এনজিওর কায়দায় দেশ চলবে না, নরম-গরম লাগবে : ফয়জুল করীম
Published: 25th, January 2025 GMT
অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, এনজিওর কায়দায় নরম কথা বললে দেশ চলবে না। শাসকের কায়দায় কথা বলতে হবে।
নরম নরম কথা বললে এ দেশের মানুষকে শাসন করতে পারবেন না। নরমও লাগবে, গরমও লাগবে। তবে ইনসাফ ভিত্তিক নরম-গরম লাগবে। আর যদি জুলুম করেন, বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে আবারও আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে। ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর চেষ্টাও করবেন না। এটা করলে আপনারা ভুল করবেন।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের শিল্পকলা একাডেমিতে ইসলামী আন্দোলনের জেলা ও মহানগরের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সংস্কার ব্যতীত নির্বাচন হলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবাই শুধু নির্বাচন চায়। নির্বাচন চায় না এমন কোনো রাজনৈতিক দল নেই। আমরা সবাই নির্বাচনমুখী। তবে নির্বাচন কবে দেবেন, কালকে?
আগামীকাল যদি নির্বাচন দেন সেটা কি সুষ্ঠু হবে? গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে কি লাভ হবে? সংস্কারের আগে যদি নির্বাচন দেন সেই নির্বাচন তো প্রশ্নবিদ্ধ হবে। মানুষের আশা এবং আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হবে না।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তন হওয়ার পরে অনেকের জামিন হয়ে যাচ্ছে। কোর্ট তো সেই আগের কোর্ট। জজ তো সেই আগের জজ আছেন।
তাহলে এখন কীভাবে জামিন হচ্ছে। আবার অনেক আওয়ামী লীগের লোক গ্রেপ্তার হয়ে জামিনের জন্য মুভ করতে পারছে না। বিচারক কার ইশারায় বিচার করেন। সরকারের ইশারায় এসব করে, এমনটা আমরা চাই না। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা চাই।
জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলন মানবতার জন্য সবার সঙ্গে ঐক্য করতে রাজি আছে। জামায়াতের আমির চরমোনাইয়ে অফিসিয়ালি যাননি। রবিশালে তার প্রোগ্রাম ছিল, সেখান থেকে চরমোনাই একেবারে কাছে ছিল। ফলে সেখান থেকে সাক্ষাৎ করার জন্য তিনি চরমোনাই গিয়েছিলেন। যেহেতু তিনি একজন মেহমান হিসেবে সেখানে গিয়েছেন, তাকে শ্রদ্ধা-সম্মান ও আতিথেয়তা করেছি।
তবে সেখানে কোনো রাজনৈতিক আলোচনা হয়নি। সেখানে আমাদের শ্রদ্ধাভাজন আমির বলেছেন, ইসলামের পক্ষে একটা বাক্স দিতে চাই। যদি ইসলামের পক্ষে একটা বাক্স দেই, তাহলে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ দেশের ৯২ শতাংশ লোক ইসলামের পক্ষে ভোট দেবে।
বিএনপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি কেন যে ছাত্রদের থেকে আলাদা হচ্ছে আমি জানি না। বিএনপির সাম্প্রতিককালের বক্তব্যের সঙ্গে আগের বক্তব্যের মিল নেই। তারা আমাদেরও ফ্যাসিস্টের সহকারী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের আমলে বিতর্কিত কোনো নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন অংশগ্রহণ করেনি। জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় নির্বাচনকে আমরা এক মনে করি না।
বরং গত স্থানীয় নির্বাচনে সবাই অংশগ্রহণ করেছেন, কেউ নামে কেউ আবার বেনামে অংশগ্রহণ করেছেন। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সবাই অংশগ্রহণ করেছেন। আমরা সরাসরি ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। সেই নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর অনেকে চেয়ারম্যান হয়েছেন। বিএনপির হাজারো উদাহরণ রয়েছে যারা সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন।
কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন অংশগ্রহণ করেনি। সুতরাং কেউ যদি মনে করে ইসলামী আন্দোলন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সহযোগী ছিল আমি মনি করি এটা তাদের তথ্যের ভুল রয়েছে। এই বক্তব্যটা দ্বিতীয়বার পর্যালোচনা করার দাবি জানাই।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, ঢাকা বিভাগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, ইসলামী আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ, জেলার সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ দ্বীন ইসলাম প্রমুখ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র জন ত ন র য়ণগঞ জ ইসল ম র ব এনপ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
এবার ১২ হাজার শিক্ষার্থীকে ইফতার করালো রাবি প্রশাসন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অধ্যায়নরত ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ইফতারের আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (৩ মার্চ) দ্বিতীয় রোজায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে এ আয়োজন করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, আসরের নামাজের পর থেকেই শিক্ষার্থীরা দলে দলে কেন্দ্রীয় মসজিদে আসতে শুরু করেন। এ সময় মসজিদের ভেতরে এবং মসজিদ সংলগ্ন বাগানে তারা ইফতারির জন্য সারিবদ্ধভাবে বসেন। এ ছাড়াও নারীদের জন্য মসজিদের বাগানে আলাদাভাবে ইফতারির ব্যবস্থা করা হয়। এতে মসজিদ প্রাঙ্গণে তৈরি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ।
আরো পড়ুন:
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গণইফতার আয়োজন করে অভিনব প্রতিবাদ
রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা, ভোটগ্রহণ জুনে
ইফতারে অংশগ্রহণ করতে আসা ইনফরমেশন সাইন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রোকনুজ্জামান বলেন, “আজকের আয়োজন অনেক ভালো ছিল। এখানে সবার সঙ্গে ইফতার করতে এসে খুবই ভালো লাগছে। একটা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিটা দিন মনে হচ্ছে ঈদের মতো। প্রশাসনের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।”
আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী নয়ন আহমেদ বলেন, “গতকালের তুলনায় আজকের আয়োজন অনেক ভালো। কাল সব এলোমেলো ছিল। কিন্তু আজকের আয়োজন গোছালো হয়েছে। এত মানুষের সঙ্গে আগে কখনো ইফতার করিনি। অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করছে। মনে হচ্ছে এখানে মেলা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর আয়োজন করার জন্য।”
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ইফতারে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন খান (প্রশাসন), উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দিন খান (শিক্ষা), রেজিস্ট্রার ইফতেখারুল আলম মাসউদ, জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার প্রমখ।
সার্বিক বিষয়ে জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, “আমরা আজ প্রায় সাড়ে ১১ হাজার থেকে ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ইফতার আয়োজন করেছি। যা গতকালের তুলনায় তিনগুণ। আমরা আশা করছি আজ সব ঠিকঠাক মতো হবে। এজন্য সবার সাহায্য প্রয়োজন, যাতে কোন উশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি না হয়।”
প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে মাসব্যাপী ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। রোজার প্রথমদিন রবিবার (২ মার্চ) ৪ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ইফতারের আয়োজন করা হয়। কিন্তু আয়োজনের তুলনায় অধিক রোজাদার উপস্থিত হওয়ায় ইফতারে সঙ্কট দেখা দিলে শিক্ষার্থীদের ভাগাভাগি করে নিতে দেখা গেছে।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী