আউটার স্টেডিয়ামের ‘সবুজ গালিচা’ উধাও
Published: 25th, January 2025 GMT
অবৈধদের দখলে চলে গিয়েছিল নগরীর সবচেয়ে জমজমাট খেলার মাঠটি। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাঠের ভেতরেই গড়ে তোলা হয় অঘোষিত ‘গাড়ি রাখার টার্মিনাল’। বছরের বেশি সময় ধরে চলত মেলা। মাঠের চারপাশে ছোট-বড় রেস্টুরেন্টসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করে দখলে নেয় দখলদাররা। দিনের পর দিন মাঠে জমে থাকত আবর্জনার স্তূপ; রাতে বসত মাদকসেবীদের আসর। দখলদারদের কালো থাবায় মাঠ থেকে হারিয়ে যায় সবুজ ঘাস; উধাও হয়ে যায় খেলাধুলা। পাড়ার শিশু-কিশোর, তরুণদের নিয়মিত অনুশীলন চলে যায় নির্বাসনে। এমন বিপর্যয় ও নাজুক পরিস্থিতি থেকে কাজীর দেউড়ির এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন আউটার স্টেডিয়ামকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টরা। সবুজ ঘাসে আবারও নান্দনিকভাবে পুরোনো রূপ ফিরে পায় ঐতিহাসিক এ খেলার মাঠটি। তিন দশক ধরে পতিত জমিতে পরিণত হওয়া আউটার স্টেডিয়ামটি রূপলাভ করে একখণ্ড ‘সবুজ গালিচায়’।
দীর্ঘদিন পর এই মাঠে ক্রিকেট ব্যাটে পড়ে বল; পায়ে লাগে ফুটবল। চট্টগ্রাম নগরের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই খেলাধুলা করতে ছুটে আসেন এই মাঠে। তবে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই ‘সবুজ গালিচা’র মাঠটি এখন আবারও ধুলাবালিতে পরিণত হয়েছে। দেশের পটপরিবর্তনের কিছুদিন পর আউটার স্টেডিয়াম আবারও প্রাণ ফিরে পায়। তবে প্রশাসনের কোনো তদারকি কিংবা নজরদারি না থাকায় মাঠটি আবারও আস্তে আস্তে আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। মাঠটি এখন ধুলাবালিতে একাকার। এ অবস্থার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্তদের উদাসীনতার দিকেই আঙুল তুলছেন নিয়মিত এখানে অনুশীলন করতে আসা খেলোয়াড়সহ সংশ্লিষ্টরা। এতে ক্ষোভও প্রকাশ করছেন অনেকে। দ্রুত সময়ের মধ্যে মাঠটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না নিলে অতীতের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার কথাও বলছেন কেউ কেউ।
এমনিতেই চট্টগ্রামে খেলাধুলার মাঠের প্রবল সংকট। হাতেগোনা যে কয়টি মাঠ ছিল সেখানে কিছুদিন পরপর হয় নানা আয়োজন। যে কারণে মাঠের অভাবে খেলাধুলা থেকে বিমুখ হচ্ছেন অনেকেই। এ অবস্থায় আউটার স্টেডিয়ামের মাঠটিকে সংস্থার করে পুনরায় খেলা উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলায় স্বস্তি ফিরে আসে চট্টগ্রামের ক্রীড়াপ্রেমী থেকে শুরু করে সবার মাঝে। কারণ এ মাঠটি হয়ে উঠে নগরের একটি বড় অংশের প্রধান মাঠ হিসেবে। তবে মাত্র কয়েক মাসেই মাঠের সবুজ ঘাস উধাও হয়ে এটির নাজুক অবস্থায় সবার মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা। কারণ সবুজ ঘাসের বেশির ভাগই এখন আর নেই।
সরেজমিন আউটার স্টেডিয়াম ঘুরে দেখা যায়, আগে দূর থেকে তাকালে দেখা যাওয়া সেই ‘সবুজ গালিচা’ এখন উধাও। মাঠের অধিকাংশ অংশ থেকে উঠে গেছে সবুজ ঘাস। সেখানে দেখা মিলছে বালু আর বালু। কিছু কিছু স্থানে সবুজ ঘাসের কিছু অস্তিত্ব দেখা গেলেও সেগুলো বিলীন হওয়ার পথে। সবুজ মাঠটি বালুময় হওয়ায় সেখানেই নিয়মিত অনুশীলন ও খেলাধুলা করার কারণে চারপাশে উড়ছে বালু। যে কারণে মাঠের চারপাশে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে সেসব বালু। এতে অনেকটা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে চারপাশ। এমন নাজুক অবস্থার মধ্যে খেলাধুলা করতে গিয়ে বেগ পেতে দেখা যায় অনেককে। আর এমন পরিবেশ খেলোয়াড়দের শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলেও জানান কয়েকজন।
চট্টগ্রাম নগরের আসকারদিঘি পাড় এলাকা থেকে ক্রিকেট খেলতে আসা ইমতিয়াজ হোসেন শিমুল বলেন, ‘কয়েকমাস আগেও মাঠটি সবুজ ঘাসে ভরপুর ছিল। তবে এখন এটির অবস্থা খুবই নাজুক। বেশিরভাগ অংশ থেকে সবুজ ঘাস উঠে গেছে; সেখানে দেখা মিলছে বালুর। প্রশাসনের তদারকি ও সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবেই সুন্দর মাঠটির এমন করুন পরিণতি হয়েছে। শিগগির এটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া না হলে আগের মতো পরিণতি হবে এটির।’
দুই ছেলেকে নিয়ে আসা বাবা সুনীল চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরে এমনিতেই খেলার জন্য উন্মুক্ত কোনো মাঠ নেই। তাই এই মাঠটি একমাত্র ভরসা আমার সন্তানদের মতো অনেকের। এটিও অনেক বছর ধরে ছিল অবৈধদের দখলে। দীর্ঘদিন পর মাঠটি দখলমুক্ত হওয়ায় আমার মতো অনেকের জন্য স্বস্তি নিয়ে আসে। সবুজ মাঠটিতে সন্তানদের নিয়ে প্রায়ই আসি। কিন্তু বর্তমানে মাঠটির সবুজায়ন অনেকাংশে হারিয়ে গেছে। দায়িত্বপ্রাপ্তদের কোনো নজরদারি না থাকায় এটির এমন নাজুক অবস্থা হয়েছে। এর দায়ভার প্রশাসন এড়াতে পারে না। এটির রক্ষণাবেক্ষণে কেউ না থাকায় যে যার মতো করে মাঠটিকে ব্যবহার করছে। যে যেভাবে পারছে এখানে গর্ত করছে। আশা করছি কর্তৃপক্ষ প্রাণের এই মাঠটি রক্ষায় এগিয়ে আসবে।’ আউটার স্টেডিয়ামের পাশে নিয়মিত বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দেওয়া অ্যাডভোকেট মো.
চট্টগ্রামে এক সময়ের খেলোয়াড় তৈরির কারখানা ছিল আউটার স্টেডিয়াম। এই মাঠেই নিয়মিত খেলতেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান, তামিম ইকবাল, নান্নু থেকে শুরু করে নাফিস ইকবাল, আফতাব হোসেনসহ আরও কয়েকজন। কলকাতা ইস্ট বেঙ্গল টিমও খেলেছে এ মাঠে। স্টার সামার, স্টার যুব টুর্নামেন্টের মত বড় বড় টুর্নামেন্ট আয়োজিত হয়েছে এখানেই। যেখানে খেলেছে দেশ-বিদেশের অনেক নামিদামি ক্রিকেটার। কিন্তু গত তিন দশক ধরে দখলদারদের থাবায় এটি পরিণত হয় জঞ্জালে। সৌন্দর্য বর্ধনের নামে এটিকে পরিণত করা হয় ব্যবসায়ীক জোনে। অথচ দেশের ক্রীড়াঙ্গণের অনেক অর্জন-সাফল্যের স্বাক্ষী এই মাঠ। মাঠটির যাবতীয় বিষয় তদারকির দায়িত্ব চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের। পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসক এটির সভাপতি। এটির বর্তমান নাজুক অবস্থা সম্পর্কে জানতে বর্তমান জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
হারিয়ে যাওয়া সবুজ ঘাসের নান্দনিক আউটার স্টেডিয়ামটি চট্টগ্রামবাসীকে আবারও ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন চট্টগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। তার নেওয়া বেশকিছু উদ্যোগে আবারও প্রাণ ফিরে পায় মাঠটি। বিপর্যস্ত আউটার স্টেডিয়ামের চারপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ২০২৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। এ ব্যাপারে আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘দখলদারদের হাত থেকে মাঠটি রক্ষা করা অনেক কঠিন ও চ্যালেঞ্জের ছিল। এখানে অভিযান চালাতে গিয়ে অনেকভাবে হুমকি-ধমকিও দেওয়া হয়েছিল। তবে কিছুতেই পিচপা হয়নি। উদ্দেশ্য ছিল চট্টগ্রামবাসীকে সবুজ ঘাসের নান্দনিক মাঠ উপহার দেওয়ার। এখন এটি রক্ষা করা সবার দায়িত্ব।’
চট্টগ্রাম নগরের প্যারেড ও পলোগ্রাউন্ড মাঠ থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে সেগুলো খেলার অনুপযোগী। তাছাড়া এসব মাঠে বেশিরভাগ সময় নানা অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। দেশের পটপরিবর্তনের পর নগরের অন্যতম বৃহৎ এই দুই মাঠে খেলাধুলা করতে গিয়ে প্রায়ই ফিরে যেতে হয় ক্রীড়াপ্রেমীদের। এর প্রধানতম কারণ হলো আগে এসব মাঠে বিভিন্ন মেলার আয়োজন করা হলেও গত ৫ আগস্টের পর থেকে বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের দখলে চলে যায় মাঠ দুটি। তাদের নানা অনুষ্ঠানের কারণে খেলাধুলার সুযোগ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে খেলোয়াড়ররা।
আউটার স্টেডিয়াম সংস্কারে সিজেকেএসের নিজস্ব অর্থায়নে এক কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। মাঠটির আয়তন প্রায় ১১ হাজার বর্গফুট। এরমধ্যে ৮ হাজার বর্গফুট জুড়েই খেলার মাঠ। এখানে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ও লিগ টুর্নামেন্টের জন্য আলাদা জায়গাও রাখা হয়। প্রকল্পের আওতায় কয়েকমাস ধরে মাঠে ঘাস লাগানো হয়। সাধারণত রোপণ পদ্ধতির মাধ্যমে ঘাস গজানো হয়। তবে এখানে ঘাস গজানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল আধুনিক স্প্রেডিং পদ্ধতি। ঘাষ বড় করতে টানা কয়েকমাস করা হয় নিয়মিত পরিচর্যা। মাঠের চারপাশে দেওয়া হয় লোহার বেষ্টনি। এর আগে শেষ করা হয় বালু ভরাট ও ফিনিশিংয়ের কাজ। পরিকল্পিত এসব কাজের কারণে দীর্ঘদিন পর সবুজে ঢেকে যায় অনেকের পছন্দের আউটার স্টেডিয়াম। তবে সেটি রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে দায়িত্বশীলরা।
সিজেকেএস’র এক কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশের পটপরিবর্তনের পর থেকে সবকিছু চলছে অন্যভাবে। কমিটি না থাকায় সব কাজ অগোছালোভাবে চলছে। এ কারণে আউটার স্টেডিয়ামের করুণ পরিণতি হয়েছে। এটি নিয়ে আমরাও চিন্তিত।’ চট্টগ্রামের ক্রীড়াবিদ এবং ক্রীড়া সংগঠকদের মতে, দখলদারদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া মাঠটি যাতে অক্ষত থাকে সেজন্য আমরা প্রশাসনকে বারবার তাগাদা দিয়েছি। কিন্তু তারা এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। এ কারণে অনেকের ভরসার মাঠটির অবস্থা বর্তমানে নাজুক।
মেলা করা নিয়ে তোপের মুখে খোদ জেলা প্রশাসন
চট্টগ্রামে বিজয় মেলার স্থান হিসেবে গত ডিসেম্বর আউটার স্টেডিয়ামকে বেছে নেয় জেলা প্রশাসন। সংস্থাটির এমন সিদ্ধান্তে চট্টগ্রামজুড়ে নেতিবাচক আলোচনার জন্ম দেয়। ক্রীড়াপ্রেমীসহ নানা মহলের ‘তোপের মুখে’ পড়ে সংস্থাটি। পরে রেলওয়ের মালিকানাধীন সিআরবির মাঠে মেলা করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সেটিও পরিবর্তন করতে বাধ্য হয় জেলা প্রশাসন। সবশেষে কাজীর দেউড়ির পরিত্যক্ত শিশুপার্কের মাঠে বসে বিজয়মেলা। আউটার স্টেডিয়ামে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা আয়োজনের কাজ প্রায় সেরে ফেলেছিল জেলা প্রশাসন। এজন্য প্রায় পুরো মাঠজুড়ে বড় বড় গর্ত করে প্যান্ডেলও তৈরি করা হয়। এতে সবুজ ঘাস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যে কারণে তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা মাধ্যমে প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নেতিবাচক লেখালেখিও হয়। বছর ধরে ‘খেলার মাঠে মেলা নয়’ ঢাকঢোল পিটিয়ে এমন ‘নীতিবাণী’ প্রচার করে জেলা প্রশাসন। অথচ আকরাম খান, তামিম ইকবাল, নান্নু, নাফিস, আফতাবদের মতো উঠে আসা একঝাঁক ক্রীড়াতারকার ‘জন্মস্থান’ আউটার স্টেডিয়ামে ফের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলার আয়োজন প্রায় সেরে ফেলেছিল। পরে খেলোয়াড়, ক্রীড়ামোদিদের তোপের মুখে পড়ে আউটার স্টেডিয়ামের বারোটা বাজিয়ে এমন বিনাশী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হয় জেলা প্রশাসন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আউট র স ট ড য় ম র ন জ ক অবস থ সব জ ঘ স র সব জ গ ল চ র অবস থ ট র এমন অবস থ য় র জন য এই ম ঠ দ ন পর হয় ছ ল নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বোট ক্লাবসহ ৭ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ দখল ছাড়ার নির্দেশ
সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের বড় কাকড় গ্রামে তুরাগ নদীর তীরে অবস্থিত ঢাকা বোট ক্লাব। ক্লাবের স্থাপনা নিয়ে রয়েছে নানা অভিযোগ। নদীর সীমানার ২০০ গজের মধ্যে কোনো স্থাপনা তৈরি না করার নিয়ম থাকলেও এ ক্ষেত্রে মানা হয়নি তা। এই ক্লাবের মতোই পাশেই নদী তীর দখল করে প্রকল্প নির্মাণ করছে এনডিই রেডিমিক্স। এভাবে ঢাকার আশপাশে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের জমি দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। রাজনৈতিক ব্যক্তি ও প্রভাবশালী দখলদাররা এসব জমিতে আবাসন প্রকল্প, বিপণিবিতান, স্কুল-কলেজ, ডেইরি ফার্ম, গাড়ির গ্যারেজ, এমনকি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে দখল করেছেন। অবশেষে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দখল হয়ে যাওয়া এসব জমি উদ্ধারের উদ্যোগ নিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
মঙ্গলবার জমির দখল ছেড়ে দেওয়ার জন্য বোট ক্লাবসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সাত দিনের মধ্যে দখল না ছাড়লে উচ্ছেদ করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
বোট ক্লাব ছাড়াও নোটিশ দেওয়া অন্য ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- এনডিই রেডিমিক্স, শামিন গ্রুপ, সেবা গ্রিন লাইন, করিম রেডিমিক্স, মো. আকবর মাদবর, মো. দিদার হোসেন, মো. জালাল মাদবর। বোট ক্লাবের সভাপতিকে দেওয়া নোটিশে বলা হয়েছে, সাভারের বড় কাকড় মৌজায় পাউবো বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করেছে। এখানে বোট ক্লাব প্রায় ১০ এক জমি অবৈধভাবে দখল করেছে। সাত দিনের মধ্যে এই জমি ছেড়ে না দিলে উচ্ছেদ করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাউবোর এক কর্মকর্তা বলেন, রাজধানী ঢাকা শহর রক্ষা বেড়ি বাঁধের দুই হাজার একর জমি গিলে ফেলেছে ভূমি দস্যুরা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মালিকানাধীন ওই জমি প্রায় ১৫০০ প্রভাবশালী ব্যক্তি দখল করে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করায় বাঁধ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ওই জমি উদ্ধারে কয়েক দফা চেষ্টা করা হয়। জমি উদ্ধারে সর্বাত্মক সহায়তা চেয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসনকে চিঠিও দেওয়া হয়। কিন্তু পাউবো কোনো সহযোগিতা পায়নি। ফলে উদ্ধারও হয়নি বেদখলে থাকা জমি। অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে প্রতিবছর উদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া হলেও অজ্ঞাত কারণে তা বাস্তবায়ন হয় না।