ইংল্যান্ডের রাইট-ব্যাক কাইল ওয়াকার ধারে ম্যানচেস্টার সিটি থেকে ইতালির ক্লাব এসি মিলানে যোগ দিয়েছেন। ৩৪ বছর বয়সী এই ফুটবলার চলতি মৌসুমের বাকি অংশ ইতালিয়ান সিরি আ’তে খেলবেন। চুক্তিতে গ্রীষ্মে এটি স্থায়ী হওয়ার সুযোগও রয়েছে।
ম্যানচেস্টার সিটির অধিনায়ক ওয়াকার সম্প্রতি দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে গেছেন। গত ১৫ ডিসেম্বর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ডার্বিতে হারের পর থেকে তিনি শুরুর একাদশে জায়গা পাননি।
এসি মিলানে পাড়ি জমানোর মাধ্যমে ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে ওয়াকারের ছয় বছরের সম্পর্কের ইতি ঘটল। ২০১৭ সালে টটেনহ্যাম থেকে সিটিতে যোগ দেওয়ার পর ক্লাবটির হয়ে তিনি ৬টি প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জেতেন। ২০২৩ সালে পেপ গার্দিওলার অধীনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ ঐতিহাসিক ট্রেবল জয়ের অংশীদার ছিলেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওয়াকার তার বিদায়ী বার্তায় বলেন, ‘ম্যানচেস্টার সিটি.
বর্তমানে সিরি আ’র পয়েন্ট তালিকায় অষ্টম স্থানে অবস্থান করছে এসি মিলান। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা পাঁচ জয়ে শেষ ষোলোতে সরাসরি জায়গা করে নেওয়ার দোরগোড়ায় রয়েছে ক্লাবটি।
ইতালিতে ওয়াকার তার ইংল্যান্ড জাতীয় দলের সতীর্থদের সঙ্গে একই দলে খেলবেন। এসি মিলানের সান সিরোতে আগে থেকেই রয়েছেন ফিকায়ো টোমোরি, ট্যামি আব্রাহাম এবং রুবেন লফ্টাস-চিক। নতুন দলে যোগ দিতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ওয়াকার। তিনি বলেন, ‘এসি মিলানে যোগ দিতে পেরে গর্বের পাশাপাশি অনেক আনন্দিত আমি। এমন এক ক্লাব যার ইতিহাস ভীষণ সমৃদ্ধ এবং ছোটবেলা থেকে অনুসরণ করে আসছি।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এস ম ল ন
এছাড়াও পড়ুন:
অস্তিত্ব সংকটে বাঘ ভেবে ভুল বোঝা প্রাণীটি
বছর তিনেক আগের ঘটনা। ঢাকার ধামরাইয়ের কালিঘাট এলাকায় কৃষকরা জমিতে ধান কাটতে যান। এ সময় ধান ক্ষেতে বাঘের মতো একটি প্রাণী দেখে তারা চিৎকার করে ওঠেন। এক পর্যায়ে আশপাশের লোকজন লাঠি নিয়ে ধাওয়া করে প্রাণীটিকে মেরে ফেলেন। ছোপ ছোপ দাগ দেখে বাঘ বলে মনে করেন অনেকেই। কিন্তু বন বিভাগ জানিয়েছে, বাঘের থেকে অনেক ছোট এই প্রাণীটি আসলে মেছো বিড়াল। এভাবে না জেনে মানুষ প্রায়ই মেছো বিড়ালকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। নিরীহ নিশাচর এ বন্যপ্রাণীকে মানুষ ‘মেছোবাঘ’ নামে ডাকে। আর এ নামের কারণে ভুল ধারণার শিকার হয়ে প্রাণীটি বিপন্ন হয়ে পড়ছে।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থাগুলোর সংগঠন (আইইউসিএন) মেছো বিড়ালকে সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে লাল তালিকাভুক্ত করেছে। প্রাণীটি বাংলাদেশেও বিপন্ন। প্রাকৃতিক জলাভূমি কমায় প্রাণীটির সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে। পরিবেশ-প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় প্রাণীটির অবদান গুরুত্বপূর্ণ হলেও বাসস্থান সংকুচিত হওয়া ও মানুষের সচেতনতার অভাব প্রাণীটির জীবন বিপন্ন করে তুলেছে। এমন পরিস্থিতিতে আজ শনিবার দেশে প্রথমবারের মতো নানা আয়োজনে বিশ্ব মেছো বিড়াল দিবস-২০২৫ উদযাপন করা হচ্ছে। দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘জনগণ যদি হয় সচেতন, মেছো বিড়াল হবে সংরক্ষণ’।
দিবসটি উপলক্ষে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় আগারগাঁওয়ের বন অধিদপ্তরে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বন্যপ্রাণী গবেষকরা বলছেন, মেছো বিড়াল জলে ও স্থলে সমানভাবে তুখোড় শিকারি। সাধারণত খাল, বিল, নদী, পুকুর ও জলাভূমি আছে– এমন জায়গাতেই এদের বসবাস। সুন্দরবনে বেশ ভালো সংখ্যক আছে। মেছো বিড়াল মাছ, সাপ, ব্যাঙ, ইঁদুর, পাখি, খরগোশ, গুইসাপসহ মাঝারি আকারের অনেক প্রাণী শিকার করে থাকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুনতাসির আকাশ বলেন, ২০০৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সংগৃহীত ৩৬১টি সংবাদ পর্যালোচনা করে বাংলাদেশে ১৬০টি মৃত মেছো বিড়ালের খোঁজ পেয়েছিলাম। সবই মনুষ্য সৃষ্ট কারণে। ৮৩ শতাংশ সংবাদ মেছো বিড়ালকে ভুল প্রাণী ভেবেছে। কোথাও বলা হয়েছে বাঘ, কোথাও চিতা বাঘ, কোথাও বাঘের বাচ্চা।
তিনি বলেন, মেছো বিড়াল জনরোষ থেকে উদ্ধার করে বনে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তারা বনের প্রাণী নয়। ভুলভাবে ধরা আর ভুল জায়গায় ছাড়ার কারণে এই বিড়ালরা খুব কম দিনই বাঁচে। মেছো বিড়াল অবমুক্ত করার অত্যন্ত জনপ্রিয় জায়গা বাইক্কা বিল।
বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, মেছো বিড়াল সংরক্ষণে মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কার্যকরী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। মেছো বিড়াল হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। মেছো বিড়ালের জন্য বাসস্থান রক্ষা, বন সংরক্ষণ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চলছে।