‘সিভিল সার্ভিসে সংস্কার: প্রেক্ষিত বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা শনিবার (২৫ জানুয়ারি) খুলনা মেডিকেল কলেজ অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ খুলনা বিভাগের উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়। 

সভায় সিভিল সার্ভিস সংস্কারের মাধ্যমে বৈষম্য দূরকরণের মাধ্যমে কার্যকর জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক সরকারি হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজের অধ্যক্ষ ফারুখে আযম মু.

আব্দুস সালাম সভাপতিত্ব করেন।

শিক্ষা ক্যাডারের সদস্য আব্দুল মান্নান ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের ডা. বেলাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫টি ক্যাডারের খুলনা বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্য রাখেন ডা. আসাদুল্লাহিল গালিব (স্বাস্থ্য ক্যাডার), ডা. এ বি এম জাকির হোসেন (প্রাণি সম্পদ ক্যাডার), ডা. শেখ আবু শাহিন (পরিচালক, খুলনা বিশেষায়িত হাসপাতাল), প্রফেসর ড. আনিস আর রেজা (পরিচালক, মাউশি, খুলনা অঞ্চল), প্রফেসর কে এম রব্বানি (অধ্যক্ষ, মংলা সরকারি কলেজ), ডা. রফিকুল হক বাবলু (সাবেক সভাপতি, বিএমএ, খুলনা), জুবাইদা গুলশান আরা (পোস্টাল), মো. ফরিদ উদ্দিন (তথ্য), মিজানুর রহমান (সমবায়), জাহিদ হাসান (মৎস), রফিকুল ইসলাম (কৃষি) প্রমুখ। এছাড়া ছাত্র সমন্বয়ক মিনহাজুল আবেদিন, আয়মান আহাদ, জুবায়ের ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

সভায় বক্তারা সিভিল প্রশাসনের সকল স্তরে অনিয়ম, কোটাবৈষম্য, অসমতা দূর করে একটি গতিশীল জনপ্রশাসন ব্যবস্থা গড়তে সরকারকে সহযোগিতা করতে দৃঢ়তা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘কোটা বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকারকে বিদায় করে গঠিত হয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। তাই ২৫ ক্যাডার বর্তমান সরকারের অনুভূতিকে ধারণ করে সকল ধরনের কোটা বিলোপের মাধ্যমে মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন গড়তে বদ্ধ পরিকর।’’

বক্তারা বলেন, ‘‘বিরাজমান প্রশাসনিক অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে ২৫টি ক্যাডারের অধিকাংশ শীর্ষ পদে সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রদায়ন নেই। দক্ষ, পেশাদার ও গতিশীল সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যথাযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ন্ত্রণে অফিস বণ্টন করতে হবে। কার্যকর জনসেবা নিশ্চিত করতে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ হতে কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবি করা হয়। অর্থাৎ প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে স্ব-স্ব ক্যাডারের অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মকর্তাদের পদায়ন করতে হবে। সকল সেক্টরে একটি ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণ থাকায় সার্ভিসে পেশাদারিত্ব মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।’’ 

সভায় মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের বিধি থাকলেও যা প্রশাসন ক্যাডার ধীরে ধীরে অনিয়মের মাধ্যমে নিজেদের জন্য কোটাভূক্ত করেছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। তাছাড়া কোটা জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও উল্লেখ করা হয়।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কিস্তি না পেয়ে ছাগল নিয়ে গেলেন সংস্থার কর্মী

দুই দিন কিস্তি না পেয়ে এক নারীর বাড়ি থেকে তার ছাগল নিয়ে গেলেন রাজশাহীর একটি সংস্থার একজন কর্মী। 

রবিবার (২ মার্চ) সকালে এ ঘটনা ঘটে। পরে এলাকায় জানাজানি হলে ছাগলটি ফেরত দিতে বাধ্য হয় জনকল্যাণ মানব উন্নয়ন সংস্থা নামের ওই সংস্থাটি।

নগরের টিকাপাড়া বাসার রোড এলাকার একটি ভাড়া বাসায় এই সংস্থার কার্যালয়। সংস্থাটি এলাকার দুঃস্থ মানুষের মাঝে ঋণ দিচ্ছে। ফাতেমা বেগম নামের এক নারী ঋণ নেওয়ার পর দুইদিন কিস্তি দিতে না পারলে তার বাড়ি থেকে একটি ছাগল নিয়ে যান ওই সংস্থার মাঠকর্মী।

নগরের তালাইমারী এলাকার বাসিন্দা ফাতেমা বেগম জানান, তিনি নগরের হাদির মোড়ে সবজি বিক্রি করেন। এই ব্যবসার জন্য ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। ইতোমধ্যে চার হাজার টাকা শোধ করেছেন। সম্প্রতি দুর্ঘটনায় তিনি কোমরে আঘাত পেয়েছেন। ব্যবসা করতে পারছেন না। তাই দুটি কিস্তি দিতে পারেননি। তাই তার বাড়ি থেকে ছাগল নিয়ে যাওয়া হয়।

তিনি জানান, রবিবার সেহরি খেয়ে ও নামাজ পড়ে তিনি পাশে বোনের বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলেন। সকালে ওই সংস্থার মাঠকর্মী কিস্তি আদায়ে তার বাড়ি যান। তাকে না পেয়ে বাড়িতে বেঁধে রাখা একটি ছাগল ধরে নিয়ে চলে যান সংস্থার ওই কর্মী। যদিও ছাগলটি তার নিজের না। রিসা বেগম নামের এক নারী এই ছাগলটি তিনি আধাআধি হিসেবে পুষতেন।

রবিবার বেলা ১২টার দিকে ওই সংস্থার কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ছাগল ফেরত নিতে ফাতেমা সংস্থার কার্যালয়ের সামনে এসেছেন। ছুটে এসেছেন ছাগলের আসল মালিক রিসা বেগমও। ঋণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করলেও সংস্থাটির কোনো সাইনবোর্ড পর্যন্ত নেই।

রিসা বেগম এসে তুমুল বাগবিতণ্ডা শুরু করেন সংস্থার কর্মকর্তা নাসিরুল্লাহ কবীরের সঙ্গে। পরে ওই ছাগল রিসা বেগমকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। ছাগল হাতে নিয়ে হাঁটা শুরু করে রিসা বেগম বলতে থাকেন, ‘‘সুদ খাওয়ার কারবার করছেন তো, আল্লাহই দিবে।’’ 

স্থানীয়রা জানান, সংস্থাটি দুই বছর থেকে ঋণ কার্যক্রম চালাচ্ছে। কিন্তু সংস্থার মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির কোনো নিবন্ধন নেই। সংস্থাটি চলছে শুধুমাত্র সমবায় সমিতির ছাড়পত্র দিয়ে। তারা এলাকার মানুষকে ঋণের ফাঁদে ফেলে চড়া সুদ আদায় করছে।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে সংস্থার কর্মকর্তা নাসিরুল্লাহ কবীর কোনো সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান। ছাগল নিয়ে আসার ব্যাপারেও তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

রাজশাহী জেলা সমবায় কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন ইসলাম বলেন, “জনকল্যাণ মানব উন্নয়ন সংস্থা নামে তাদের নিবন্ধন দেওয়া কোনো সংস্থা আছে কি না তা দেখে বলতে পারব।” 

কিস্তি দিতে না পারায় ছাগল আনার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ করতে পারেন।”

ঢাকা/কেয়া/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কিস্তি না পেয়ে ছাগল নিয়ে গেলেন সংস্থার কর্মী