রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে মো. শিমুল (২০) নামে রাজশাহী কলেজের এক শিক্ষার্থীকে হত্যার অভিযোগে বিক্ষোভ হয়েছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী রাজশাহী কলেজের প্রশাসন ভবনের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে কলেজ ক্যাম্পাসে মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়।

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে কোনো শিক্ষার্থী হত্যার শিকার হবে, তা মেনে নেওয়া যায় না। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড শুধু শিমুলের পরিবারকেই নয়, পুরো ছাত্রসমাজকে শোকাহত করেছে। আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাই। পাশাপাশি এ মৃত্যুর পেছনের ঘটনা উদ্ঘাটন করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

গত বৃহস্পতিবার রাতে রাবির স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু ভবনের সামনে থেকে আহতাবস্থায় শিমুলকে উদ্ধার করে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া হয়। পরে রাতে নেওয়া হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। শারীরিকভাবে আঘাতের কারণে শিমুল মারা গেছে বলে হাসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেটে উল্লেখ রয়েছে। 

স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের অভিযোগ, মারধরের কারণে শিমুল মারা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, নির্মাণাধীন সড়কে দুর্ঘটনায় শিমুলের মৃত্যু হয়েছে। শিমুল রাজশাহী কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন মধ্য বুধপাড়া এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

গডফাদার নারায়ণগঞ্জে ৭২ ফুট লম্বা ব্যানার টানিয়েছিল: ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষ এতোদিন অনেক কষ্টে ছিল। এই নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাসের রাজধানী বানিয়ে রাখা হয়েছিল। আমাদের তৎকালীন জামায়াতের আমীর ছিলেন গোলাম আযম। তার বিরুদ্ধে এই শহরের এক গডফাদার নারায়ণগঞ্জের সড়কে ৭২ ফিট লম্বা ব্যনাার টানিয়েছিল। তাতে লিখা ছিল, নারায়ণগঞ্জে ওমুকের প্রবেশ নিষিদ্ধ। ডিসি, এসপির উপস্থিতিতে গডফাদার শামীম ওসমান বলেছিলেন, আমার বিরুদ্ধে খুনের অগ্রীম মামলা করে রাখেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকারের জুলুমের শিকার হয়ে গোলাম আযম সাহেব মারা যান। গডফাদারের সুযোগ হয় নাই? আজ তিনি কোথায়? নারায়ণগঞ্জে নেই? এতো অহংকার ভালো না। দাম্বিকতা ভালো না।  সন্ত্রাসকে কখনো পশ্রয় দিতে হয় না। তাহলে দুনিয়াতেই তার করুণ পরিণতি ভোগ করতে হয়। এছাড়া আখিরাতে তাকে শূলে চড়াবেন। যেটা হবে আগুনের মহাকুন্ড। তাই বলি, তওবা করুন। মানুষ মতোন মানুষ হোন।  

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জের ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামের জেলা ও মহানগর জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়েও উস্কানিমূলক কথা বলছেন। উস্কানি দিয়ে উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। তাঁর উস্কানির কারণে যতগুলো ঘটনা ঘটবে এর দায়ভার উস্কানিদাতাকেই নিতে হবে।


তিনি বলেন, আগের বিচার তারপর সংস্কার তারপর নির্বাচন। সাড়ে ১৫ বছরে ২৬ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশের যত টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করেছে তা ফিরিয়ে এনে জনগণের কল্যাণে ব্যয় করার দাবি জানান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে।


জামায়াতের আমীর বলেন, গত ৫৪ বছর এই জাতিকে বিভক্ত করে রাখা হয়েছিল। আর সুকৌশলে এই বিভক্তি সৃষ্টি আওয়ামী লীগ করেছিল। তারা বিভক্তির শুরু করেন পাহাড়িদের নিয়ে। তারা ঘোষণা দিয়ে বলেন, আমরা সবাই বাঙ্গালী। কিন্তু এটা নিয়ে পাহাড়িরা প্রতিবাদ করেন। তখন থেকে এই যে বিভক্তি শুরু হয়েছে তা এখনো চলমান রয়েছে। এখনো ওইখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয় নাই। তারা এখন বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে নিজেরা সংঘর্ষে জড়াচ্ছেন। এই বিভক্তি যতোদিন থাকবে ততোদিন এই জাতির মধ্যে একতা সৃষ্টি হবে না। যা দেশের মানুষ গত ৫৩ বছর প্রত্যক্ষ করেছেন৷ 

জামায়াত আমীর বলেন, দেশের সাংবিধারিক সকল প্রতিষ্ঠান ধংস করে দিয়েছে আওয়ামীলীগ। দেশের একজন নাগরিকের সব অধিকার পাওয়ার অধিকার আছে। এটাই মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা। আমাদের এই সমাজ হবে বৈষম্যহীন। 

তিনি বলেন, আমরা দেশ সেবার দায়িত্ব পেলে প্রথমে শিক্ষায় হাত দিবো। আওয়ামীলীগ সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে শেষ করে দিয়ে গেছে। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় আসবে  মা বোনেরা নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিয়ে কাজ করতে পারবে বলে জানান তিনি। 


নারায়ণগঞ্জ মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আমীর মুহাম্মদ আব্দুল জব্বারের সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা  অঞ্চল দক্ষিণের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন প্রমুখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ