সুফিবাদের চর্চা রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সময় থেকেই হয়ে আসছে। কালের পরিক্রমায় এর নামে ও অবয়বতায় হয়তো বিভিন্নতা এসেছে, তবে তরিকতের হাকিকত ছিল এক-অভিন্ন ও অবিকৃত। সুফিবাদ চর্চার দীর্ঘ পথপরিক্রমায় বহু তরিকা বিকাশ লাভ করে, যেমন– কাদেরিয়া, চিশতিয়া, সোহরাওয়ার্দীয়া, নকশ্বন্দীয়া, মোজাদ্দেদীয়া ইত্যাদি। এরই ধারাবাহিকতায় মাইজভান্ডারী তরিকার আত্মপ্রকাশ ঘটে। আত্মবিকাশের অতি অল্প সময়ের মাঝেই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এই তরিকা আধ্যাত্মিক উন্নয়নের সহজ পন্থা হওয়ার পাশাপাশি সামাজিক শান্তি ও সম্প্রীতি, সর্বজনীন ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্বের এক অনন্য প্লাটফর্ম হিসেবে আমাদের সমাজ জীবনে স্থান করে নিয়েছে।
হযরত গাউছুল আজম শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী আল্লাহর নৈকট্য লাভের সহজ পন্থা মাইজভান্ডারী তরিকার প্রবর্তন করেন। এ তরিকা কোরআন ও হাদিসভিত্তিক ইসলামের মৌলিক ভাবাদর্শের অনুসরণে প্রতিষ্ঠিত একটি তরিকা। এ তরিকা ধর্মীয় এবাদত পালনের সঙ্গে সঙ্গে নৈতিক পরিশুদ্ধির ওপর প্রাধান্য দেয়।
নফছে ইনসানীর কুপ্রবৃত্তি বন্ধ করে রুহে ইনসানির সুপ্রবৃত্তি জাগ্রত করার জন্য হযরত গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী নির্বিঘ্ন ও সহজসাধ্য মাধ্যম হিসেবে সকল তরিকতপন্থির কাছে আদৃত ও স্বীকৃত উছুলে ছাবয়া বা সপ্ত-পদ্ধতিকে পরিচিত করেছেন। এই সপ্ত-পদ্ধতি দুই স্তরে বিভক্ত।
১.
২. মউতে আরবা বা চতুর্বিধ মৃত্যু।
ফানায়ে ছালাছা বা রিপুর ত্রিবিধ বিনাশ স্তর ফানা আনিল খাল্ক: কারও কাছে কোনোরূপ উপকারের আশা বা কামনা না থাকা। এর ফলে আত্মনির্ভরশীলতা ও আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। পরমুখাপেক্ষিতা মানুষের স্রষ্টাপ্রদত্ত সহজাত শক্তি বিকাশের পথ বাধাগ্রস্ত করে। ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় তথা সামষ্টিক জীবনে উন্নতির জন্য আত্মনির্ভরশীলতার কোনো বিকল্প নেই।
ফানা আনিল হাওয়া: যা না হলেও চলে, এমন কাজকর্ম ও কথাবার্তা থেকে বিরত থাকা। এর ফলে জীবনযাত্রা সহজ ও ঝামেলামুক্ত হয়। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেন, “একজন ব্যক্তির ইসলাম পালনের সৌন্দর্য তার অনর্থক কাজ পরিহার করার মাঝেই নিহিত রয়েছে।” অতিরিক্ত ভোগ-লালসা মানুষের মাঝে পশু শক্তির উন্মেষ ঘটায়। পৃথিবীতে চলমান অস্থিতিশীল অবস্থার অন্যতম মৌলিক কারণ হচ্ছে চাহিদাতিরিক্ত লালসা। অনর্থ পরিহার করে শোষণহীন স্থিতিশীল সমাজ প্রতিষ্ঠাই গাউছিয়ত নীতির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
ফানা আনিল এরাদা (খোদার ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেওয়া): নিজ ইচ্ছা বাসনাকে খোদার ইচ্ছায় বিলীন করে তছলিম ও রজা অর্জন করা।
মউতে আরবা বা চতুর্বিধ মৃত্যু: মৃত্যু একটি অতিপরিচিত শব্দ। মাইজভান্ডারী তরিকায় রূপকার্থে ব্যবহৃত এ চারটি মৃত্যু মানে কামনা, বাসনা ও প্ররোচনাদানকারী নফসের পরিশোধন।
মউতে আবয়্যাজ বা সাদামৃত্যু: উপবাস ও সংযমের মাধ্যমে অর্জিত এই মৃত্যুতে মানব মনে ঔজ্জ্বল্য ও আলো দেখা দেয়। রমজানের রোজা বা নফল রোজা ইত্যাদি উপবাস ও সংযম পদ্ধতি। আল্লাহতায়ালা বলেন, “হে বিশ্বাসীগণ, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনিভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছিল যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।’’
মউতে আছওয়াদ বা কালোমৃত্যু: সমালোচকের সমালোচনা, শত্রুর শত্রুতা ও নিন্দুকের নিন্দায় বিরক্ত বা রাগান্বিত না হয়ে নিজের মাঝে সমালোচনার কারণ অনুসন্ধান করে তা সংশোধনের মনমানসিকতা অর্জনই কালোমৃত্যু। নিজের মধ্যে সমালোচিত বিশেষণ খুঁজে পেলে মানুষ একদিকে যেমন দোষ সংশোধনের সুযোগ পায়, অন্যদিকে আল্লাহর কাছে আপন কৃতকর্মের জন্য তওবা করার দ্বার উন্মোচিত হয়। নিজেকে বিশ্লেষণপূর্বক আরোপিত দোষমুক্ত বলে নিশ্চিত হলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় ও খোদার নিয়ামতের শোকর আদায়ের পথ সুগম হয়। তাই একথা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, মউতে আছওয়াদ বা কালোমৃত্যুর আলোকে মাইজভান্ডারী তরিকার অনুসারীরা তাদের তরিকার সমালোচকদের বন্ধু মনে করে।
মউতে আহমর বা লালমৃত্যু: কামস্পৃহা ও লোভ-লালসা থেকে মুক্তিতে হাসিল হয়। অনিয়ন্ত্রিত কামস্পৃহা ব্যক্তির আধ্যাত্মিকতা ও নৈতিকতাকে ধ্বংস করে। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘‘আমার উম্মতের জন্য আমি সবচেয়ে বেশি ভয় করি তা কামস্পৃহা ও দুরাশা।’’ কামভাব নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে লালমৃত্যুগুণ অর্জিত হয়ে সাধক অলিয়ে-কামেলের পর্যায়ে উন্নীত হয়।
মউতে আখজার বা সবুজ মৃত্যু: নির্বিলাস জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হওয়ার মাধ্যমে সবুজ মৃত্যু লাভ হয়। নির্বিলাস জীবন-যাপনের ফলে মানবান্তরে ঐশী প্রেম ভিন্ন কোনো কামনা-বাসনা থাকে না, সুফি মতে তা বেলায়তে খিজরির অন্তর্গত।
উছুলে ছাবয়ার বিশ্লেষণে হযরত সৈয়দ দেলাওর হোসাইন মাইজভান্ডারী বলেন, “এই সপ্ত পদ্ধতি, সংসার জীবনের বোঝা হালকা, সরল ও সহজসাধ্য করে। পরকালীন জীবনকে আনন্দময় ও মধুর করে এবং পরের দুঃখ-কষ্টের কারণ না হয়ে বরং বন্ধুসুলভ হিতার্থীরূপে দেখা দেয়।” “অন্যান্য বিশ্বধর্মীয় সাধনা সিদ্ধি ও নিয়মানুবর্তীর সঙ্গে বিরোধাত্মক নহে। বরং উৎসাহ বর্ধক বাস্তববোধ জাগরণকারী, বিশ্ব সমস্যার সমাধানকারী মুক্তির দিশারী।”
বিশ্ববাসীর আত্মিক ও চারিত্রিক পরিশুদ্ধির জন্য হযরত গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী উছুলে ছাবয়ার যে আত্ম-নিয়ন্ত্রণ ও সংশোধন পদ্ধতি দিয়ে গেছেন তা ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের পালন-সম্ভব একটি কল্যাণকামী কর্মসূচী। কোন মুমিন বান্দা যখন আপন মুর্শিদের তত্ত্বাবধানে এই সপ্ত-পদ্ধতির অনুশীলন করে, তখন তার আল্লাহর নৈকট্য লাভ ও পারলৌকিক সাফল্য লাভের পথ সুগম হয়। এবং সাথে সাথে তিনি হেদায়তের আলোকবর্তিকারূপে আবির্ভূত হয়ে বৃহত্তর সমাজের মঙ্গল ও কল্যাণ ধারকরূপে বিবেচিত হন। হযরত গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারীর অগণিত খলিফা ও অনুগ্রাহপ্রাপ্ত মনীষীগণ তার সুস্পষ্ট প্রমাণ। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, “যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদের অভ্যর্থনার জন্যে আছে জান্নাতুল ফেরদাউস।” (সূরা- কাহফ, ১০৭)
অপর দিকে ভিন্ন ধর্মানুসারীদের জন্যও এই কোরআনি হেদায়তি সপ্ত-পদ্ধতি অনুসরণযোগ্য। এই সপ্ত-পদ্ধতির অনুসরণের মাধ্যমে তারা একদিকে যেমন আপন চরিত্রকে উন্নতির সর্বোচ্চ সোপানে আরোহন করাতে পারেন, ঠিক তেমনি নিজকে একজন সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলে মানবতার সেবকরূপে উপস্থাপন করতে পারেন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেন, “অতঃপর কেউ অনুপরিমান সৎকর্ম করলে তার ফল ভোগ করবে এবং কেউ অনুপরিমান অসৎকর্ম করলে তার ফল ভোগ করবে।” (সুরা যিলযাল, ৭)
চলমান বিশ্ব পরিস্থিতির পর্যালোচনায় আমরা দেখি বিশ্ব-মানবতা ইতিহাসের এক চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। নৈতিকতার পরশহীন সমাজ ব্যবস্থার ফলশ্রুতিতে পুরো বিশ্ব আজ দুভাগে বিভক্ত, শোষক আর শোষিত। বিশ্বের সকল বহুজাতিক সমস্যার মূলে যে কারণগুলো রয়েছে তার অন্যতম প্রধান দুটি কারণ হচ্ছে: প্রথমতঃ ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সীমাহীন বিলাসিতা ও লোভ-লালসা। দ্বিতীয়তঃ ধর্মীয় গোঁড়ামী ও অসহনশীলতা।
প্রিয় পাঠক! আসুন আমরা সামান্য কল্পনার আশ্রয় নিই। আমরা কল্পনা করি পৃথিবীর কমপক্ষে এক ষষ্ঠাংশ মানুষ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মাইজভাণ্ডারী তরিকার ভক্ত হয়ে সপ্ত-পদ্ধতির অনুশীলন করছে। গঠন করেছে এক বৃহত্তর মাইজভাণ্ডারী সমাজ। এই সমাজের সদস্যরা উছুলে ছাবয়ার অনুসরণকারী। তারা আল্লাহর একত্ববাদে পূর্ণ বিশ্বাসী ও নিজ ধর্মের অনুশাসনের প্রতি আস্থাশীল। তারা আত্মনির্ভরশীল, সুখে-দুঃখে খোদার ইচ্ছাশক্তিতে আত্মসমর্পিত ও সন্তুষ্ট। তাদের কোন পার্থিব লোভ-লালসা নেই, তাদের কামন-বাসনা সংযত। তারা আত্মসমালোচনায় অভ্যস্ত ও অপরের সমালোচনাকে ইতিবাচক দৃষ্টিকোণে গ্রহণ করেন। তারা অল্পে তুষ্ট এবং নির্বিলাস জীবন যাপনে অভ্যস্ত। তারা ভ্রাতৃত্ববোধে উদ্বুদ্ধ, সহনশীল ও ধর্ম-সাম্যে বিশ্বাসী এবং সাথে সাথে অন্যায়ের বিরুদ্ধেও সোচ্চার।
সত্যিকার মাইজভাণ্ডারী চরিত্রের অধিকারী সদস্য দ্বারা গঠিত এমন এক সমাজে হানাহানি, হিংসা-বিদ্বেষ, ধর্মীয় গোঁড়ামী সম্ভুত সমস্যা, পর-ধন গ্রাস ইত্যাদি অপকর্মের হার যে খুব কম থাকবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। এবং সেই সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা যে বর্তমান সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রতি তুলনায় অসংখ্যগুণ ভালো হবে তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। উপরন্ত এমন চরিত্রের অধিকারী কোন জাতি কখনই অন্যায় যেমন করতে পারেনা তেমনি অন্যায়ের শিকারও হয়না। একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, গাউছুল আজম হযরত সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী কর্তৃক নির্দেশিত উছুলে ছাবয়ার মৌলিক উপাদানগুলোকে বাস্তব জীবনে পালন করতে পারলে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যের সেতু বন্ধন স্থাপিত হবে।
লেখক: রিসার্চ ফেলো, দারুল ইরফান রিসার্চ ইনস্টিটিউট
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মিজমিজি পশ্চিমপাড়া স্কুল এন্ড কলেজে ক্রীড়া প্রতিযোগীতার পুরস্কার বিতরণ
ড়াই শক্তি- ক্রীড়াই বল, সুস্থ্য দেহে সুন্দর মন, উৎসবমুখর পরিবেশে সিদ্ধিরগঞ্জের ‘‘মিজমিজি পশ্চিমপাড়া স্কুল এন্ড কলেজ”র বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আনন্দময় এবং উৎসবমুখর পরিবেশে বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে স্কুল এন্ড কলেজের মাঠ প্রাঙ্গণে এ সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিভা প্রদর্শন করেন এবং অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়, যার মধ্যে ছিল নৃত্য, গান, নাটক, কবিতা আবৃত্তি ও অন্যান্য পরিবেশনা।
শিক্ষার্থীরা তাদের অনুশীলিত প্রতিভা দেখিয়ে উপস্থিত সকলকে মুগ্ধ করে। বিশেষ করে, স্কুলের ছোটদের নৃত্য এবং গান সকলের মন জয় করে নেয়।
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভিন্ন বিভাগে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী, শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়, শ্রেষ্ঠ সাংস্কৃতিক শিল্পী, শ্রেষ্ঠ বক্তা, শ্রেষ্ঠ কবি ও শ্রেষ্ঠ নৃত্য সহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত হোন শিক্ষার্থীরা। এই পুরস্কারগুলি শিক্ষার্থীদের আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে উৎসাহিত করবে বলে আয়োজকরা জানান।
মিজমিজি পশ্চিমপাড়া স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাঈদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাবেক সদস্য মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, স্কুলের পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও দাতা সদস্য মোস্তফা কামাল মেম্বার, দাতা সদস্য আবুল কাশেম, হযরত আলী কন্ট্রাকটর, হযরত আলী, হুমায়ূন আহমেদ, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এমএ গাফফার ও আব্দুল মান্নান সাগর সহ অত্র স্কুলের সকল সম্মানিত দাতা, প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ, শিক্ষক- শিক্ষিকা-শিক্ষার্থীসহ আরো অনেকে।