বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলায় আটক ছাত্রলীগ কর্মীকে ছিনিয়ে নিয়ে বিজয় মিছিল
Published: 25th, January 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে আটক নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের এক কর্মীকে ছিনিয়ে নিয়ে বিজয় মিছিল করেছে তার রাজনৈতিক সহপাঠীরা। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সান ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হামলায় সরাসরি জড়িত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে ছাত্রলীগ কর্মী শাহরিয়ারকে আটক করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পুলিশে সোপর্দ করার জন্য তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে তার রাজনৈতিক সহপাঠীরা দরজা ভেঙে শাহরিয়ারকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে ক্যাম্পাসে বিজয় মিছিল করে তারা।
রাকিব আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরাসরি জড়িত ছিল ছাত্রলীগ কর্মী শাহরিয়ার। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে পুলিশে সোপর্দ করার জন্য আটকে রেখেছিল। খবর পেয়ে তার রাজনৈতিক সহপাঠীরা দরজা ভেঙে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। পরে ক্যাম্পাসে বিজয় মিছিলও করেছে। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ কর্মীদের অবস্থান এই ক্যাম্পাসে হবে না।’’
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ টি এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘দুষ্কৃতকারীদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘এক ছাত্রলীগ নেতাকে আটকে রাখার খবর পেয়ে ক্যাম্পাসে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে, তার আগেই তার রাজনৈতিক সহপাঠীরা তাকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।’’
ঢাকা/পলাশ/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব জয় ম ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
হিজরতের ৫টি শিক্ষা
সাহাবিদের হিজরতের ঘটনাবলি কেবল ইতিহাসের অংশ নয়, বরং তা মুমিন জীবনের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। তাদের হিজরতের ঘটনা ও ত্যাগের আদর্শ থেকে কয়েকটি মৌলিক শিক্ষা উঠে আসে:
১. হিজরত প্রথমত আল্লাহর আদেশ পালনহিজরত কেবল কৌশলগত পরিকল্পনা ছিল না, বরং ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা এক ইবাদতমূলক নির্দেশ। এই কারণে সাহাবিরা সবচেয়ে প্রিয় বস্তু—ঘরবাড়ি, সম্পদ, আত্মীয়স্বজন—সহজে ত্যাগ করতে পেরেছিলেন। (মুহাম্মদ সাইদ রমাদান আল-বুতি, ফিকহুস সিরাহ, পৃষ্ঠা: ১৫৬, দারুল ফিকর, দামেস্ক, ২০০৪)
২. ইমানের জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগহিজরত শেখায় যে একটি জাতির ভিত্তি স্থাপন এবং সত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য চরম মূল্য দিতে হয়। সুহাইব তাঁর সব সম্পদ, আবু সালামা তাঁর পরিবার এবং বনু জাহশ (রা.) জন্মভূমি ত্যাগ করে এই মূল্য পরিশোধ করেছিলেন। এই ত্যাগ বিনা মূল্যে অর্জিত হয়নি।
আরও পড়ুনমদিনায় হিজরত: ইসলামের ৬টি মাইলফলক০২ জুলাই ২০২৫৩. ইমানের সম্পর্ক অন্য সব সম্পর্ক থেকে ঊর্ধ্বেওমর (রা.) আইয়াশকে যখন তার মায়ের দোহাইয়ের ফিতনা থেকে সতর্ক করেছিলেন, তা প্রমাণ করে যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি আনুগত্যের বন্ধন অন্য সব জাগতিক সম্পর্ক (গোত্র, পরিবার, রক্ত) থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।
৪. ঐকান্তিক প্রচেষ্টার সঙ্গে আল্লাহর ওপর ভরসাহিজরত মোটেই বিশৃঙ্খল ছিল না। ওমর (রা.)-এর পরিকল্পনা, কাফেলাবদ্ধ হয়ে যাত্রা এবং কৌশল অবলম্বন—সবই প্রমাণ করে যে আল্লাহর ওপর নির্ভরতার পাশাপাশি মানবীয় প্রচেষ্টা ও সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণ করাও আবশ্যক।
আরও পড়ুনমহানবী (সা.)–র হিজরত মদিনায় হলো যে কারণে২৯ জুন ২০২৫৫. আল্লাহর দয়ার বিশালতাএই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ফিতনা ও দুর্বলতা মানুষের জীবনে আসতে পারে। কিন্তু যখন তারা মক্কায় বন্দী হয়ে নিজেদের পাপী মনে করছিলেন, তখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াতটি নাজিল করে আশার দরজা খুলে দেন, ‘বলো, “হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের ওপর বাড়াবাড়ি করেছ (পাপ করেছ), তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করে দেন।”’ (সুরা জুমার, আয়াত: ৫৩)
এই আয়াতটি ছিল তাঁদের জন্য এক ঐশী ক্ষমা ও নতুন সুযোগের বার্তা।
হিজরত কেবল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়; এটি একটি অক্ষয়–দর্শন—যেখানে ইমান, ধৈর্য এবং আত্মত্যাগের সমন্বয়ে একটি আদর্শ সমাজ গঠনের বীজ নিহিত ছিল। এই দর্শনই মুসলমানদের নতুন এক দিগন্তে পৌঁছে দেয়।
আরও পড়ুনআবিসিনিয়ায় নারী সাহাবিদের দ্বিতীয় হিজরত১৪ নভেম্বর ২০২৫