে পাতলাদা’!
রাইজিংবিডি: প্রকাশিতব্য উপন্যাস ‘মোকাম সদরঘাট’ এর প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জানতে চাই?
মনি হায়দার: এবারের বইমেলায় আমার মূল আকর্ষণ বিশাল আকারের উপন্যাস ‘মোকাম সদরঘাট’। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষ লঞ্চে ঢাকায় আসে, প্রথম পা রাখে ঢাকার সদরঘাটে। আসে বেড়াতে নয়তো জীবনে প্রতিষ্ঠার আশায়। অনেকে প্রতিষ্ঠিত হয়, অনেকে জীবন ঘষে আগুন জ্বালাতে না পেরে স্রোতে হারিয়ে যায়। লঞ্চের যাত্রা ও যাত্রীদের বিচিত্র রূপ ও পরিস্থিতি, একই সঙ্গে জীবন যুদ্ধের গ্রাম ও শহরের দুই মেরুকে একটি সুতোয় বাঁধার বিশাল ক্যানভাস ‘মোকাম সদরঘাট’। বত্রিশ ফর্মার ‘মোকাম সদরঘাট’ আসার কথা বেঙ্গল বুকস থেকে। আসবে কি না জানি না, যদিও পাণ্ডুলিপি দিয়েছি অনেক আগে, এখনও কভার পাইনি।
রাইজিংবিডি: একজন লেখকের বই প্রচারণা কৌশল কেমন হওয়া উচিত?
মনি হায়দার: বইয়ের প্রচারণায় নামার কথাতো প্রকাশকের। কিন্ত নাদান এবং আবাল প্রকাশকেরা বই বের করে অপেক্ষায় থাকে, লেখক বই কাঁধে করে বিক্রি করবে। বইয়ের কোনো বিজ্ঞাপন কোনো প্রকাশক কোনো পত্রিকায় দেয়? বই যে একটা পণ্য, প্রচারের দরকার মুর্খ প্রকাশকেরা বোঝে না। আলু পটলের ব্যবসা করা দরকার এদের, বইয়ের মেধাস্বত্ব নিয়ে এমন বিকৃতি কেবল বাংলাদেশেই সম্ভব।
রাইজিংবিডি: মুদ্রিত বইয়ের পাশাপাশি অডিও, পিডিএফ হওয়ার ট্রেন্ডকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
মনি হায়দার: যে সময়ে বাস করছি, সেই সময়ের সকল প্রযুক্তির বিকাশ নিয়েইতো আমি। সুতরাং....
রাইজিংবিডি: রয়্যালিটি পাওয়ার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত করেন?
মনি হায়দার: রয্যালিটি ছাড়া আমি কোনো পাণ্ডুলিপি কোনো প্রকাশকে দিই না, গত দশ বছরে এইটুকু আমার জন্য প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি। একই সঙ্গে সকল লেখকের কাছে আবেদন রাখছি, অর্থ বা সন্মানী ছাড়া কোনো প্রকাশককে পাণ্ডুলিপি না দিতে। কিন্ত সমস্যা হচ্ছে মুরগী লেখক...
ঢাকা/লিপি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র উপন য স বইম ল য় আর একট র জন য প রথম র একট বইয় র
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ
বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।
জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।
জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।
এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।
আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।
বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়।