শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) ব্যাপক রদবদল ঘটে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দুই সপ্তাহ পর বিসিবির নেতৃত্বে আসেন সাবেক ক্রিকেটার ফারুক আহমেদ। কিন্তু পাঁচ মাসেও স্ট্যান্ডিং কমিটি চূড়ান্ত না হওয়ায় বিরাজ করছিল অচলাবস্থা।

অবশেষে স্ট্যান্ডিং কমিটি ঘোষণা করেছে ক্রিকেট বোর্ড। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিসিবির ১৭তম বোর্ড মিটিংয়ে ২১টি কমিটির চেয়ারম্যানের নাম চূড়ান্ত করা হয়। তবে এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়নি। দুই সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটির নাম চূড়ান্ত করা হবে।

প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টার বোর্ড সভা শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন নতুন দায়িত্ব পাওয়া মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু। সঙ্গে ছিলেন গ্রাউন্ডস কমিটি ও এইচপির চেয়ারম্যান মাহবুব আনাম।

আরো পড়ুন:

দাবি নিয়ে এবার বিসিবিতে ক্রিকেটাররা, ফারুকের আশ্বাস

ক্লাবের আল্টিমেটাম: জরুরি বোর্ড মিটিং ডেকেছে বিসিবি 

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই ইফতেখার রহমান বলেন, “১০জন ছিলাম প্রেসিডেন্টসহ (নতুন বোর্ড গঠনের পর)। যে খালি ছিল, আপনারা নানা অনুষ্ঠানে বলছিলেন দেওয়া হচ্ছে না। আজ দেওয়া হয়েছে, চেয়ারম্যান শুধু। তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দুই সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার।”

স্ট্যান্ডিং কমিটি ঘোষণা নিয়ে চলছিল নানা আলোচনা-সমালোচনা। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিভাগে কাজ করছিলেন পাঁচ আগস্টের পর বোর্ডে আসা ফারুক আহমেদ ও নাজমুল আবেদীন ফাহিম। এবার ২৩টি কমিটির মধ্যে ২১টি ঘোষণা করা হয়েছে।

তার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ মার্কেটিংয়ের দায়িত্ব রেখেছেন নিজের কাছে। এছাড়া বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবেও কাজ করছেন তিনি। ফাহিমের দায়িত্বে আছে ক্রিকেট অপারেশন্স ও বিসিবির নারী বিভাগ।

কোন দায়িত্বে কে 
ক্রিকেট অপারেশন্স-নাজমুল আবেদীন ফাহিম, ফাইন্যান্স কমিটি-ফাহিম সিনহা, ডিসিপ্লিনারি কমিটি-সাইফুল আলম স্বপন, গেম ডেভলপম্যান্ট কমিটি-ফাহিম সিনহা, টুর্নামেন্ট কমিটি-আকরাম খান, এইজ গ্রুপ টুর্নামেন্ট কমিটি-সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরী, গ্রাউন্ডস কমিটি-মাহবুব আনাম, ফ্যাসিলিটি ম্যানেজম্যান্ট-আকরাম খান আম্পায়ারস কমিটি-ইফতেখার রহমান, মার্কেটিং-ফারুক আহমেদ, মেডিকেল-মনজুরুল আলম, টেন্ডার অ্যান্ড পারচেস কমিটি-মাহবুব আনাম, মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন-ইফতেখার রহমান, অডিট কমিটি-মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, ওমেন্স-নাজমুল আবেদীন ফাহিম, লজিস্টিক অ্যান্ড প্রটোকল-ফাহিম সিনহা, সিসিডিএম-সালাউদ্দিন চৌধুরী, ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড-আকরাম খান, এইচপি-মাহবুব আনাম, বাংলাদেশ টাইগার্স-কাজী এনাম ও ওয়েলফেয়ার কমিটি মনজুর আলম।

সিকিউরিটি কমিটি ও ওয়ার্কিং কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়নি। ১০ জন পরিচালকের মধ্যে ভাগ হয়েছে ২১টি কমিটি। প্রায় সবার কাঁধেই পড়েছে একাধিক কমিটির দায়িত্ব। ফারুক-ফাহিম ছাড়া বাকি ৮ পরিচালক পুরোনো দায়িত্বের পাশাপাশি পেয়েছেন নতুন দায়িত্ব। 

ঢাকা/রিয়াদ/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ র ক আহম দ কম ট র ট কম ট স কম ট

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ

বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।

সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।

জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।

জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।

এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।

আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।

বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।

বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।  পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ