নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালা চাই
Published: 25th, January 2025 GMT
দুনিয়াজুড়ে আজ ট্রানজিশন বা জাস্ট ট্রানজিশন কথাটি বহুল আলোচিত। কথাটি এনার্জি বা জ্বালানি স্থানান্তরের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে। বস্তুত জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে স্থানান্তরের প্রক্রিয়াকেই ট্রানজিশন বা জাস্ট ট্রানজিশন বলা হচ্ছে। কার্বন নির্গমন/নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে আনতেই নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে স্থানান্তরিত হওয়া। অবশ্য জাস্ট ট্রানজিশন একেকটি দেশের জন্য একেক রকম। আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ জ্বালানি স্থানান্তর বা ট্রানজিশনের যে অঙ্গীকার করেছে, তা পূরণের একটি পরিকল্পনাও করেছে। অঙ্গীকারটি হচ্ছে: চলতি ২০২৫ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ সক্ষমতা অর্জন করা; যা ২০৩০ সালে ৩০ শতাংশ এবং ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগে উন্নীত করার কথা। অর্থাৎ ২০৫০ সালের পরে আমরা আর জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করব না।
প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের দিকে এগোচ্ছি? এ ক্ষেত্রে প্রথমেই আসে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের কথা। এই বিনিয়োগ স্বাভাবিকভাবে আসে আর্থিক প্রতিষ্ঠান (ব্যাংক ও অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান) থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংক ২০০৯-১০ সালে গ্রিন ফিন্যান্স বা সবুজ অর্থায়নসংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে; এর অধীনে তপশিলি সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলো নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে অর্থায়ন করে।
সিইপিআর (সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড পার্টিসিপেটরি রিসার্চ) এবং ক্লিন (কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক)-এর সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা যায়, দেশের ৬২টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে ৪৩টি ব্যাংক সবুজ অর্থায়নে (গ্রিন ফিন্যান্স) বিনিয়োগ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রিন ফিন্যান্সের আওতায় ২০১৮-১৯ সাল থেকে গত ছয় বছরে দেশীয় ব্যাংকগুলো ৭৩ হাজার ১৭২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। ২০১৮-১৯ সালে এই পরিমাণ ছিল মাত্র ৯ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকা, যা ২০২৩-২৪ সালে ২২ হাজার ৯৬০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। অর্থাৎ গ্রিন ফিন্যান্স প্রতিবছর গড়ে ২৭.
এখানে বলা দরকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালায় পরিবেশগত বিবেচনার কথা বলা আছে। তাই নবায়নযোগ্য জ্বালানি (আরই) ছাড়াও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সার্কুলার ইকোনমি, ইকো-প্রকল্প, পরিবেশবান্ধব ইট উৎপাদন, সবুজ/পরিবেশবান্ধব উৎপাদন, সবুজ কৃষি, নীল অর্থনীতি প্রভৃতি খাতেও ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করে। অর্থাৎ গ্রিন ফিন্যান্স মানেই নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিযোগ নয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই প্রতিবেদন বলে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো শুধু নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে গত ছয় বছরে ২ হাজার ১১১ কোটি টাকা অর্থায়ন করেছে, যা মোট গ্রিন ফিন্যান্সিংয়ের মাত্র ২.৯ শতাংশ। আবার ২০২০ সালে গ্রিন ফিন্যান্স ছিল মোট বিতরিত ঋণের ৩.৯৬ শতাংশ। ২০২৪ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) তা ছিল ১৬.৮৩ শতাংশ। এই তথ্যে পরিষ্কার, মোট বিনিয়োগের তুলনায় গ্রিন ফিন্যান্সের পরিমাণ এখনও খুবই কম। তার মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ নামমাত্র বলা চলে। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ২০৩০ ও ২০৫০-এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যাবে না। উল্লিখিত গবেষণা বলছে, ২০২৫ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা ১০% (৩,২৪৩ মেগাওয়াট) অর্জন করতে হলে আমাদের অবিলম্বে ২৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০% (১১,৬০০ মেগাওয়াট) লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে ৬ বছরে ৮৭ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। উপরন্তু, ভর্তুকি, কর অব্যাহতি, আমদানি নীতি যৌক্তিকীকরণ এবং সরকারি-বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে দীর্ঘমেয়াদি স্বল্প সুদে ঋণ বিতরণের এক বড় পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, এ পর্যন্ত নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে আমরা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩ শতাংশের কাছাকাছি অর্জন করতে পেরেছি। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বেরিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে একদিকে জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে এবং অন্যদিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এর জন্য চাই প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক নীতিমালা ও বিনিয়োগ।
বর্তমান সরকার ইতোমধ্যে এ খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। যেমন– নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক আইপিপির জন্য ১৫ বছরের কর অব্যাহতি প্রদান; যার মধ্যে ১০ বছরের জন্য ১০০ শতাংশ কর ছাড়, তিন বছরের জন্য ৫০ শতাংশ এবং দুই বছরের জন্য ২৫ শতাংশ কর ছাড়। প্রধান উপদেষ্টা চীন সরকারকে বাংলাদেশে সোলার প্যানেল উৎপাদন কারখানা স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন। নতুন করে প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে। উপরন্তু, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের জন্য বহুপক্ষীয় এবং দ্বিপক্ষীয় অংশীদারদের আহ্বান করা হয়েছে।
মনে রাখা প্রয়োজন, অর্থায়নের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোরও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন– বেশির ভাগ বাণিজ্যিক ব্যাংকেই নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞান বিশ্লেষণ করার জন্য দক্ষ জনবল নেই। বেশির ভাগ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তার রাজস্ব, নির্দিষ্ট খরচ এবং লাভ-ক্ষতি বিশ্লেষণ করে, অর্থায়ন উপযোগী করে একটি প্রকল্প প্রণয়নের দক্ষতার অভাব রয়েছে। গ্যারান্টিযুক্ত দীর্ঘমেয়াদি প্রাইভেট পাওয়ার সাপ্লাই এগ্রিমেন্টের (পিএসএ) অভাবে একটি বেসরকারি নবায়নযোগ্য প্রকল্পে অর্থায়নের ঝুঁকি ব্যাংক নিতে পারে না।
গ্যারান্টি ছাড়া, বিশাল আস্থার ব্যবধানের কারণে ব্যাংকগুলো ছাদভিত্তিক সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পেও অর্থায়নে উৎসাহী হতে পারছে না। এমন বাস্তবতায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য কিছু বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে। এগুলো হচ্ছে: ১. বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নবায়নযোগ্য খাতে প্রযোজ্য একটি তহবিল তৈরি করা, যাতে তারা ক্ষুদ্র ও মাঝারি নবায়নযোগ্য শক্তি উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ দিতে পারে। ২. সবুজ অর্থায়ন নির্দেশিকা পর্যালোচনা করা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের জন্য কমপক্ষে ২৫ শতাংশ গ্রিন ফিন্যান্সিং নিশ্চিত করা। ৩. গ্রামীণ এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই অর্থায়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা। ৪. স্বতন্ত্র এবং ছোট উদ্যোক্তাদের জন্য একটি ফিড-ইন ট্যারিফ (এফআইটি) শুরু করা, যাতে তাদের বিনিয়োগের জন্য একটি নিশ্চিত লাভ থাকে। ৫. নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশের ওপর আরোপিত আমদানি কর, ভ্যাট এবং অন্যান্য কর সম্পূর্ণ অব্যাহতি দেওয়া। ৬. বাড়ির ছাদে সোলার সিস্টেম স্থাপনের জন্য মোট ব্যয়ের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ ভর্তুকি প্রদান করা। ৭. নবায়নযোগ্য জ্বালানি যন্ত্রাংশ উৎপাদনের জন্য জাতীয় শিল্প স্থাপনে বিনিয়োগ করা। ৮. টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (শ্রেডা) ক্ষমতা বৃদ্ধি অথবা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা। এবং ৯. বিদ্যুৎ প্রকল্পের সব তথ্যের বাধ্যতামূলক প্রকাশ নিশ্চিত করা।
গৌরাঙ্গ নন্দী: পরিবেশ ও জ্বালানিবিষয়ক সাংবাদিক এবং চেয়ারপারসন, সেন্টার ফর এনভায়নমেন্ট অ্যান্ড পার্টিসিপেটরি রিসার্চ (সিইপিআর)
nহাসান মেহেদী: জ্বালানি খাত বিষয়ে অভিজ্ঞ এবং প্রধান নির্বাহী, কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (ক্লিন)
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ন য় গ কর প রকল প র পর ব শ র জন য বছর র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিভাগের নাম পরিবর্তন নিয়ে মুখোমুখি ইবি শিক্ষার্থীরা
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের নাম পরিবর্তন নিয়ে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় বিভাগের নাম অপরিবর্তিত রাখার দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে ‘সচেতন শিক্ষার্থী’র ব্যানারে একদল শিক্ষার্থী। কিছুক্ষণ পরে বিভাগের নাম পরিবর্তনের দাবিতে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’র ব্যানারে আরেকদল শিক্ষার্থী মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিলে উভয় গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় সচেতন শিক্ষার্থীরা ‘বিভাগের নাম পরিবর্তন, চলবে না চলবে না’, ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিচার চাই’, ‘বিভাগে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চলবে না চলবে না’, ‘বিচার চাই বিচার চাই, সন্ত্রাসীদের বিচার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
অপর দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ‘তুমি কে আমি কে, দুষ্কৃতকারী দুষ্কৃতকারী, কে বলেছে কে বলেছে, জালিয়াতকারী জালিয়াতকারী’, ‘নাম চেঞ্জের টালবাহানা, মানি না মানব না’, ‘আমার স্বাক্ষর করল কে, এর উত্তর আগে দে’, ‘স্বাক্ষর জালিয়াতির বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
নাম পরিবর্তন না চাওয়া শিক্ষার্থীদের দাবি, দেশের প্রায় সবকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট নামেই এ বিষয়টি পড়ানো হয়। শুধু যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি নামে রয়েছে। এ ছাড়া বিসিএস এবং পিএসসির ক্ষেত্রে জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সুযোগ-সুবিধা বেশি।
নাম পরিবর্তনের বিপক্ষের শিক্ষার্থী ফারিহা বলেন, “জিওগ্রাফি বিষয় পিএসসিতে নিবন্ধিত সাবজেক্ট যার সাবজেক্ট কোড রয়েছে (৩১১)। কিন্তু এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনলোজি বা শুধু এনভায়রমেন্টাল সায়েন্স কোনটাই বিষয় হিসেবে পিএসসিতে নিবন্ধিত নেই, বিষয় কোডও নেই। ফলে জিওগ্রাফি না থাকলে আমরা বিসিএসসহ (শিক্ষা) জিওগ্রাফির নিবন্ধিত সরকারি চাকরিতে আবেদন করতে পারব না।”
তিনি বলেন, “দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুল-কলেজে যেখানে ভূগোলের শিক্ষক নেওয়া হয়, সেগুলোয় নিয়োগ পেতে ভূগোল বিষয়ে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়, যা পরিবেশ বিজ্ঞানে নেই। ভূগোলেরই নিজস্ব ক্যাডার রয়েছে পিএসসিতে, যা পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বা শুধু পরিবেশ বিজ্ঞানের নেই। তাই বিভাগের নাম যা আছে, সেটাই রাখতে হবে।”
অপর দিকে নাম পরিবর্তন চাওয়া শিক্ষার্থীদের দাবি, ভর্তির সময় তারা এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড জিওগ্রাফি দেখে ভর্তি হলেও ভর্তি হওয়ার পর জানতে পারেন, বিভাগের নাম জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট। বিভাগের নাম পরিবর্তন করার সময় স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে স্বাক্ষর নিয়ে বিভাগে আবেদনপত্র দিয়ে যাবতীয় প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নাম পরিবর্তন করার বিষয়ে তারা অবগত ছিলেন না। পরবর্তী সময়ে চাকরির বাজারে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে অসুবিধা হবে বিধায় তারা এখন নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিভাগের নাম পরিবর্তন চান।
নাম পরিবর্তনের পক্ষে শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, “গত ৫ মাস ধরে প্রশাসনের নিকট বিভাগের সময়োপযোগী নাম দেওয়ার যে দাবি, তা একাডেমিক কাউন্সিল ও পরবর্তী সিন্ডিকেটে উত্থাপন করতে হবে। যদি প্রশাসন পদক্ষেপ নিতে না পারে, তাহলে আমরা কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ করে দেব। আর যে স্বাক্ষর জালিয়াতি হয়েছে এ বিষয়ে আমরা হাইকোর্টে মামলা করব। সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে।”
এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক বিপুল রায় বলেন, “শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিভাগে শান্তিপূর্ণ শিক্ষার পরিবেশ থাকা জরুরি। শিক্ষার্থীরা এভাবে মুখোমুখি দাঁড়ালে শান্তি বিনষ্ট হবে। তারা তো ইতোমধ্যেই তাদের দাবিগুলো আমাদের জানিয়েছেন, এখন আর এখানে কর্মসূচি পালনের প্রয়োজন নেই। একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে আমি নিজেও থাকব, সেখান থেকে উপযুক্ত সিদ্ধান্তটাই আসবে বলে আশা করি।”
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের বলেন, “বিভাগের নাম পরিবর্তন কোন সহজ বিষয় নয়। কেউ চাইলেই ইচ্ছেমতো নাম দিতে পারে না। এটার একটা নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া আছে। তারা যেহেতু প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য দাঁড়িয়েছে, আমরা দুই পক্ষের মেসেজ পেয়েছি। আজ বেলা ৩টায় একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং আছে, সেখানে তাদের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি এজেন্ডাভুক্ত হয়েছে। এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী