Samakal:
2025-04-08@07:03:00 GMT

‘এগিয়ে যান সাফল্য আসবেই’

Published: 25th, January 2025 GMT

‘এগিয়ে যান সাফল্য আসবেই’

এলেন ডিজেনারেস। আমেরিকান কমেডিয়ান, টিভি উপস্থাপক, অভিনেত্রী, লেখক ও প্রযোজক। কমেডি শো ও টিভি টকশোর কারণে তুমুল জনপ্রিয়। কিংবদন্তি এই কমেডিয়ানের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রেরণার কথা তুলে এনেছেন ইমাম হোসেন মানিক
 

১৯ বছর বয়সে আমার জীবনে একটি বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটে। আমার প্রিয় বান্ধবী গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যায়। তখন একটি অ্যাপার্টমেন্টের বেজমেন্টে থাকতাম আমি। আমার কাছে কোনো টাকা ছিল না। তাপমাত্রা কিংবা বাতাস ছিল না সেখানে। মেঝের ওপর একটি ম্যাট্রেস বিছানো ছিল; অ্যাপার্টমেন্টটি মাছিতে ভনভন করত। সে সময় নিজের আত্মাকেই যেন খুঁজতাম আমি! জানতে চাইতাম, কেন সে হঠাৎ চলে গেল এবং এখানে এত মাছি কেন? আমি এসবের কারণ বুঝতাম না। মনে হতো, যদি স্রষ্টাকে ফোন করতে পারতাম, যদি তাঁর কাছে জিজ্ঞেস করতে পারতাম! আমি লেখা শুরু করলাম। স্রষ্টার সঙ্গে কাল্পনিক কথোপকথন মনভরে লিখতাম। সেটি একপক্ষীয় ছিল। তবু আমি লেখা শেষ করেছিলাম। লেখাগুলোর দিকে তাকাই এবং নিজেকে বলি, আমি জানি কারসনের সঙ্গে টুনাইট শো করব। সে সময় তিনি ‘স্ট্যান্ডআপ টুনাইট শো’র সেরা ছিলেন। নিজেকে আরও বলেছিলাম, আমি এ শোয়ের ইতিহাসে প্রথম নারী হতে যাচ্ছি! সত্যিই তার কয়েক বছর পর নারী হিসেবে প্রথম এই শো উপস্থাপন করে ইতিহাস গড়ি।
সব হারিয়েও এগিয়ে গিয়েছি
মনে পড়ে, স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিকে এসে সবকিছু হারিয়ে ফেলেছিলাম। তবু আমি সামনে এগিয়ে গিয়েছি। যে কোনোভাবে শেষ করেছিলাম উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠ। সত্যি বলতে, আমার কোনো লক্ষ্য ছিল না, কী করতে চাই। আমি সবকিছু করেছি। ঝিনুকের খোসা ছাড়িয়েছি। অতিথিসেবা করেছি। মদের দোকানে মদ পরিবেশন করেছি। হোটেলে খাবার পরিবেশন করেছি। ঘরে রং করেছি। মেঝে পরিষ্কার করেছি। আমি কী করব, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা ছিল না। ভাবতাম, কোনো এক কাজে শেষমেশ স্থির হতে পারব। 
বড় হতে হতে পাল্টে যায় সফলতার সংজ্ঞা 
আজ আমার কাছে সফলতার ধারণা ভিন্ন। আপনি যখন বড় হচ্ছেন, দেখবেন সফলতার সংজ্ঞা পাল্টে গেছে। আমার মতে, আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সম্পূর্ণতা নিয়ে জীবন যাপন করা এবং যা আপনি নন, বন্ধুবান্ধবের চাপে পড়ে তেমন কিছু না করা। একজন সৎ ও দয়ালু মানুষ হিসেবে আপনারা নিজের জীবন কাটান, এটিই আমি চাই।  
এগিয়ে যান, সাফল্য আসবেই
নিজের ভালো লাগাকে অনুসরণ করুন, নিজের ওপর সৎ থাকুন। যতক্ষণ পর্যন্ত পথ না হারিয়ে ফেলবেন, অন্য কারও পথ অনুসারে চলা যাবে না। কাউকে উপদেশ দেবেন না। কারণ এটি ফিরে আসবে আপনার কাছেই। তখন হয়তো বেকুবের মতো লজ্জিত হবেন! আসলে আমার বারবার নিজের শৈশবের কথা মনে পড়ে। অনেক কষ্টে স্কুলের গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছিলাম। সাফল্য পেতে বারবার নানা দরজায় কড়া নাড়তে হয়েছিল।  বেড়ে ওঠার জন্য প্রচুর সময় ব্যয় করেছি। আমার মা নিউকম্ব শহরে কাজ করতেন এবং আমি তাঁর পার্স থেকে প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু চুরি করতাম! সেই চুরি ভালো কিছু ছিল না। আজ আমি এই পর্যায়ে সে চুরির কারণে আসিনি। পরিশ্রমের কারণে এসেছি এবং সেই সঙ্গে সে চুরি থেকে নিজেকে বদলে নেওয়ার জন্য এখানে এসেছি। আমি অনমনীয়তার বাইরে কোনো কিছু চিন্তা করতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে আরও সাহসী হয়ে উঠি। বদলে নেওয়ার শক্তি নিজের ভেতরে তৈরি করুন। নিজেকে নিজে এগিয়ে না নিলে কেউই এগিয়ে দেবে না। এগিয়ে যান। সাফল্য আসবেই! u
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ফল য

এছাড়াও পড়ুন:

যে কারণে ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পড়া হয়

যেকোনো ধরনের বিপদ-আপদ সামনে এলে বলা হয় ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’। বিশ্বাসীরা কেবল মুখে বলা নয়; বরং মনে মনে এ কথা স্বীকার করে নেওয়া যে আল্লাহর কর্তৃত্বাধীন। আর নিশ্চিতভাবে আমরা তাঁরই দিকে ফিরে যাব—এর অর্থ হচ্ছে, চিরকাল এ দুনিয়ায় থাকা যাবে না। একদিন আল্লাহরই কাছে যেতে হবেই।

‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ অর্থ সুরা বাকারার ১৫৬ নম্বর আয়াতটি কোরআন শরিফের প্রসিদ্ধ আয়াত। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। অর্থ (তারাই ধৈর্যশীল) যারা তাদের ওপর কোনো বিপদ এলে বলে আমরা তো আল্লাহরই আর নিশ্চিতভাবে আমরা তাঁরই দিকে ফিরে যাব। কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে পড়েন। অনেকে মনে করেন, মানুষের মৃত্যুসংবাদ পেলে ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পড়তে হয়। বরং ইন্না লিল্লাহ পড়ার অনেক কারণ ও গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত রয়েছে। এই পবিত্র বাক্য আল্লাহকে স্মরণ রাখার বড় উপায়।

আরও পড়ুন যেকোনো সময় এই দোয়া করা যায়১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে (কাউকে) ভয় ও ক্ষুধা দিয়ে, আর (কাউকে) ধনে–প্রাণে বা ফল–ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দিয়ে পরীক্ষা করব। আর যারা ধৈর্য ধরে, তাদের তুমি সুখবর দাও। (তারাই ধৈর্যশীল) যারা তাদের ওপর কোনো বিপদ এলে বলে, [ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন] ‘আমরা তো আল্লাহর আর নিশ্চিতভাবে আমরা তাঁরই দিকে ফিরে যাব।’ এসব লোকের প্রতি তাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে আশীর্বাদ ও দয়া বর্ষিত হয়, আর এরাই সৎ পথপ্রাপ্ত। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫-১৫৭) এ তিনটি আয়াতে বিষয়টি সুস্পষ্ট। কারা ইন্না লিল্লাহ পড়বেন, কোনো পরিস্থিতিতে পড়বেন এবং পড়লে কী উপকার।

বিশ্বাসীরা বিপদে পড়লে ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পাঠ করেন। কেউ বিপদে পড়লে যেন এ দোয়াটি পাঠ করে। একাধারে যেমন সওয়াব পাওয়া যায়, তেমনি অর্থের প্রতি লক্ষ রেখে পাঠ করা হয়, তবে বিপদের মধ্যেও শান্তি লাভ করবে বিপদ থেকে উত্তরণও সহজ হয়ে যায়। 

কোনো বিপদে বান্দার মুখে উচ্চারিত হয় এই দুটি বাক্য—এর অর্থ আল্লাহর ফয়সালা সর্বান্তঃকরণে মেনে নিচ্ছি। আর আখিরাতে বিশ্বাস করি, তাই এ বিপদে সবরের বিনিময় তাঁর কাছে প্রত্যাশা করছি। দুটি বাক্যে ইমানের মৌলিক সাক্ষ্য দেওয়া হয়। তাই এর ফজিলতও অনেক। 

আরও পড়ুনতওবা করলে আল্লাহ খুশি হন ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩

বিপদের সময় বলতে হবে উম্মে সালামা (রা.)–এর বরাতে হাদিস থেকে জানা যায়।

তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)–কে বলতে শুনেছি, কোনো মুসলিমের ওপর বিপদ এলে যদি সে বলে, আল্লাহ যা হুকুম করেছেন—ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (অর্থাৎ আমরা আল্লাহরই জন্য এবং তারই কাছে ফিরে যাব) বলে এবং এই দোয়া পড়ে, আল্লাহুম্মা আজিরনি ফি মুসিবাতি ওয়া আখলিফলি খাইরাম মিনহা ইল্লা আখলাফাল্ল হুলাহ খয়রাম মিনহা (অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমাকে আমার মুসিবতে সওয়াব দান করো এবং এর বিনিময়ে এর চেয়ে উত্তম বস্তু দান করো, তবে মহান আল্লাহ তাকে এর চেয়ে উত্তম বস্তু দান করে থাকেন।) উম্মে সালামা (রা.) আরও বলেন, আবু সালামা যখন ইন্তেকাল করেন, আমি মনে মনে ভাবলাম, আবু সালামা থেকে উত্তম মুসলিম আর পাব না। এরপর আমি দোয়া পড়লাম। এরপর মহান আল্লাহ আবু সালামার স্থলে রাসুল (সা.)–এর মতো স্বামী দান করেছেন। উম্মে সালামা (রা.) বলেন, আমার কাছে রাসুল (সা.) বিয়ের পয়গাম দেওয়ার জন্য হাতিব ইবনে আবু বালতা (রা.)–কে পাঠালেন। আমি বললাম, আমার একটা মেয়ে আছে আর আমার জিদ বেশি। তখন রাসুল (সা.) বললেন, তার মেয়ে সম্পর্কে আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করব, যাতে তিনি তাকে তার মেয়ের দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেন। আর (তার সম্পর্কে) দোয়া করব যেন আল্লাহ তার জিদ দূর করে দেন। (মুসলিম, হাদিস: ৯১৮)

আরও পড়ুনপরিবারের জন্য অভিভাবক দোয়া করবেন০৭ মার্চ ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ