বরিশালে টরকী-সাউদের খাল পুনঃখননের উদ্যোগ
Published: 25th, January 2025 GMT
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার টরকী বন্দরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত জনগুরুত্বপূর্ণ টরকী-সাউদের খাল পুনঃখননের উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন ও ব্যবসায়ীরা। সেই লক্ষ্যে শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে দখল হওয়া খাল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রাজিব হোসেনসহ অন্যরা।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, আড়িয়াল খার নদীর শাখা পালরদী নদীর টরকী মোহনা থেকে উত্তরে বহমান প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ টরকী-সাউদের খাল বার্থী ও খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষকের পানি সেচের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রভাবশালী মহল খালের মোহনা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা দখল করে সেটি নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। খালের দখল ধরে রাখতে মসজিদের এক অংশ খালের মধ্যে নির্মাণ করেছে একটি মহল। যে কারণে বোরো মৌসুমে পানির জন্য কৃষকেরা ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে।
টরকী বন্দরের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, এক সময় খালটি দিয়ে নৌকায় কম খরচে পণ্য পরিবহন করতেন ব্যবসায়ীরা। কিছু দখলদাররা এমনভাবে দখল করেছেন, কোনো কোনো স্থানে খালের চিহ্ন পর্যন্ত নেই। খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় টরকী বন্দরের বর্জ্য বের হতে পারছে না। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে বন্দরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
‘খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বিদেশ গেছেন, আর হাসিনা পালিয়ে’
‘লন্ডন ক্লিনিকে’ ভর্তি খালেদা জিয়া
টরকী বন্দর বণিক সমিতির সভাপতি শরীফ সাহাবুব হাসান বলেন, খালটি দখলমুক্ত করার জন্য উপজেলা প্রশাসন যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে বন্দর ব্যবসায়ীদের সমর্থন রয়েছে। বন্দরের স্বার্থে খালটি খনন করা জরুরি। খাল খননে ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা চালিয়ে যাবে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিব হোসেন বলেন, ব্যবসায়ী ও কৃষকদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে খালটি পূনঃখননের জন্য শনিবার দুপুরে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। দুই দিনের মধ্যে অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) থেকে খাল পূনঃখনন শুরু হবে বলে জানান তিনি।
ঢাকা/পলাশ/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ন খনন ব যবস য র জন য উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার পথরেখা
আন্দোলনের রাজনীতি থেকে দল গঠন
১৯৯১ সালে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পরে ২০০৯ সাল পর্যন্ত অবাধ, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ দুবার এবং বিএনপি দুবার সরকার গঠন করে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ দুই দল তাদের ক্ষমতার মেয়াদে গণতান্ত্রিক চর্চার উন্নয়নে লক্ষণীয়ভাবে কোনো কাজ করেনি;বরং তারা নিজেদের ক্ষমতাকে সংহত করা এবং বিজয়ীর জন্যই সব—এই রাজনৈতিক সংস্কৃতি চিরস্থায়ী করার জন্য ব্যস্ত ছিল।
বিএনপির কর্মীদের অনেকে দখলদারি ও চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছেন। যার ফলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে পুরোনো অভ্যাসের মৃত্যু সহজে হয় না। এ ধরনের অভিযোগে অনেককে বহিষ্কার করা সত্ত্বেও এর দৌরাত্ম্য কমানো যায়নি।দ্বিদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে জুলাই গণ–অভু৵ত্থানের পরে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে বিএনপি দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপির সরকার গঠন করার মতো সম্ভাবনাও অনেকে দেখছেন। সাধারণভাবে জনগণের মনোযোগ এদিকে নিবদ্ধ যে তারা উন্নততর গণতন্ত্রের চর্চাকারী হিসেবে ফিরে আসবে কি না। গণ–অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র, সরকার ও গণতন্ত্রচর্চা নিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের অনেক বক্তব্য মানুষের মধ্যে সমাদৃত হয়েছিল। মাঠপর্যায়ে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতির ফলে ক্ষমতার যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, সে জায়গা দখল করেছেন বিএনপির কর্মীরা। এই শূন্যতার সুযোগ নিয়ে বিএনপির কর্মীদের অনেকে দখলদারি ও চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছেন। যার ফলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে পুরোনো অভ্যাসের মৃত্যু সহজে হয় না। এ ধরনের অভিযোগে অনেককে বহিষ্কার করা সত্ত্বেও এর দৌরাত্ম্য কমানো যায়নি। স্থানীয় পর্যায়ের মানুষদের মধ্যে এ নিয়ে অসন্তোষ আছে। সাধারণ মানুষের এই অসন্তোষ বিএনপিকে আমলে নিতে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস যে সংস্কারপ্রক্রিয়া শুরু করেছেন, ছাত্ররা সেটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে আরও সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে এই সংস্কারপ্রক্রিয়াকে তাঁরা এগিয়ে নিতে চান। এ লক্ষ্যে ছাত্রদের একটি অংশ জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যেসব শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, তারা একটি নিজস্ব রাজনৈতিক ধারণা সামনে এনেছে। সেখানে তরুণ প্রজন্ম নিজেদের অবস্থান দৃঢ়ভাবে তুলে ধরতে শুরু করেছে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নিজেদের অগ্রণী ভূমিকার জন্য ছাত্ররা শ্রদ্ধা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছেন, বিশেষ করে তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে। পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা যাতে স্থায়ীভাবে গেড়ে বসতে না পারে, সে জন্য তাঁরা যৌক্তিকভাবেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। একটি নতুন, আরও ন্যায্য ও সমতাভিত্তিক শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলা নিশ্চিত করতে তাঁরা সত্যিকারের সংস্কার বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনে মানুষের আনন্দ–উল্লাস। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বিকেলে সংসদ ভবন এলাকায়