সোনাগাজীতে দুর্বৃত্তদের হামলায় তিন যুবদলকর্মী আহত
Published: 26th, January 2025 GMT
ফেনীর সোনাগাজীতে দুর্বৃত্তদের হামলায় তিন যুবদলকর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের পুরাতন সওদাগরহাট নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- চরদরবেশ ইউনিয়নের মাদ্রাসাপাড়া এলাকার জামাল উদ্দিন খোকন (৩৪), মোহাম্মদ আবদুল্লাহ টিটু (৪৩) ও রুবেল (৪০)। তারা উপজেলা যুবদলের কর্মী বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের পুরাতন সওদাগরহাট এলাকায় কৃষক দলের প্রস্তুতি সভা শেষে বাড়ি ফিরছিলেন তিন যুবদলকর্মী। পথে একদল দুর্বৃত্ত তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে তিন জনই আহত হন। আহতাবস্থায় তাদের প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে জামাল উদ্দিন খোকনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
আহত যুবদলকর্মী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ টিটু বলেন, ‘‘প্রোগ্রাম শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা আমাদের পথরোধ করে। কিছু বুঝে উঠার আগে তারা এলোপাথাড়ি কুপিয়ে তিন জনকে জখম করে।’’
জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক সামছুদ্দিন খোকন বলেন, ‘‘হামলার ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত বলে মনে হচ্ছে। যতদূর জেনেছি, মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় জামাল উদ্দিনসহ তার সঙ্গে থাকা লোকজনের ওপর হামলা হয়েছে।’’
সোনাগাজী উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক খুরশিদ আলম ভূঞা বলেন, ‘‘আহতরা যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতাদের জানানো হয়েছে।’’
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো.
সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বায়েজীদ আকন বলেন, ‘‘পুরাতন সওদাগরহাট এলাকায় হামলার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/সাহাব/রাজীব
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পটুয়াখালীর আদালত চত্বরে আসামিদের ইট দিয়ে পা থেতলে দিয়েছে বাদীর লোকজন
পটুয়াখালী জেলা জজ আদালত চত্বরে হাজিরা দিতে এসে মারধরের শিকার হয়েছেন আসামিরা। বাদীর লোকজন ইট দিয়ে পা থেতলে দিয়েছে আসামিদের। বুধবার বেলা ১২টার দিকে জেলা আইনজীবী সমিতির প্রধান গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বাদীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে ভুক্তভোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসাও নিতে পারেননি। এ ঘটনায় আদালত পাড়ায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। হামলায় অংশ নেওয়া সবাই বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
এদিকে এ কর্মকাণ্ডের সময় উপস্থিত লোকজন ছবি ও ভিডিও ধারণ করলেও তা রাখতে পারিনি। হামলাকারীরা নানা ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দিয়ে জোরপূর্বক হামলার ছবি ও ভিডিও ডিলেট করতে বাধ্য করেন। হামলায় আহতরা হচ্ছেন- মো. সোহাগ মিয়া ও মো. জামাল। এদের মধ্যে সোহাগ মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত সোহাগ সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মরহুম মাহবুবুর রহমান তালুকদারের ভাতিজা এবং কলাপাড়া নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল মিয়ার ছোট ভাই।
হামলায় গুরুতর আহত সোহাগ মিয়ার বড় ভাই মো. আল-আমিন জানান, ২০১২ সালে কলাপাড়ায় ছাত্রদল নেতা মো. জিয়া নিহত হওয়ার ঘটনায় ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে একটি মামলা হয়। সেই মামলার আসামিরা হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বুধবার পটুয়াখালী আদালতে হাজিরা দিতে গেলে মামলার বাদীসহ পটুয়াখালী বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় তারা ইট দিয়ে আঘাত করে সোহাগের হাটু থেতলে দেয় এবং বাকীদের বেধড়ক মারধর করে।
এদিকে হামলার শিকার হয়ে ভুক্তভোগীরা পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলেও আহতদের সেখানে চিকিৎসা নিতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন নেতাকে মোটরসাইকেলে করে টহল দিতে দেখা যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া বলেন, ‘উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসার পর বুধবার তারা আদালতে হাজিরা দিতে যায়। এ সময় তাদের ১০ থেকে ১২ জনকে মারধর করে গুরুতর জখম করে। আহত করার পর তাদের কালো কাপড় দিয়ে চোখ বেঁধে বসাকবাজার এলাকায় নিয়ে যায় এবং পরে সেখানে ছেড়ে দেয়। তারা তাদের চিকিৎসা পর্যন্ত করতে দেয়নি। আদালতের মত জায়গায় আজ মানুষের নিরাপত্তা নেই।’
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ.টি এম. মোজাম্মেল হোসেন তপন বলেন, ‘আমি তখন আদালতে ছিলাম, কি হয়েছে তা ঠিক বলতে পারছি না।’
পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ওয়াহিদ সরওয়ার কালাম সমকালকে বলেন, ‘আদালত চত্বরে এ ধরনের ঘটনা নিন্দনীয় এবং আইনজীবীদের জন্য দুঃখজনক ঘটনা। আদালত এলাকায় মানুষের নিরাপত্তা থাকা উচিত।’
পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ জানান, আদালত চত্বরে হামলার সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে এ বিষয় আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। শুনেছি, আহতরা কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।