রাজধানীর উত্তরায় ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশ- এ চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশে স্কুল পর্যায়ে বিজ্ঞান বিষয়ক সর্ববৃহৎ প্রতিযোগিতা ‘আন্তঃস্কুল স্টেম ফেস্ট ২০২৫’।

১৬০০ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে স্টেম ফেস্ট-এ ১৪০টি বিজ্ঞান বিষয়ক প্রজেক্ট প্রদর্শিত হয়েছে। বিজ্ঞান বিষয়ক এই প্রতিযোগিতায় এবারও রাজধানীর অর্ধশতাধিক স্কুলের তৃতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অংশগ্র নেন। প্রতিযোগিতার বাইরেও ছিল বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন উদ্ভাবনী প্রজেক্ট প্রদর্শনী।ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশ-এর হোপিয়ান ম্যাথ প্রোগ্রামিং অ্যান্ড রোবোটিক ক্লাব এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।

২৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় ‘চতুর্থ আন্তঃস্কুল স্টেম ফেস্ট ২০২৫’। প্রথম দুই দিনের আয়োজনে ছিল বিভিন্ন প্রতিযোগিতা এবং শেষ দিনের আয়োজনে ছিল প্রজেক্ট প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং পুরস্কার বিতরণী। ২৪ জানুয়ারি শুক্রবার সকাল ১০টায় ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে শুরু হয় এ প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিকতা। এতে অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন স্কুলের ২৬২ জন শিক্ষার্থী। এছাড়াও একই দিনে ছিল ৫০ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে প্রোগ্রামিং অলিম্পিয়াড এবং ২২১ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে বায়োকেমেস্ট্রি অলিম্পিয়াড। এসব অলিম্পিয়াডে তৃতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা আলাদা আলাদা ক্যাটাগরিতে অংশ নিয়েছেন।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সমাপনী দিনের আয়োজনে ছিল গণিত অলিম্পিয়াড, এতে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাশাপাশি তৃতীয় থেকে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন। সমাপনী দিনের আয়োজনে আরো ছিল প্রজেক্ট প্রদর্শনী, পুরস্কার বিতরণী এবং মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বিজ্ঞানবিষয়ক প্রতিযোগিতা, আলোচনা ও প্রদর্শনীর পাশাপাশি স্কুল মিলনায়তনে সমাপনী আয়োজনে ছিল মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় ছিল দলীয় নৃত্য ও সংগীত। এছাড়াও ছিল নাভিদ মাহবুবের স্ট্যান্ড আপ কমেডি এবং ম্যাজিক রাজিকের জাদু প্রদর্শনী।

স্কুল মাঠের প্রতিটি স্টলে ছিল নানা উদ্ভাবনী প্রজেক্ট, শিক্ষার্থীরা দর্শনার্থীদের প্রজেক্টগুলোর ব্যবহার ও সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেছে। এবারের উল্লেখযোগ্য প্রজেক্টগুলোর মধ্যে ছিল পদ্মা সেতুর স্কেল মডেল, মেট্রোরেল স্কেল মডেল, টেসলা কয়েল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পার্টিকেল এক্সেলারেটর, প্ল্যান্ট  মাইক্রোবায়াল ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন ইত্যাদি।

স্বাগত বক্তব্যে ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশ-এর প্রিন্সিপাল রোকসানা জারিন বলেন, “এ ধরনের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান এবং আধুনিক প্রযুক্তিতে তাদের দক্ষতা প্রমাণ করছে। গত কয়েক বছরে স্টেম ফেস্টে অংশগ্রহণকারীদের অনেকে আমেরিকায় নাসা রোভার চ্যালেঞ্জ নামে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা, দুবাইয়ের একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে, এটি আমাদের অনেক বড় পাওয়া। এবারও এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক সুনাম অর্জন করবে বলে আমরা আশাবাদী।”

বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিত- এই চারটি বিষয় নিয়েই মূল আয়োজন। এবারের চতুর্থ আন্তঃস্কুল স্টেম ফেস্ট-এ অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে পুরস্কৃত হয়েছে ২৮০ জন শিক্ষার্থী। প্রতিটি বিভাগে প্রথম স্থান, দ্বিতীয় স্থান এবং তৃতীয় স্থান অর্জনকারী শিক্ষার্থীরা পেয়েছে যথাক্রমে পাঁচ, তিন এবং দুই হাজার টাকা, এছাড়া মেডেল ও সার্টিফিকেট। প্রতিটি বিভাগে চতুর্থ থেকে দশম স্থান অর্জনকারী শিক্ষার্থীরা পেয়েছে মেডেল ও সার্টিফিকেট।

প্রতিযোগিতায় সেরা তিরিশ জন শিক্ষার্থী কিছু দিনের মধ্যে আমেরিকায় গিয়ে ‘নাসা রোভার চ্যালেঞ্জ’ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। নাসা রোভার চ্যালেঞ্জে এবার শিক্ষার্থীরা ‘রিমোট কন্ট্রোল রোভার’ এবং ‘হিউম্যান পাওয়ার রোভার’ শীর্ষক প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে।

রাজধানীর উত্তরায় ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৬ সালে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই স্কুলটি পড়াশোনা, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার পাশাপাশি বিজ্ঞানচর্চায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

ঢাকা/হাসান/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব জ ঞ ন ব ষয়ক জন শ ক ষ র থ

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানে ভূমিকা রেখেছেন ক্যালিওগ্রাফি শিল্পীরাও

জুলাই অভ্যুত্থানে গ্রাফিত আঁকতে ক্যালিওগ্রাফি শিল্পীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। সুস্থধারার সংস্কৃতি চর্চায় ক্যালিওগ্রাফি শিল্পের আরো প্রসার প্রয়োজন। এ জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ক্যালিওগ্রাফি চর্চা বাড়াতে হবে। শনিবার সাফা ক্যালিগ্রাফি ইনিস্টিউট অব বাংলাদেশের ধানমণ্ডি ব্রাঞ্চের উদ্যোগে আয়োজিত ক্যালিগ্রাফি আর্ট প্রতিযোগিতা ২০২৫-এর পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তরা।

তৃতীয়বারের মতো সাফা ক্যালিগ্রাফি ইনিস্টিউট অব বাংলাদেশের ধানমণ্ডি ব্রাঞ্চের উদ্যোগে শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় ক্যালিগ্রাফি আর্ট প্রতিযোগিতা-২০২৫।

প্রতিযোগিতায় তিন ক্যাটাগরি থেকে সর্বমোট নয়জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। জুনিয়র ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন ফাতেমা কানিজ সজিদা। দ্বিতীয় স্থান স্থান অর্জন করেন মেহজাবিন রহমান ও তৃতীয় স্থান স্থান অর্জন করেন সুমাইয়া সারওয়াত। সিনিয়র ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান স্থান অর্জন করেন নওশীন জাহরা সুবহা। দ্বিতীয় স্থান স্থান অর্জন করেন মো. নজরুল ইসলাম ও তৃতীয় স্থান স্থান অর্জন করেন মনতাজার হাসান। প্রফেশনাল ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান স্থান অর্জন করেন মুনিরা মুমতাহিনা, দ্বিতীয় স্থান স্থান অর্জন করেন তাসরিন সুলতানা আনিকা ও তৃতীয় স্থান স্থান অর্জন করেন ইফতেখারুল আলম ত্ব-য়াহা।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশের বরেণ্য চিত্রশিল্পী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যকলা অনুষদের সাবেক চেয়ারম্যান ড.আব্দুস সাত্তার।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চারু শিল্পী পরিষদের সম্মানিত সভাপতি কার্টুনিস্ট ইবরাহীম মণ্ডল, জাতীয় হ্যান্ড রাইটিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি খুরশিদ আলম ভুঁইয়া, মেজর মানজুরুল কবীর চৌধুরী, ঢাকা আহসানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজমের সম্মানিত পরিচালক ও অধ্যাপক শাইখ মুহাম্মাদ উছমান গনী প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আবরার ফাহাদের স্বাধীনতা পদকের ক্যাটাগরি হওয়া উচিত মুক্তিযুদ্ধ: উপদেষ্টা ফারুকী
  • মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন আবরার ফাহাদ
  • বিএসইসির নেতৃত্বের ওপর আস্থা নেই বেশির ভাগ বিনিয়োগকারীর
  • মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক ২০২৫ পাচ্ছেন আবরার ফাহাদ
  • মরণোত্তর স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হচ্ছেন আবরার ফাহাদ
  • কারিতাসে নিয়োগ, ২৩ বছর হলেই আবেদন
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (৩ মার্চ ২০২৫)
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (২ মার্চ ২০২৫)
  • ট্রিপ অ্যাডভাইজারের দৃষ্টিতে, ২০২৫ সালে বিশ্বের সেরা যে ১০ সমুদ্রসৈকত
  • জুলাই অভ্যুত্থানে ভূমিকা রেখেছেন ক্যালিওগ্রাফি শিল্পীরাও