Samakal:
2025-01-31@12:10:17 GMT

মনের অসুখ

Published: 25th, January 2025 GMT

মনের অসুখ

মন কি প্রাণিসত্তার অংশ নয়? সেটি তো সবচেয়ে বড় অংশ, যা আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। দৃশ্যমান নয় বলে মনের কি অসুখ হতে পারে না? জ্বর, ঠান্ডা, ক্যান্সার, টিউমার, কভিড ইত্যাদি সমস্যার ব্যাপারে আমরা অবগত। আমরা মনের একটা রোগের নাম বলতে পারি না। বাংলাদেশে প্রায় ২৪ হাজার মানুষ প্রতিবছর আত্মহত্যা করে এবং পৃথিবীতে এর সংখ্যা প্রায় ৭ লাখের কাছাকাছি। তা সত্ত্বেও আমরা কি এ বিষয় নিয়ে জানার প্রায়োজন বোধ করি? 

মনের বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়। যেমন– ওসিডি বা অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসঅর্ডার। এই রোগে ভুক্তভোগীরা একই কাজ বার বার করে। কারণ, তারা কাজটি করে শান্তি পায় না। মনে হয় ভালো হলো না। ভুল হচ্ছে। তাই তারা একই কাজ বারবার করে; যাকে আমরা শুচিবাই বলে থাকি। অনেকেরই এটি থাকে।  ঝামেলা তখন বাধে যখন এটি মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়ে যায়। আশপাশের সবাই না বুঝে বকাঝকা করে নানান কথা বলে, কিন্তু এই ব্যাপারটা তার নিয়ন্ত্রণে থাকে না। সে বুঝতে পেরেও সেটি বন্ধ করতে পারে না। দীর্ঘদিন এ যন্ত্রণা ভোগ করতে না পেরে অনেকে মৃত্যুকে বেছে নেয়। চিকিৎসক দেখিয়ে কিছু ওষুধ খেলেই এটি সেরে যায়। দরকার শুধু একটু সচেতনতা আর পাশে থাকে এমন একজন মানুষ। 

মনের আরেকটি রোগের নাম বাইপোলার ডিসঅর্ডার। এটি মনের অন্যতম কঠিন একটি রোগ। যেখানে আপনার মন হঠাৎ পরিবর্তন হয়ে যাবে। এই খুশি, আবার এই কান্না। মাঝ রাতে উঠে মেকআপ করতে বসবেন। আবার করতে করতেই হঠাৎ এসে শুয়ে কাঁদতে থাকবেন। এটি একটানা অনেকদিন থাকতে পারে। যেমন আপনি তিন দিন ধরে খালি শুয়েই আছেন আর কাঁদছেন অথচ নিজেও জানেন না। 
ইনসুমনিয়া তথা নিদ্রাহীনতা মনের আরেকটি রোগের নাম। এক, দুই, চার দিন পর্যন্ত নির্ঘুম কেটে যেতে পারে।  দীর্ঘদিন এভাবে গেলে সমস্যাটি প্রকট আকারে রূপ নেয়। দীর্ঘদিন ঘুম না হওয়ার কারণে মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দেয়। ফলে হ্যালুসিনেশন, রাগ, সন্দেহ, আত্মঘাতীমূলত পদক্ষেপও দেখা দেবে। এমন হলে দরকার সঠিক চিকিৎসা এবং কিছু কাউন্সেলিং।
মনের রোগ হিসেবে হতাশা বা ডিপ্রেশনের কথা আমরা সবাই শুনে থাকি। খুবই সাধারণ ঘটনা। চাকরি না থাকা, দীর্ঘদিন এক রুটিন, সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া, কাঙ্ক্ষিত বা প্রিয় জিনিস না পাওয়া ইত্যাদি। প্রাথমিক পর্যায়ের হতাশা তেমন কোনো সমস্যা নয়। দু’দিন পর সেরে যাবে। বেশি ভয়াবহ হলে তখন সমস্যা দেখা দেয়। সবচেয়ে প্রিয় কাজটাও করতে ভালো লাগে না। কান্না আসে। মনে হয় কেউ নেই। একা লাগে। এমন সময় সবচেয়ে বেশি দরকার একজন মানুষ যে আপনাকে বোঝে। আপনার হাতটা শক্ত করে ধরে থাকবে। নিজের চেষ্টা আর সামান্য ওষুধে এটি ঠিক হয়ে যায়।

মনের আরেকটি রোগের নাম ফোবিয়া। এ রোগে ভুক্তভোগীরা খুব বেশি ভয় পায়। তেলাপোকাকে অনেকে ভয় পেতে পারে। এ ভয় পাওয়াটা তেমন কিছু না। ফোবিয়ার বিষয়টি বেশ মাত্রাতিরিক্ত। এ ধরনের মানুষগুলোকে মজার ছলে হলেও ভয় দেখানো যাবে না। এতে তার হৃদযন্ত্রের কাজ বন্ধ হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এটিও একধরনের মানসিক সমস্যা। 
মনের রোগ কখন কার হবে কেউ জানে না। ঠিক তেমন যেমন আমার কবে জ্বর হবে বলতে পারি না। পারিবারিক কলহ, কোনো ট্রমা, দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের কারও 
রোগ বা এমন যেকোনো কারণে এটি হতে পারে।

সিদরাতুল মুনতাহা ঐশ্বর্য: ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্ঘটনায় আহত অভিনেত্রী খুশি, চোখের ওপর পড়েছে ১০ সেলাই

দুর্ঘটনার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন ছোটপর্দার অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি। বুধবার সকালে রমনা পার্ক থেকে বাড়ি ফেরার সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় তিনি আহত হন। অভিনেত্রীর ছেলে সৌম্য জ্যোতি সমকালকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বুধবার সকালে আম্মু রমনা পার্কে হাটতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাসায় ফেরার সময় গলির মধ্যে একটি অটোরিকশা তাকে ধাক্কা দিলে আম্মু ছিটকে পড়ে যায় এবং তার ঠিক চোখের ওপর জখম হয়। পরে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সিটি স্ক্যানসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন তিনি আপাতত ভালো আছেন।’

এদিকে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুর্ঘটনার বিষয়টি জানান শাহনাজ খুশি। সেখানে তিনি বলেন, ‘বেশি না, মাত্র ১০টা সেলাই পড়েছে। এ আর এমন কি বলেন? চোখটা অন্ধ হয় নাই, হয় নাই ব্রেইন হ্যামারেজের মত শেষ অবস্থা! সেটাই তো অনেক বেশি পাওয়া! এ তেমন কিছু না, চোখের উপরের সেনসেটিভ জায়গায় মাত্র ১০ টা সেলাই লেগেছে! আমি যে প্রাণে বেঁচে আছি এ জন্য মহান সৃষ্টিকর্তা কাছে শুকরিয়া আদায় করছি!’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘কিচ্ছু চাই না আমি, শুধু যে মায়েরা/বাবারা ছোট্ট বাচ্চাটার হাত ধরে রাস্তা পার হয়ে স্কুলে আসেন অথবা নানান প্রয়োজনে রাস্তায় যান, তাদের সতর্ক করতে পোস্টটা দিলাম। আমি হয়ত ভেঙেচুরে বেঁচে গেছি। কোন বাচ্চা এ আঘাত নিতে পারবে না! ব্যাটারি চালিত অসভ্য/বর্বর যানবাহনটি এবং তার অসভ্য চালক থেকে সর্বদা সতর্ক থাকবেন। যদিও আমি গলির ভেতরের রাস্তায়, প্রাতঃ ভ্রমণ শেষে অতি সর্তকতার সাথেই একেবারে কিনার দিয়ে হেঁটে ফিরছিলাম! ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে বীরদর্পে চলে গেছে! ওরা মেধাবী যান চালক, কারো জীবনের ক্ষতির তোয়াক্কা করে না! আপনার এবং আপনার সন্তানের দায়িত্ব একান্তই আপনার। আজ চারদিন পরও মাথার অর্ধেকে কোন বোধশক্তি নাই!

সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘জানি না স্বাভাবিক চেহারায় ফিরবো কিনা, সেটা যদিও ফিরি রক্তাক্ত সেই পথে পড়ে থাকা সকালের ট্রমা অনেককাল ভুলবো না! কাতর অবস্থায় বিছানায় পরে থেকে বারবার একটা প্রশ্ন মনে আসছে, এই যে যত্রতত্র কুপিয়ে জখম, ট্রেন-বাস, রিকশা কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে দিনেরাতে ছিনতাই। কার কাছে চাইব আমাদের সন্তানদের নিরাপদ পথচলা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ