নানা বিতর্ক আর নাটকীয়তার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে পিট হেগসেথের নিয়োগ চূড়ান্ত করেছে মার্কিন সিনেট। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সিনেটে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটির মধ্য দিয়ে তার নিয়োগ চূড়ান্ত হয়। খবর বিবিসির।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মনোনীত এই ব্যক্তির নিয়োগ চূড়ান্ত হতে নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। সিনেটে ডেমোক্র্যাটরা তার ব্যাপক বিরোধিতা করেছেন। তাদের কাতারে শামিল হয়েছিলেন কয়েকজন রিপাবলিকানও। হেগসেথের পক্ষে ও বিপক্ষে ৫০টি করে ভোট পড়ে। ডেমোক্র্যাট ও স্বতন্ত্রদের পাশাপাশি হেগসেথের নিজ দল রিপাবলিকানের তিন সদস্যও তার বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।

পক্ষে-বিপক্ষে সমান ভোট পড়ায় ফলাফল ঘোষণায় জটিলতা তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সিনেটে ভোট দিতে আসেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স। জে ডি ভ্যান্স পক্ষে ভোট দেওয়ায় মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে হেগসেথের নিয়োগ চূড়ান্ত হলো।

হেগসেথের পক্ষে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স টাই-ব্রেকিং ভোট দেন। এর আগে তিনজন রিপাবলিকান সেনেটর মিচ ম্যাককনেল, হেগসেথের বিপক্ষে ভোট দেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ভাইস প্রেসিডেন্টের টাই-ব্রেক ভোটে মন্ত্রিসভার কোনো সদস্যের নিয়োগ চূড়ান্ত হলো। প্রথম ঘটনাটিও ট্রাম্পের শাসনামলেই ঘটেছিল। ২০১৭ সালে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তার মনোনীত শিক্ষামন্ত্রী বেটসি ডেভোসের নিয়োগ চূড়ান্ত করতে ভাইস প্রেসিডেন্টের ভোট লেগেছিল।

হেগসেথের নিয়োগ শুনানিতে যৌন হয়রানির অভিযোগসহ অতিরিক্ত মদ্যপান এবং বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ২০১৭ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার মন্টেরেতে এক নারীর সঙ্গে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তিনি বারবার অস্বীকার করেছেন।

ফক্স নিউজের সাবেক টেলিভিশন উপস্থাপক ও বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ এখন প্রায় ৩০ লাখ কর্মচারী এবং ৮৪৯ বিলিয়ন ডলারের বাজেট নিয়ে প্রতিরক্ষা বিভাগ পরিচালনা করবেন।

৪৪ বছর বয়সী হেগসেথ ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধ করেছেন। কিন্তু প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে কাজ করার জন্য যে ধরনের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন, তা তার নেই। সাধারণত এই পদে সিনিয়র বেসামরিক কর্মকর্তা, অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ বা উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়।

এর আগে গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরপরই ট্রাম্প তার প্রশাসনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে পিট হেগসেথকে মনোনীত করেন। তবে তার বিরুদ্ধে কর্মক্ষেত্রে যৌন নিপীড়ন, অতিরিক্ত মদ পানসহ বিভিন্ন অভিযোগ প্রকাশ হতে থাকে। এর ব্যাপক প্রভাবও পড়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্বাচনের সময়।

সিনেটে আলাস্কার রিপাবলিকান সেনেটর লিসা মুরকোভস্কি তার বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে বলেন, তার অতীত আচরণ প্রমাণ করে যে তিনি এই দায়িত্বের জন্য উপযুক্ত নন। মেইনের সেনেটর সুসান কলিন্সও তার অভিজ্ঞতার অভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তার বিরুদ্ধে ভোট দেন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ষ মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

নিরীহ কাউকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না: আইজিপি

নিরীহ কাউকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। তিনি বলেন, ‘পুলিশের সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে করা মামলাগুলো যথাযথভাবে তদন্ত করতে হবে। কোনো নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা যাবে না।’

দুপুরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

আইজিপি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর একটি মহল হয়রানির উদ্দেশ্যে মূল আসামির সঙ্গে অসংখ্য নিরীহ মানুষকে মামলায় আসামি করছে। এ বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে।’

এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, কেবল তদন্তে যার বিরুদ্ধে দায়ভার পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট অব অ্যারেস্ট চাওয়া হবে। তাকেই গ্রেপ্তারের কার্যক্রম নেওয়া হবে।

মিথ্যা মামলা রোধে আইনি সীমাবদ্ধতা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই যে মিথ্যা মামলা বলছেন, মামলাটা মিথ্যা, মামলাটা সত্যই। কিন্তু এই যে আসামির সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া, এটা আমরা বন্ধ করতে পারছি না। আইনে আমাদের এই সীমাবদ্ধতা রয়েছে।"

তিনি জানান, কেউ অভিযোগ করলে তা পুলিশকে মামলা হিসেবে রুজু করতে হয়। মামলা সত্য না মিথ্যা এটা যাচাই করার কোন সুযোগ নেই।

‘উনি অভিযোগ যেটা আমাকে দেন ওটাই মামলা হিসেবে আমাকে নিয়ে নিতে হয়। এরপর তদন্তে গিয়ে আমি দেখি আসলে কতটুকু সত্য কতটুকু মিথ্যা। সত্য অংশটুকুই তদন্তে উঠিয়ে নিয়ে আমি আদালতের কাছে পাঠাই।’ বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘পাঁচই আগস্টের পরে যেটা দেখা গেছে অনেকে অসৎ উদ্দেশ্য মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের জন্য, হ্যারাস করার জন্য, ভয় দেখানোর জন্য অপরাধটা হয়তো করেছেন পাঁচজন কি দশজন, কিন্তু ওখানে আরো তিনশো লোকের নাম দিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকালও একটা হয়েছে।’

জুলাইয়ের গণ অভ্যুত্থানে কতজন পুলিশ কর্মকর্তা গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি জানান তদন্তের পুরো প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিষয়টি বলা যাবে না।

যারা মিথ্যা মামলা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, শুধুমাত্র তদন্ত শেষ হলেই বাদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ করা যাবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ