Samakal:
2025-01-31@12:04:06 GMT

বাজার থেকে টাকা তোলায় সাড়া কম

Published: 25th, January 2025 GMT

বাজার থেকে টাকা তোলায় সাড়া কম

দুর্বল ছয়টি ব্যাংকের আমানতকারীর টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করতে বিশেষ ধার হিসেবে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ছাপিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মূল্যস্ফীতিতে এর প্রভাব এড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের মাধ্যমে ওই ধারের বিপরীতে সবল ব্যাংকের কাছ থেকে টাকা তুলে নেওয়ার উদ্যোগ নেয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগে আশানুরূপ সাড়া মিলছে না। দুই মাসে ১০টি নিলামে উত্তোলন হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে চলতি মাসের ৪ নিলামের মধ্যে দু’দিনে এক টাকাও ধার নিতে পারেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সাধারণভাবে ব্যাংকের কাছে থাকা উদ্বৃত্ত ট্রেজারি বিল ও বন্ড বন্ধক রেখে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ধার নেয় ব্যাংকগুলো। দীর্ঘদিন ধরে ছয়টি ব্যাংকের উদ্বৃত্ত বিল-বন্ড  দূরে থাক, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত চলতি হিসাবে বড় ঘাটতি নিয়ে চলছিল। সাধারণভাবে কোনো ব্যাংকের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত চলতি হিসাবে টাকা না থাকলে লেনদেন করতে পারে না। ওই সময় এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা– ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, এসআইবিএল, গ্লোবাল ইসলামী, ইউনিয়ন ও ন্যাশনাল ব্যাংকের চলতি হিসাবে ঋণাত্মক রেখেই লেনদেনের সুযোগ দেওয়া হয়। ড.

আহসান এইচ মনসুর গভর্নরের দায়িত্ব নিয়ে ঘোষণা দেন, নতুন করে আর এসব ব্যাংককে টাকা ছাপিয়ে দেওয়া হবে না। ব্যাংকগুলোর সংকট কাটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্যারান্টির বিপরীতে ভালো ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে এসব ব্যাংকে দেওয়ার উদ্যোগ নেন তিনি। তাতে সাড়া না পেয়ে শেষ পর্যন্ত গত নভেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ছয়টি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা দেয়। এভাবে টাকা দেওয়া টাকা ছাপানোর মতো। 

গত ২০ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের প্রথম নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। নভেম্বরে দুটি নিলামে উত্তোলন করা হয় ৯৫৪ কোটি টাকা। এর সুদহার ছিল ১১ দশমিক ১০ শতাংশ। এর পর ডিসেম্বর মাসে ৪টি নিলামে উত্তোলন করা হয় ১ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা, যার সুদহার ছিল  ১১ দশমিক ৪৯ থেকে ১১ দশমিক ৭০ শতাংশ। জানুয়ারি মাসেও একই রকম সুদ দিয়ে টাকা তোলার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যদিও আশানুরূপ সাড়া মিলছে না। 
বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি গড়ে ১১ দশমিক ৪৯ শতাংশ সুদে ৪০০ কোটি টাকা উত্তোলন হয়েছে। ৯ জানুয়ারির নিলামে ১২ দশমিক ৬৫ থেকে ১৩ শতাংশ সুদে মাত্র ৪০ কোটি টাকা রাখার চেষ্টা করে দুটি ব্যাংক। এদিন এক টাকাও নেওয়া হয়নি। গত ১৫ জানুয়ারির নিলামে ১১ দশমিক ৩২ শতাংশ সুদে উত্তোলন হয়েছে মাত্র ২৫ কোটি টাকা। সর্বশেষ গত ২২ জানুয়ারির নিলামে ১৩ শতাংশ সুদে ২০ কোটি টাকা রাখার চেষ্টা করে একটি ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক শেষ পর্যন্ত আর এই টাকা উত্তোলন করেনি। জানা গেছে, বর্তমানে সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে আমানত প্রবাহে গতি কম। এ কারণে নিয়মিত বিল ও বন্ডের নিলামের বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংক বিলে আগ্রহ কম দেখাচ্ছে ব্যাংকগুলো। 

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান মনে করেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে মুদ্রানীতি, রাজস্বনীতি এবং বাজার ব্যবস্থাপনায় যে সমন্বয় দরকার সেখানে ঘাটতি আছে। তিনি বলেন, ঋণের সুদহার বৃদ্ধি সরাসরি ব্যবসায়িক খরচ বাড়াচ্ছে। আবার ব্যবসার নগদ প্রবাহের ওপর চাপ সৃষ্টি করে পরিচালনার খরচ বাড়াচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে সুদহার বৃদ্ধি ঋণ গ্রহণের প্রবণতা কমে বিনিয়োগে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। ব্যবসায়ীরা যদি উচ্চ সুদ পরিশোধ করতে না পারেন, তবে নতুন প্রকল্প বা সম্প্রসারণের জন্য ঋণ নিতে সংকুচিত হয়ে পড়বে। এর ফলে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির গতি আরও স্লথ হবে। কর্মসংস্থানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

সামারিক শক্তিতে মিয়ানমারের চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ

চলতি বছর সামরিক শক্তির দিক থেকে মিয়ানমারের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার প্রকাশিত সূচকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই র‌্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সামরিক বাজেট। সেনাবাহিনীর আকার, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর শক্তিকেও বিবেচনা করা হয়েছে সমীক্ষায়।

গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সূচক অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপরে পরে রয়েছে রাশিয়া, চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া। পরমাণু শক্তিধর হলেও পাকিস্তানের অবস্থান ১২ নম্বরে। তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে ৩৫তম অবস্থানে। বাংলাদেশের আগে রয়েছে উত্তর কোরিয়া ও আর্জেন্টিনা। আর বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমার রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৬ কোটি ৬১ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে মোট সেনা সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৭ হাজার ৪০০ সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ২৫ হাজার ১০০ সেনা। 

অন্যদিকে, মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যা ৫ কোটি ৭৫ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। মিয়ানমারের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার। মিয়ানমারের রিজার্ভ সৈন্য রয়েছে ২০ হাজার। দেশটির বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৫ হাজার সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ১৬ হাজার সেনা। 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ