Samakal:
2025-01-31@10:54:53 GMT

‘এগিয়ে যান সাফল্য আসবেই’

Published: 25th, January 2025 GMT

‘এগিয়ে যান সাফল্য আসবেই’

এলেন ডিজেনারেস। আমেরিকান কমেডিয়ান, টিভি উপস্থাপক, অভিনেত্রী, লেখক ও প্রযোজক। কমেডি শো ও টিভি টকশোর কারণে তুমুল জনপ্রিয়। কিংবদন্তি এই কমেডিয়ানের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রেরণার কথা তুলে এনেছেন ইমাম হোসেন মানিক
 

১৯ বছর বয়সে আমার জীবনে একটি বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটে। আমার প্রিয় বান্ধবী গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যায়। তখন একটি অ্যাপার্টমেন্টের বেজমেন্টে থাকতাম আমি। আমার কাছে কোনো টাকা ছিল না। তাপমাত্রা কিংবা বাতাস ছিল না সেখানে। মেঝের ওপর একটি ম্যাট্রেস বিছানো ছিল; অ্যাপার্টমেন্টটি মাছিতে ভনভন করত। সে সময় নিজের আত্মাকেই যেন খুঁজতাম আমি! জানতে চাইতাম, কেন সে হঠাৎ চলে গেল এবং এখানে এত মাছি কেন? আমি এসবের কারণ বুঝতাম না। মনে হতো, যদি স্রষ্টাকে ফোন করতে পারতাম, যদি তাঁর কাছে জিজ্ঞেস করতে পারতাম! আমি লেখা শুরু করলাম। স্রষ্টার সঙ্গে কাল্পনিক কথোপকথন মনভরে লিখতাম। সেটি একপক্ষীয় ছিল। তবু আমি লেখা শেষ করেছিলাম। লেখাগুলোর দিকে তাকাই এবং নিজেকে বলি, আমি জানি কারসনের সঙ্গে টুনাইট শো করব। সে সময় তিনি ‘স্ট্যান্ডআপ টুনাইট শো’র সেরা ছিলেন। নিজেকে আরও বলেছিলাম, আমি এ শোয়ের ইতিহাসে প্রথম নারী হতে যাচ্ছি! সত্যিই তার কয়েক বছর পর নারী হিসেবে প্রথম এই শো উপস্থাপন করে ইতিহাস গড়ি।
সব হারিয়েও এগিয়ে গিয়েছি
মনে পড়ে, স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিকে এসে সবকিছু হারিয়ে ফেলেছিলাম। তবু আমি সামনে এগিয়ে গিয়েছি। যে কোনোভাবে শেষ করেছিলাম উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠ। সত্যি বলতে, আমার কোনো লক্ষ্য ছিল না, কী করতে চাই। আমি সবকিছু করেছি। ঝিনুকের খোসা ছাড়িয়েছি। অতিথিসেবা করেছি। মদের দোকানে মদ পরিবেশন করেছি। হোটেলে খাবার পরিবেশন করেছি। ঘরে রং করেছি। মেঝে পরিষ্কার করেছি। আমি কী করব, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা ছিল না। ভাবতাম, কোনো এক কাজে শেষমেশ স্থির হতে পারব। 
বড় হতে হতে পাল্টে যায় সফলতার সংজ্ঞা 
আজ আমার কাছে সফলতার ধারণা ভিন্ন। আপনি যখন বড় হচ্ছেন, দেখবেন সফলতার সংজ্ঞা পাল্টে গেছে। আমার মতে, আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সম্পূর্ণতা নিয়ে জীবন যাপন করা এবং যা আপনি নন, বন্ধুবান্ধবের চাপে পড়ে তেমন কিছু না করা। একজন সৎ ও দয়ালু মানুষ হিসেবে আপনারা নিজের জীবন কাটান, এটিই আমি চাই।  
এগিয়ে যান, সাফল্য আসবেই
নিজের ভালো লাগাকে অনুসরণ করুন, নিজের ওপর সৎ থাকুন। যতক্ষণ পর্যন্ত পথ না হারিয়ে ফেলবেন, অন্য কারও পথ অনুসারে চলা যাবে না। কাউকে উপদেশ দেবেন না। কারণ এটি ফিরে আসবে আপনার কাছেই। তখন হয়তো বেকুবের মতো লজ্জিত হবেন! আসলে আমার বারবার নিজের শৈশবের কথা মনে পড়ে। অনেক কষ্টে স্কুলের গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছিলাম। সাফল্য পেতে বারবার নানা দরজায় কড়া নাড়তে হয়েছিল।  বেড়ে ওঠার জন্য প্রচুর সময় ব্যয় করেছি। আমার মা নিউকম্ব শহরে কাজ করতেন এবং আমি তাঁর পার্স থেকে প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু চুরি করতাম! সেই চুরি ভালো কিছু ছিল না। আজ আমি এই পর্যায়ে সে চুরির কারণে আসিনি। পরিশ্রমের কারণে এসেছি এবং সেই সঙ্গে সে চুরি থেকে নিজেকে বদলে নেওয়ার জন্য এখানে এসেছি। আমি অনমনীয়তার বাইরে কোনো কিছু চিন্তা করতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে আরও সাহসী হয়ে উঠি। বদলে নেওয়ার শক্তি নিজের ভেতরে তৈরি করুন। নিজেকে নিজে এগিয়ে না নিলে কেউই এগিয়ে দেবে না। এগিয়ে যান। সাফল্য আসবেই! u
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ফল য

এছাড়াও পড়ুন:

পরিশ্রম আর শৃঙ্খল জীবনে নাঈম পাচ্ছেন সফলতার সুবাস 

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন মেপে। ঠান্ডা মাথায় উত্তর দিচ্ছিলেন বুঝেশুনে। পালটা প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে ‘কঠিন প্রশ্ন’ বলে হেসে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন দারুণভাবে। সেঞ্চুরিয়ান নাঈম শেখের পরিবর্তন শুধু ব্যাট হাতে আসেনি, শরীরী ভাষায়ও দিচ্ছেন পরিপক্বতার পরিচয়। 

কদিন আগেই জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টিতে পেয়েছিলেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের স্পর্শ। এবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) প্রথমবারের মতো হাঁকান সেঞ্চুরি। তাও এমন এক মুহূর্তে, যখন হারলেই বাদ পড়বে দল তখন। 

ওপেনিংয়ে নেমে ৬২ বলে ১১১ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন ইনিংসের শেষে। তার দল খুলনা টাইগার্স পায় বড় পুঁজি। তাতে ভর করে ৪৬ রানের বয় জয়ে প্লে-অফের আশা বাঁচিয়ে রাখে খুলনা। শুধু কৌশল নয়, ব্যক্তিগত জীবনে শৃঙ্খলা এনে নাইম পাচ্ছেন সফলতার দেখা।

“সর্বশেষ যতগুলো টুর্নামেন্ট খেলেছি নিজের শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করেছি। মাঠে সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। ভেঙে বলতে গেলে অনেক লম্বা হয়ে যাবে। অফ সিজনে কাজ করেছি।”

“যদি সেভাবে বলতে চাই, ঘরোয়া ক্রিকেটের সব কোচের কথা বলতে হবে। বাবুল স্যার, সোহেল স্যারের সাথে কাজ করেছি। আনোয়ার ভাই নামে একজন আছে। নির্দিষ্ট একজন বলতে গেলে মাইন্ড ট্রেনিং নিয়ে কাজ করেছি, ওটা অনেক ভূমিকা রাখছে। শৃঙ্খলাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই আমার পরিবার”, নিজের পরিবর্তনের গল্প এভাবেই বলছিলেন নাঈম। 

লাল সবুজের জার্সিতে নাঈমের আগমন ছিল দুর্দান্ত। ভারতের বিপক্ষে নাগপুরের তৃতীয় ম্যাচেই খেলছিলেন ৮১ রানের দারুণ এক ইনিংস। সম্ভাবনা দেখিয়ে জাতীয় দলে এলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। অন্য অনেকের মতো তাকে ধরা হচ্ছিল ‘খসে পড়া তারা’ হিসেবে। তবে না, নাইম আড়ালে গিয়ে আসল কাজটাই করছেন নীরবে-নিভৃতে। 

খেলার ধরন নিয়েও ছিল প্রশ্ন। ইনিংসজুড়ে ডট বলার সমাহার। অবশ্য এতে তৎকালীন কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোর প্রভাব। গুরুর ‘ধরে খেলার’ শিক্ষায় নাঈম যেন আরো দিশেহারা হয়ে যান। নাঈমে শেখে এমন পারফরম্যান্সে ওপেনার খরায় ভুগতে থাকা বাংলাদেশ যেন আরো সংকটে পড়ে। 

নাঈমের জায়গা নিয়ে নেন তরুণ তানজীদ হাসান তামিমরা। ফর্মে ফিরে দলে আসা সৌম্য সরকারও আছেন তালিকায়। সবশেষ তাকে ওয়ানডেতে দেখা গেছে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে। আর টি-টোয়েন্টি খেলেন ২০২২ সালের আগস্টে!  

নিজের সঙ্গে নিজে চ্যালেঞ্জ নিয়ে নাঈম পেয়েছেন সফলতা, “সত্যি বলতে কোনো প্রত্যাশা ছিল না। বেসিক ঠিক রেখে প্রসেস মেনে চলতে চাই। কোনো প্রত্যাশা রেখে শুরু করিনি। কোনো লক্ষ্য নেই, উন্নতি করতে পারছি কি না… নিজের সাথে নিজের চ্যালেঞ্জ। উন্নতি করতে চেয়েছি, হয়েছে কি না। এনসিএলেও কোনো লক্ষ্য ছিল না যেমন সর্বোচ্চ রানের মালিক হতে হবে বা ভালো করতে হবে। এমন কোনো ভাবনা ছিল না। নিজের সাথে নিজের চ্যালেঞ্জ যত বেশি বড় করা যায়।” 

“মানসিকতায় পরিবর্তন অবশ্যই জরুরি। এটা না এলে লম্বা ইনিংস খেলা খুব কঠিন ওপেনার হিসেবে। আগে অফ স্পিনে অনেক সংগ্রাম করছিলাম। ঐ জায়গা থেকে বের হয়ে আসছি, কীভাবে ডট না করে স্ট্রাইক রোটেট করা যায়। আর রেঞ্জ হিটিং। তিন বছর আগে মুশফিক ভাই বলেছিল, রিভার্স সুইপ নিয়ে কাজ করা গেলে আমার জন্য সহজ হয়ে যাবে। এখন অফ স্পিনে সুইপ-রিভার্স সুইপ অনেক সহজ হয়েছে। স্লগ সুইপে আগে ভালো ছিলাম, মাঝখানে সংগ্রাম করছিলাম। বলতে গেলে লম্বা হয়ে যাবে। অবশ্যই কিছু জিনিস পরিবর্তন এনেছি তাই সাফল্য আসছে”— বলছিলেন নাঈম। 

ঢাকা/রিয়াদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পরিশ্রম আর শৃঙ্খল জীবনে নাঈম পাচ্ছেন সফলতার সুবাস