নানান চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যে পড়েছে দেশের সামগ্রিক অবস্থা। এরমধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যে ধীরগতি এবং রাজস্ব আদায়ে চরম হতাশাব্যঞ্জক পরিস্থিতির মধ্যেও আগামী অর্থবছরের জন্য একটি বড় আকারের বাজেট প্রণয়নের কাজ চলছে। 

বিগত অর্থবছরগুলোর মত আগামী বাজেটটিও প্রণয়ন করা হচ্ছে ‘আমলাতান্ত্রিক’ গতানুগতিক ধারায়। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী বড় আকারের বাজেট প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে জন্য বাজেটে প্রাথমিক আকার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৮ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা ছিল সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।

জানা গেছে, আগামী মে মাসের শেষে বাজেটের আকার  চূড়ান্ত করার সময় প্রাক্কলিত এই বাজেটের আকার আরও ১০ হাজার কোটি টাকা বাড়তে পারে। এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ৮ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকার যে বাজেটের খসড়া তৈরি করা হয়েছে তাতে ‘খাদ্য বাজেট’ ও ‘নেট লেন্ডিং’ ফিগার যোগ করা হয়নি। এটি যোগ করা  হবে আগামী মে মাসে। তখন এই বাজেটে আকার গিয়ে ঠেকবে ৮ লাখ ৫৫ থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকায়।

এদিকে, চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার মধ্যে মোট রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্য ধরা রয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) জন্য আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা রয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। অর্থ্যৎ অর্থবছরের পুরো বারো মাসে এই পরিমাণ টাকা এনবিআরকে রাজস্ব হিসেবে আদায় করতে হবে। এই হিসেবে অর্থবছরে প্রথম ছয়মাসে আদায় হওয়ার কথা ২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু আলোচ্য সময়ে রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয়েছে-১ লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকা। এর ফলে ছয় মাসে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয়েছে ৮২ হাজার কোটি টাকা।

এই বিশাল পরিমাণ ঘাটতি মাথায় নিয়ে বর্তমান সরকার আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য আরও একটি উচ্চাভিলাষী রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। আগামী অর্থবছরে জন্য শুধু এনবিআরকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে ৫ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করার প্রাথমিক টার্গেট।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজস্ব আদায়ের এই টার্গেট কোনোভাবেই পূরণ হওয়া সম্ভব নয়। কারণ আগামী অর্থবছরের শেষ ভাগে একটি সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এই পরিস্থিতি বিদ্যমান ব্যবসা-বাণিজ্য পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো পরিবর্তন হওয়া সম্ভব নয়। আর আগামী অর্থবছরের রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য যে ব্যাপক করজাল সম্প্রসারণ করা দরকার বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষে সেটাও করা সম্ভব হবে না। এর উদাহরণ হিসেবে দেখা যায়, ১২ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের জন্য গেল এই মাসেই সরকার একশটিরও বেশি পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু ব্যাপক সমালোচনার মুখে এনবিআরের পক্ষ থেকে অনেক পণ্যের ওপর বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এসব কারণে আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে টার্গেট ৫ লাখ কোটি টাকার নীচে রাখাই সমীচীন হবে।

জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার নির্ধারণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। বর্তমান অর্থবছরে যা রয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। পরবর্তীতে সংশোধন করে তা কমিয়ে দুই লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।

সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড.

জাহিদ হোসেন এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, আগামী অর্থবছরের জন্য ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেট হতে পারে । তিনি বলেছেন, ‘আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি ও বাজেট ঘাটতি কত হতে পারে সেটি অনুমান করে বাজেটের আকার সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে রাজস্ব আয় ৫ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা এবং বাজেট ঘাটতি আড়াই লাখ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। উদারভাবে হিসাব করলে আগামী অর্থবছরের বাজেট ৮ লাখ কোটি টাকার বেশি হওয়া উচিত নয় বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।

ঢাকা/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

৮০০ কর্মী-স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে ধানমন্ডিতে মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান ডিএসসিসির  

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় শুক্রবার মশক নিধন ও বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করেছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী এ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার উপস্থিতিতে বর্জ্য ব্যবস্থানা বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও ধানমন্ডি সোসাইটি এ অভিযানে অংশ নেয়। 

সকাল সাড়ে ৭টায় শুরু হওয়া এ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৪৫০ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী, স্বাস্থ্য বিভাগের ৫০ জন মশক কর্মী, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক, বিডি ক্লিনের ৫০ জন এবং ধানমন্ডি সোসাইটির ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক অংশগ্রহণ করেন। ধানমন্ডি আবাসিক এলাকাকে সাতটি অঞ্চলে ভাগ করে মূল রাস্তা, লেক, পার্ক, মসজিদ, ঈদগাহ সংলগ্ন এলাকা পরিষ্কার ও মশার ওষুধ  ছিটিয়ে নেওয়া হয়। 

অভিযানে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, ঢাকাকে সুন্দর ও বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ও বিভিন্ন এলাকাভিত্তিক সোসাইটিগুলো চেষ্টা করে যাচ্ছে। রাজউক, গণপূর্ত, বিআরটিএ, পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থার অংশগ্রহণে সরকার একটি সুপরিকল্পিত ও সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করছে। এছাড়া পয়ঃনিষ্কাশনের জন্যেও মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন হচ্ছে।

দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক শাহজাহান মিয়া বলেন, বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ রোধে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি অঞ্চলে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযান পরিচালনা করা হবে। ধানমন্ডি থেকে এ অভিযান শুরু হয়েছে।  

অভিযান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অতিথিরা জনসচেতনতামূলক একটি র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান, সকল বিভাগীয় প্রধান এবং ধানমন্ডি সোসাইটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ধানমন্ডিতে মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান ডিএসসিসির  
  • ৮০০ কর্মী-স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে ধানমন্ডিতে মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান ডিএসসিসির  
  • সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ স্থগিত, আয়োজন পিছিয়ে গেল আগামী বছরে
  • বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বের হলে সুবিধা পাবে ভারত
  • আইএমএফ ও এডিবির চেয়ে কম প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিল বিশ্বব্যাংক
  • ২০২৬ বিশ্বকাপ: মেসি-রোনালদো-নেইমার, কে থাকবেন কে থাকবেন না
  • চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৩.৮ শতাংশ
  • বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হ্রাসের পূর্বাভাস আইএমএফের
  • এ বছর বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩.৮% হতে পারে: আইএমএফ
  • সার কেনাসহ শিল্প মন্ত্রণালয়ের দুই প্রস্তাব অনুমোদন