দাঁত ঠিক করাতে গিয়ে জানা গেল ডাক্তারের লাইসেন্সই ঠিক নেই
Published: 25th, January 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিডিএসের লাইসেন্স নবায়ন ছাড়াই গত কয়েক বছর ধরে দাঁতের চিকিৎসা দিচ্ছেন এস.এম শাখাওয়াত আলী নামে এক চিকিৎসক বলে অভিযোগ উঠেছে। ২০২০ সালের ৩০ আগস্ট তার বিডিএস ল্যাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়। এরপর চার বছর পাঁচ মাস হয়ে গেলেও তিনি লাইসেন্স নবায়ন করেননি।
অভিযুক্ত ডা. এস.এম শাখাওয়াত আলীর চেম্বার চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার পিটিআই-বালুবাগান মহল্লার কাছে। তার চেম্বারের নাম শাখাওয়াত ডেন্টাল কেয়ার। তিনি এখানে দাঁতের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করেন। বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের লাইসেন্স নম্বর-৬৪৩০।
সম্প্রতি ডা.
আরো পড়ুন:
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হামলায় পাবনায় ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আহত
মাদারীপুরে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যকে গণপিটুনি
ভুক্তভোগী রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, গত এক বছর ধরে শাখাওয়াত ডেন্টাল কেয়ারে দাঁতের চিকিৎসা নিয়েছেন সুরাইয়া জাহান। কোনো ধরনের চিকিৎসাপত্র ও এক্স-রে ছাড়াই দাঁত সোজা করছিলেন ডা. এস.এম শাখাওয়াত। তার ভুল চিকিৎসার কারণে সুরাইয়া জাহানের সমস্যা ভালো হওয়াতো দূরের কথা উল্টো তার দাঁতের চোয়ালে জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে তারা ওই ক্লিনিকে গিয়ে অবস্থান নেন।
ঘটনার দিন রাতেই ডা. এস.এম শাখাওয়াতের পক্ষের লোকজন বিষয়টি নিয়ে মীমাংসার প্রস্তাব দেন। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা শুরুতে রাজি না হলেও পরে রাজি হন। পরদিন বুধবার দুই পক্ষের মীমাংসায় বসার কথা থাকলেও কোনো বৈঠক হয়নি। ভুক্তভোগী সুরাইয়া জাহান এখন অন্য ক্লিনিকে দাঁতের চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ভুক্তভোগীর দেবর ওমর খৈয়াম শিমুল বলেন, “আমাদের মীমাংসার জন্য বলা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা বসেননি। গত এক বছর ডা. এস এম শাখাওয়াতের কাছে চিকিৎসা নিয়ে নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি বেশি।”
ভুক্তভোগী সুরাইয়া জাহান বলেন, “আমার সামনের দিকের দুটো দাঁতের মাঝে ফাঁকা অংশ ছিল। সেটি ঠিক করাতে আমি ডা. এস.এম শাখাওয়া আলীর চেম্বারে গিয়ে চিকিৎসা নেই। ভালো হওয়ার বদলে আমার ক্ষতি হয়ে গেছে।”
অভিযুক্ত এস.এম শাখাওয়াত আলী বলেন, “যথাযথ নিয়মেই ওই রোগিকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। ওই রোগী এক বছর ধরে আমার কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। রোগীর কাছে কিছু টাকা পাওয়া যেত, সেটা টাকা চাওয়ার পর থেকেই সমস্যা শুরু হয়েছে। পরে তাদের লোকজন এসে আমার চেম্বারে ভিড় করেন।”
বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের নিয়ম অনুযায়ী লাইসেন্স নবায়ন ছাড়া চিকিৎসা প্রদান করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এস এম শাখাওয়াত আলী কোনো সদুত্তর দেননি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. কামাল হোসেন বলেন, “বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের নিয়ম অনুযায়ী বিডিএস ডিগ্রি এবং নবায়ন করা লাইসেন্স ছাড়া কেউ দাঁতের রোগীদের চিকিৎসা দিতে পারবেন না। লাইসেন্স নবায়ন না করে চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ নেই, এটা অবৈধ। সরকারি নিয়মনীতির মধ্যে থেকেই চিকিসকদের সেবা দিতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “এস এম শাখাওয়াত আলী যদি সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/মেহেদী/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ইনব বগঞ জ ব ড এস ক বছর
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্ঘটনায় আহত অভিনেত্রী খুশি, চোখের ওপর পড়েছে ১০ সেলাই
দুর্ঘটনার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন ছোটপর্দার অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি। বুধবার সকালে রমনা পার্ক থেকে বাড়ি ফেরার সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় তিনি আহত হন। অভিনেত্রীর ছেলে সৌম্য জ্যোতি সমকালকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বুধবার সকালে আম্মু রমনা পার্কে হাটতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাসায় ফেরার সময় গলির মধ্যে একটি অটোরিকশা তাকে ধাক্কা দিলে আম্মু ছিটকে পড়ে যায় এবং তার ঠিক চোখের ওপর জখম হয়। পরে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সিটি স্ক্যানসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন তিনি আপাতত ভালো আছেন।’
এদিকে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুর্ঘটনার বিষয়টি জানান শাহনাজ খুশি। সেখানে তিনি বলেন, ‘বেশি না, মাত্র ১০টা সেলাই পড়েছে। এ আর এমন কি বলেন? চোখটা অন্ধ হয় নাই, হয় নাই ব্রেইন হ্যামারেজের মত শেষ অবস্থা! সেটাই তো অনেক বেশি পাওয়া! এ তেমন কিছু না, চোখের উপরের সেনসেটিভ জায়গায় মাত্র ১০ টা সেলাই লেগেছে! আমি যে প্রাণে বেঁচে আছি এ জন্য মহান সৃষ্টিকর্তা কাছে শুকরিয়া আদায় করছি!’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘কিচ্ছু চাই না আমি, শুধু যে মায়েরা/বাবারা ছোট্ট বাচ্চাটার হাত ধরে রাস্তা পার হয়ে স্কুলে আসেন অথবা নানান প্রয়োজনে রাস্তায় যান, তাদের সতর্ক করতে পোস্টটা দিলাম। আমি হয়ত ভেঙেচুরে বেঁচে গেছি। কোন বাচ্চা এ আঘাত নিতে পারবে না! ব্যাটারি চালিত অসভ্য/বর্বর যানবাহনটি এবং তার অসভ্য চালক থেকে সর্বদা সতর্ক থাকবেন। যদিও আমি গলির ভেতরের রাস্তায়, প্রাতঃ ভ্রমণ শেষে অতি সর্তকতার সাথেই একেবারে কিনার দিয়ে হেঁটে ফিরছিলাম! ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে বীরদর্পে চলে গেছে! ওরা মেধাবী যান চালক, কারো জীবনের ক্ষতির তোয়াক্কা করে না! আপনার এবং আপনার সন্তানের দায়িত্ব একান্তই আপনার। আজ চারদিন পরও মাথার অর্ধেকে কোন বোধশক্তি নাই!
সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘জানি না স্বাভাবিক চেহারায় ফিরবো কিনা, সেটা যদিও ফিরি রক্তাক্ত সেই পথে পড়ে থাকা সকালের ট্রমা অনেককাল ভুলবো না! কাতর অবস্থায় বিছানায় পরে থেকে বারবার একটা প্রশ্ন মনে আসছে, এই যে যত্রতত্র কুপিয়ে জখম, ট্রেন-বাস, রিকশা কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে দিনেরাতে ছিনতাই। কার কাছে চাইব আমাদের সন্তানদের নিরাপদ পথচলা।’