তিন সাঁওতাল হত্যা: সাবেক এমপিসহ আসামিদের গ্রেপ্তার দাবিতে সমাবেশ
Published: 25th, January 2025 GMT
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল পল্লীতে সশস্ত্র হামলা, নিপীড়ন, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যার মামলার আসামি সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদসহ আসামিদের গ্রেপ্তার ও সম্প্রতি ব্রিটিশ সরেনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগকারী ভূমিদস্যুদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী সাঁওতাল পল্লীর বাসিন্দারা।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ গাইবান্ধা শাখার আয়োজনে শহরের ডিবি রোডের আসাদুজ্জামান স্কুলের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এ সব দাবি জানান।
২০১৬ সালের ৬ নভেম্বরের সেই নৃশংস ঘটনার উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ‘‘১০ বছরেও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার হয়নি। বারবার বিচারের প্রতিশ্রুতি দিলেও এর বাস্তব প্রয়োগ হয়নি। নির্যাতনের শিকার সাঁওতালরা বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। উপরন্ত নতুন করে সাঁওতালদের বাড়িতে আক্রমণ করছে ভূমিদস্যুরা। সেদিনের আহতরা উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে কেউ পঙ্গু, কেউ শরীরে গুলির স্প্রিন্টার নিয়ে অসহ্য যন্ত্রণায় কর্মক্ষমতা হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।’’
আরো পড়ুন:
তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ড আবরারের ঘটনাকেও হার মানায়
সন্ত্রাসীদের গুলিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিহত
বক্তারা বলেন, ‘‘শ্যামল, মঙ্গল ও রমেশ হত্যাকাণ্ডের পর থমাস হেমব্রম বাদী হয়ে তৎকালীন সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদসহ ৩৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন কিন্ত বিচার হওয়া তো দূরের কথা, আবুল কালাম আজাদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বুলবুল আকন্দসহ মূল আসামিদের কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। এছাড়া সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ইক্ষু খামারের সাঁওতালদের বসবাসকৃত ১ হাজার ৮৪২ একর পৈত্রিক সম্পত্তি ফেরত দেওয়ার ব্যাপারেও অগ্রগতি হয়নি।’’
বক্তারা আরো বলেন, ‘‘সম্প্রতি রাজাহার ইউনিয়নের রাজাবিরাট এলাকায় সাঁওতাল পল্লীর ব্রিটিশ সরেনের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে ভূমিদস্যু রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে দুর্বৃত্তরা। তারা ব্রিটিশ সরেনের বৃদ্ধ মাকে মারপিট করে গুরুতর আহত করেন। এ ঘটনায় রফিকুল চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার হলেও অন্যান্য দুর্বৃত্তরা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি।’’ অবিলম্বে দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান বক্তারা।
আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বাবুর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, সাহেবগঞ্জ- বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে, পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ওয়াজিউর রহমান রাফেল, আইনজীবী মোহাম্মদ আলী প্রামাণিক, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের সদর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, আইনজীবী কুশলাশীষ চক্রবর্ত্তী সাগর, মানবাধিকার কর্মী মনির হোসেন সুইট, মোর্শেদ হাবীব দীপন, আদিবাসী নেতা ব্রিটিশ সরেন প্রমুখ।
সমাবেশ পরিচালনা করেন আইনজীবী ফারুক কবীর ও সাঁওতাল নেত্রী সুচিত্রা মুরমু তৃষ্ণা। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে তীর-ধনুক বাদ্যযন্ত্রসহ বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ফেস্টুন নিয়ে সাঁওতাল নারী-পুরুষেরা অংশ নেন।
ঢাকা/লুমেন/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পেছালো খালেদা জিয়ার নাইকো মামলার সাক্ষ্য
নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আট জনের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পিছিয়ে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের তৎকালীন উপপরিচালক সাহেদুর রহমানের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ছিলো। তবে তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। এজন্য আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী এ তারিখ ঠিক করেন।
এদিন মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। তার পক্ষে আইনজীবী হাজিরা দাখিল করেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া জানান, মামলায় ৬৮ সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের সাক্ষ্য হয়েছে।
২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলা তদন্তের পর ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। গত বছর ১৯ মার্চ একই আদালত খালেদা জিয়াসহ ৮ আসামির অব্যাহতির আদালত নাকচ করে চার্জ গঠনের আদেশ দেন।
অপর আসামিরা হলেন- তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী,বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম। এদের মধ্য প্রথম তিন জন পলাতক রয়েছেন।
ঢাকা/মামুন/ইভা