উপন্যাসটি পড়ে পাঠকেরা চমকে উঠবেন: স্বকৃত নোমান
Published: 25th, January 2025 GMT
কীর্তিমান কথাসাহিত্যিক স্বকৃত নোমান। উপন্যাস ও গল্প তার সাহিত্য-সাধনার ক্ষেত্র। পাশাপাশি লেখেন নানা বিষয়ে মুক্তগদ্য। এইচএসবিসি-কালি ও কলম পুরস্কার, ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল হুমায়ূন আহমেদ তরুণ সাহিত্যিক পুরস্কার, এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার, আইএফআইসি ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার এবং বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত রাবেয়া খাতুন কথাসাহিত্য পুরস্কারসহ ভূষিত হয়েছেন নানা পুরস্কার ও সম্মাননায়। ২০২৫ বইমেলায় বাংলাদেশের অন্যপ্রকাশ এবং কলকাতার অভিযান পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত হচ্ছে স্বকৃত নোমানের উপন্যাস ‘আচার্য ও তার অলীক পাণ্ডুলিপি।’ উপন্যাসটি নিয়ে ইতোমধ্যে দুই বাংলার পাঠকমহলে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। উপন্যাসটির নানা দিক নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন স্বরলিপি।
রাইজিংবিডি : ‘আচার্য ও তাঁর অলীক পাণ্ডুলিপি’ উপন্যাসের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি।
স্বকৃত নোমান : মীর আসরার জামান নামক একজন প্রখ্যাত লেখক, তার স্ত্রী এবং লেখকের একান্ত সচিব এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র। মীর আসরার জামানকে সবাই চেনে। তিনি ছিলেন সুরম্যনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। তার উপাধি ছিল আচার্য। তার ছিল এক আশ্চর্য সম্মোহনী ক্ষমতা। নিজের প্রতি যে কাউকে আকৃষ্ট করতে পারতেন সহজেই। সামনে এলে পরম শ্রদ্ধায় মাথা নোয়াত তার ছাত্রছাত্রী ও ভক্ত-শিষ্যরা। তিনি যখন হাঁটতেন, পেছনে হাঁটত তারা। যখন কথা বলতেন, তন্ময় হয়ে শুনত তারা। যেন বর্তমানের কোনো মানুষ নন, কথা বলছেন প্রাচীন ভারতের কোনো ঋষি। এবং নারীরা তার ব্যক্তিত্বের প্রেমে পড়ে যেত সহজেই। অথচ স্ত্রী রাফিদা জাহানের কাছে তিনি ছিলেন এক নিকৃষ্ট চরিত্রের মানুষ। সোফিয়া যেমন উৎপীড়ন করতেন তলস্তয়কে, তেমনি মীর আসরার জামানকে করতেন রাফিদা। কিন্তু আচার্যের ছিল বিস্ময়কর সহ্যক্ষমতা। স্ত্রীর উৎপীড়ন তিনি হাসিমুখে এড়িয়ে যেতেন। একদিন, তিনি যখন রবীন্দ্রনাথের সুরে মগ্ন, কম্পিউটারে যখন বাজছিল, ‘এই তো তোমার প্রেম ওগো হৃদয়হরণ.
অনন্ত আতিক নামের এক তরুণ লেখক ছিল আচার্যের একান্ত সচিব। আচার্যের প্রয়াণের পর আতিকের বিরুদ্ধে রাফিদা জাহান তোলেন আচার্যের অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি এবং বিস্তর লেখা চুরির গুরুতর অভিযোগ। সেই অভিযোগ নির্বিচারে বিশ্বাস করে অনন্তের নিন্দা করতে থাকে সবাই। চুরি করার মতো অপ্রকাশিত কোনো পাণ্ডুলিপি কি রেখে গিয়েছিলেন আচার্য? নাকি এই অভিযোগ অনন্তের প্রতি রাফিদা জাহানের কোনো অসূয়ার বহিঃপ্রকাশ? এসব প্রশ্নের শৈল্পিক উত্তর পাওয়া যাবে উপন্যাসটিতে।
মূলত আচার্য মীর আসরার জামানের জীবন, জীবনবোধ ও শিল্পচেতনা, জীবনের আনন্দ ও বিষাদ, প্রেম ও অপ্রেম, শোক ও বিলাপ, দাম্পত্য ও দাম্পত্য-সংকটের প্রেক্ষাপটে রচিত উপন্যাস 'আচার্য ও তাঁর অলীক পাণ্ডুলিপি'। এই উপন্যাসের ভূমিকা লিখেছেন উপন্যাসটি রচনার আঠারো বছর আগে প্রয়াত মীর আসরার জামান।
রাইজিংবিডি : মৃত মানুষ কী করে উপন্যাসের ভূমিকা লিখলেন!
স্বকৃত নোমান : আচার্যের যে পান্ডুলিপির কোনো অস্তিত্বই নেই, তা যদি তার একান্ত সচিব অনন্ত আতিক চুরি করতে পারে, তাহলে প্রয়াত আচার্যও জীবিত লেখকের বইয়ের ভূমিকা লিখতে পারেন। বাস্তবে যা ঘটেনি, তা যদি মানুষ সত্য হিসেবে মনে করতে পারে, তাহলে মৃত মানুষ লিখতে পারে, এটাও সত্য। তাছাড়া উপন্যাসের সবই সম্ভব। উপন্যাস তো বাস্তবতার প্রতিবেদন নয়, কাল্পনিক সৃষ্টি। কল্পনায় কী না সম্ভব?
রাইজিংবিডি : উপন্যাসটির ভূমিকায় মীর আসরার জামান কী লিখেছেন?
স্বকৃত নোমান : অনেক কিছুই লিখেছেন। বিস্তারিত উপন্যাসে পাওয়া যাবে। এখানে তার চম্বুকাংশ বলা যেতে পারে। তিনি লিখেছেন, 'আচার্য ও তাঁর অলীক পাণ্ডুলিপি নামক এই উপন্যাস যে পাঠ করবে তার বুদ্ধির মুক্তি ঘটবে। অভূতপূর্ব আঙ্গিকে রচিত এই কথাশিল্প যে পাঠ করবে তার দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পাবে, তার চিন্তাশক্তি প্রখর হবে এবং সে হীনম্মন্যতা, পরশ্রীকাতরতা ও আত্মসর্বস্বতা থেকে মুক্তি পাবে। সুললিত ভাষার এই কথাকাব্য যে শ্রবণ করবে তার শ্রবণশক্তি বৃদ্ধি পাবে। সাত মাস একুশ দিবস-রজনী ধরে রচিত এই আখ্যান যে পাঠ করবে তার আত্মপরিচয়ের সংকট বিদূরিত হবে। এই সাহিত্যকর্ম যে পাঠ করবে সে আস্বাদন করতে পারবে সাহিত্যের প্রকৃত আস্বাদ।'
রাইজিংবিডি : অভিনব ভূমিকা।
স্বকৃত নোমান : সম্ভবত অভিনব। উপন্যাসটি পড়ে পাঠকেরা একটু চমকে উঠবেন।
রাজিংবিডি : চমকানোর কারণ বিষয়, ভাষা, আঙ্গিক, না অন্য কিছু?
স্বকৃত নোমান : প্রধানত বিষয়ের কারণে। পাঠকেরা বিভক্ত হবেন তিন দলে। একদল আমার মুণ্ডপাত করবেন, দ্বিতীয় দল প্রশংসা করবেন এবং তৃতীয় দল নীরব থাকবেন। কতিপয় অসাহিত্যিক ও বেরসিক লোক আমার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করবেন, কিন্তু কোনো আইন খুঁজে পাবেন না। পাঠকদের একদল উপন্যাসের গূঢ়ার্থ বুঝতে পারবেন। বিস্ময়ে বলবেন, আরে! এ তো বাস্তব! মীর আসরার জামান, অনন্ত আতিক, রাফিদা জাহান কিংবা ফতেহ উদ্দিন রাশাকে তো আমরা চিনি। আমরা তো চিনি বকুল রাশা এবং মাসুদ হাসান আরজুকেও। ‘মৎস্যগন্ধা’ আখ্যানে তো পড়েছি জায়মনের কথা, যে কিনা নিশিরাতে নিরালা বিলে শিকারে ধ্যানমগ্ন অবস্থায় দেখতে পায় পূর্বপুরুষদের, যারা গন্ধবোয়াল শিকারের আশায় কোশা ভাসিয়ে রেখেছে বিজলি গাঙের বুকে। এই উপন্যাস একদল পাঠকের অবোধ্য থেকে যাবে। তারা পাঠানন্দ লাভ করবেন বটে, কিন্তু আখ্যানের নিগূঢ় বার্তা তাদের কাছে থেকে যাবে অধরা। তারা বলবেন, এ কী করে সম্ভব! কীভাবে অগণন নক্ষত্রের সম্মিলনে সৃষ্ট ছায়াপথের কুণ্ডলকেন্দ্র থেকে নিঃসীম শূন্যতায় বেরিয়ে আসে আচার্য মীর আসরার জামানের মুখ! অপরদিকে, আরেকদল পাঠক পাবেন প্রকৃত শিল্পস্বাদ। তারা বলবেন, এমন উপন্যাস সাম্প্রতিকালে বেশি লেখা হয়নি।
রাইজিংবিডি: উপন্যাসটি লিখতে উদ্যোগী হলেন কেন? কীসে আপনাকে এটি লিখতে অনুপ্রাণিত করেছিল?
স্বকৃত নোমান : গত বছর একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলাম। কতিপয় সাহিত্যজ্ঞানহীন ও হীনম্মন্য মানুষের কর্মকাণ্ড দেখে খুব মন খারাপ হয়েছিল। তখনই উপন্যাসটির আইডিয়া মাথায় আসে। মনে হলো, এই বিষয়কে ভিত্তি করে একটা উপন্যাস লেখা সম্ভব। এপ্রিলের শুরুর দিকে লিখতে আরম্ভ করলাম।
রাইজিংবিডি : কতদিন লেগেছে লেখা শেষ করতে?
স্বকৃত নোমান : প্রায় আট মাস। জুলাই-আগস্টে যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছিল তখন তো মোবাইলে নেট, ইন্টারনেট ছিল না, বাসার টিভিতে ডিশলাইনও সক্রিয় ছিল না। ফলে আমি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলাম। সম্পূর্ণ যোগাযোগহীন। সেই সময়টা উপন্যাসটি ভালো এগিয়েছে। এর গভীরে ডুব দিতে পেরেছিলাম। তখন লেখা অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল।
রাইজিংবিডি : আপনি সাধারণত কোন সময়টাতে লেখেন?
স্বকৃত নোমান : অফিস থেকে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে বাসায় ফিরে একটু বিশ্রাম নিয়ে হাঁটতে বেরিয়ে যাই। ঘণ্টাখানেক হাঁটাহাঁটি শেষে সাতটার মধ্যে বাসায় ফিরে লিখতে বসে যাই। লেখা চলে রাত বারোটা, কখনো কখনো একটা পর্যন্ত। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকে বলে এ দুদিন আমি লেখা কিংবা পড়া নিয়েই থাকি।
রাইজিংবিডি: উপন্যাসটি একইসঙ্গে বাংলাদেশ ও কলকাতা থেকে প্রকাশ হচ্ছে। আলাদা আলাদা প্রকাশনী প্রকাশ করছে। আগে কোন প্রকাশনীকে পাণ্ডুলিপি দিয়েছেন, কী শর্তে দিয়েছেন?
স্বকৃত নোমান: উপন্যাসটি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের খ্যাতনামা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অন্যপ্রকাশ। একই সঙ্গে উপন্যাসটির কলকাতা সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে অভিযান পাবলিশার্স থেকে। অন্যপ্রকাশ ইতোপূর্বে আমার ‘মায়ামুকুট’ উপন্যাস, গল্পের বই ‘সেরা দশ গল্প’ এবং মুক্তগদ্যের বই ‘যুবতী রাধে, সৈয়দ হক ও আরো কথা’ প্রকাশ করেছে। অনেক দিন ধরেই প্রকাশক শ্রদ্ধেয় মাজহারুল ইসলাম উপন্যাসের একটা পাণ্ডুলিপি চাচ্ছিলেন। এবার অন্যপ্রকাশকে দেব বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলাম, তাই দিলাম। আর কলকাতার অভিযানও ইতোপূর্বে আমার ‘কালকেউটের সুখ’, ‘হীরকডানা’, ‘উজানবাঁশি’―এ তিনটি উপন্যাস প্রকাশ করেছে। বন্ধুবর প্রকাশক মারুফ হোসেনকে প্রস্তাব দিলাম এটাও প্রকাশ করার বিষয়ে। তিনি রাজি হলেন। আর বিশেষ কোনো শর্ত নেই।
রাইজিংবিডি: অভিযান থেকে প্রকাশিত বইটি কি বাংলাদেশেও পাওয়া যাবে?
স্বকৃত নোমান: না, ওটা কেবল ভারতের বাংলাভাষী পাঠকদের জন্য। বাংলাদেশে আসবে না। এখন তো বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক সম্পূর্ণ বৈরি। আসার কোনো সুযোগও নেই। অন্যপ্রকাশ সবসময় আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় অংশ নিয়ে থাকে। এবার বাংলাদেশের কোনো প্রকাশকের অংশগ্রহণ নেই। তাই অন্যপ্রকাশের বইটিও ওই মেলায় যাওয়ার সুযোগ নেই।
রাইজিংবিডি: লেখা এবং পাঠ―এ দুটি কাজ কীভাবে সমন্বয় করেন?
স্বকৃত নোমান: যখন লিখতে ইচ্ছে করে না, তখন বই নিয়ে বসে পড়ি। তখন কেবল পড়ি আর পড়ি। পড়তে পড়তে হঠাৎ লিখতে ইচ্ছে হয়। তখন আবার লিখতে শুরু করি। মাঝেমধ্যে অফিসে কাজের ফাঁকে সুযোগ পেলেই পড়ি।
রাইজিংবিডি: উপন্যাস লেখার সময়টাতে সাধারণত কোন ধরনের বইগুলো পড়ে থাকেন?
স্বকৃত নোমান: বিশেষত দেশি-বিদেশি মৌলিক সাহিত্যকর্ম পড়ি। গল্প, উপন্যাস বা কবিতা। সাহিত্যতত্ত্বের বই কিংবা একাডেমিক কোনো প্রবন্ধের বই পড়ি না। কারণ ওগুলোতে সাধারণত সৃজনশীলতা থাকে না, থাকে তত্ত্ব ও তথ্য, যা আমার কাজে লাগে না। উল্টো বরং আমার লেখার গতি নষ্ট হয়। মাঝেমধ্যে ক্লাসিক বইগুলো উল্টেপাল্টে দেখি, কোনো একটা পৃষ্ঠা পড়ে আবার রেখে দিই। এতে লেখার প্রতি অনুপ্রেরণা জাগে।
রাইজিংবিডি : লেখকের বই প্রচার কৌশল কেমন হওয়া উচিত?
স্বকৃত নোমান: এ বিষয়ে অভিযানের প্রকাশক বন্ধু মারুফ হোসেন আজ ফেসবুকে একটা চমৎকার পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বই নিয়ে হাজারবার প্রচার করুন। চুরি ডাকাতি খুন ধর্ষণ চিটিংবাজি ধর্মবিদ্বেষী বর্ণবিদ্বেষী কোনো কাজ আপনি করেননি। একটা কবিতার বই, গল্পের বই, উপন্যাস, গদ্যের বই লিখেছেন। না-হয় খাজাই লিখেছেন। অসুবিধা কী? যার ইচ্ছা নয় সে পড়বে না। ইচ্ছে হলে দেখবে পড়বে। গলায় ছুরি ধরিয়ে কাউকে তো পড়াচ্ছেন না। বুক বাজিয়ে বিজ্ঞাপন করুন। বিছানার তলায় ভালো কবিতা রেখে দিলে পাঠক খুঁজে নেয়―এটা ভ্রান্ত। পাঠক না জানলে আপনার বিছানার তলা থেকে খুঁজবে কী করে? বই নিয়ে যত ইচ্ছে তর্ক করুন, বিতর্ক করুন, ঝামেলা করুন, গণ্ডগোল করুন। আলটিমেট বইয়ের মধ্যে থাকুন।‘
আমি মারুফের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। এখন তো নানা প্রচারমাধ্যম আছে। আগে পত্রপত্রিকায় বইয়ের বিজ্ঞাপন দিতে হতো, এখন ফেসবুক আছে, তাই পত্রিকার শরণাপন্ন হতে হয় না। আমার বই আমার ফেসবুক আইডিতে যত ইচ্ছে প্রচার করব, এতে আমি দোষণীয় কিছু দেখি না। বই নিয়েই তো প্রচার করছি, খারাপ কোনো কিছুর প্রচার তো করছি না। লেখক বই লিখে মুনি-ঋষির মতো নীরব হয়ে যাবেন, এই ধরনের কথায় আমার বিশ্বাস নেই। প্রচার মাধ্যম যেহেতেু আছে, সেহেতু লেখক তার বই যতটা পারেন প্রচার দেবেন।
রাইজিংবিডি : প্রকাশনা সংস্থাগুলো যে পরিমাণ রয়ালিটি দেয়, তাতে কি আপনি সন্তুষ্ট?
স্বকৃত নোমান: পনেরো পার্সেন্ট দেয়। সারা পৃথিবীতেই তো তাই দেয়। এর বেশি দেয় কিনা জানা নেই। সুতরাং সন্তুষ্ট না হয়ে তো উপায় নেই। কোনো কোনো প্রকাশক আছেন, যারা লেখককে রয়ালিটি দেওয়ার কথা ভুলে যান, যদিও এটা আমার ক্ষেত্রে সাধারণত হয় না। আমার প্রকাশকরা নির্দিষ্ট সময়ে রয়ালিটি দিয়ে থাকেন। যেসব প্রকাশক লেখকদের রয়ালিটি দিতে গড়িমসি করেন, তাদেরকে সর্বাত্মকভাবে বর্জন করা উচিত।
ঢাকা/লিপি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র আসর র জ ম ন উপন য স র স ধ রণত প ঠ করব কলক ত করব ন অনন ত
এছাড়াও পড়ুন:
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে ছিটকে পড়লেন মার্শ
একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। দলটা নিশ্চিতভাবেই অন্যতম ফেবারিট হিসেবে যাচ্ছে আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। তবে ফেব্রুয়ারির ১৯ তারিখ থেকে শুরু হতে যাওয়া এই আসরটির আগে ঝামেলা পিছু ছাড়ছে না অজিদের। দলের নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্স চোটাক্রান্ত। এই পেস বোলিং অলরাউন্ডারকে নিয়ে সংশয় এখনও কাটেনি। এবার অজিদের জন্য ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে এসেছে অলরাউন্ডার মিচেল মার্শের ছিটকে পড়টা। ব্যাপারটা নিশ্চিত করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)।
মার্শের সামনে সুযোগ ছিল সাদা বলের ক্রিকেটে, আইসিসির সব ধরনের বৈশ্বিক আসর জয়ের অসাধারণ এক মাইলফলক ছোঁয়ার। তবে চোটের কারণে এবার অন্তত সেটা সম্ভব হচ্ছে না। জানা গিয়েছে পিঠের নিচের অংশের চোটে ভুগছেন এই ৩৩ বছর বয়সী অলরাউন্ডার। সুনির্দিষ্ট করে চোটের ধরণ জানায়নি সিএ।
সিএ-এর এক মুখপাত্র বলেছেন, “অস্ট্রেলিয়া জাতীয় নির্বাচক প্যানেল এবং চিকিৎসকরা মিচেল মার্শকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার চোটের কারণে। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় থাকা মার্শের শারীরিক অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়নি। সম্প্রতি তার পিঠের নিচের অংশে ব্যথা আরও বেড়ে যাওয়ার কারণে নির্বাচক প্যানেল এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। তাকে পুরোপুরি সেরে ওঠার সুযোগ দিতে পুনর্বাসনের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। মার্শের জায়গায় দলে কে অন্তর্ভুক্ত হবে, তা নির্বাচক প্যানেল বৈঠক শেষে যথাসময়ে ঘোষণা করবে।”
আরো পড়ুন:
তবু আফসোস নেই শরিফুলের
রঞ্জিতে বিরাটের প্রত্যাবর্তনের সাক্ষী হতে রাত ৩টা থেকে লাইন
এদিকে ক্রিকইনফো দাবি করছে মার্শের এবারের ক্রিকেট মৌসুম শেষ। ক্রিকেটভিত্তিক সাইটটি আরও জানায় অস্ট্রেলিয়ান নির্বাচকরা এখন যদি মার্শের পরিবর্তে কোন ব্যাটসম্যানকে বেছে নেন, তাহলে সেটা হতে পারে জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক, যদিও তিনি সম্প্রতি ভালো ফর্মে নেই। তবে তার খেলায় আগ্রাসী মনোভাব রয়েছে, যা মার্শের মতোই। অস্ট্রেলিয়ার স্কোয়াডে ব্যাটিং বিকল্প ইতোমধ্যেই আছে, তাই নির্বাচকরা অলরাউন্ডারও বেছে নিতে পারেন। এমনটা হলে, টেস্ট দলে মার্শের জায়গা দখল করা বাউ ওয়েবস্টার ওয়ানডেতেও ডাক পেতে পারেন।
এদিকে আইপিএলের এবারের মৌসুমে মার্শের খেলা এখন অনিশ্চত। গত নভেম্বরে সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত মেগা নিলামে তাকে ৩ কোটি ৪০ লাখ রুপিতে দলে নিয়েছিল লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস।
আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ম্যাচটি হবে ২২ ফেব্রুয়ারি, যেখানে তারা মুখোমুখি হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ড। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি তাদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তান। এর আগে শ্রীলঙ্কায় দুটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া।
ঢাকা/নাভিদ