সাবালেঙ্কার ইতিহাসে বাধা ম্যাডিসন
Published: 25th, January 2025 GMT
মেলবোর্নের রড লেভার অ্যারেনায় ২০১৫ সালে যখন সেমিফাইনাল খেলেছিলেন, সেই সময় ম্যাডিসন কেইসের বয়স ছিল ১৯। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ফাইনাল খেলতে অপেক্ষা করতে হয়েছে এক দশক। ২৯ বছরে এসে ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডস্লামের স্বপ্ন দেখা যুক্তরাষ্ট্রের এ টেনিস কন্যার সামনে কঠিন বাধা। শনিবার নারী এককের ফাইনালে হ্যাটট্রিক শিরোপার সামনে দাঁড়ানো আরিয়ানা সাবালেঙ্কার বিপক্ষে পাঁচবারের দেখায় মাত্র একবার জিতেছেন ম্যাডিসন।
ইতিহাস আর পরিসংখ্যানও ম্যাডিসনের পক্ষে নেই। ২০২১ সালে বার্লিনে জার্মান ওপেনে বেলারুশ তারকাকে হারানোর সুখস্মৃতিই আজকের ফাইনালে ম্যাডিসনের বড় প্রেরণা। গ্র্যান্ডস্লামে ২০২৩ উইম্বলডন এবং ইউএস ওপেনে ম্যাডিসনের বিপক্ষে জেতা সাবালেঙ্কা মেলবোর্নে বেশ আত্মবিশ্বাসী। নারী এককে সুইজারল্যান্ডের সাবেক টেনিস সেনসেশন মার্টিনা হিঙ্গিসের (১৯৯৭-১৯৯৯) পর টানা তিনবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের হাতছানি সাবালেঙ্কার।
টেনিসের মেজর প্রতিযোগিতায় তিনবার ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছেন সাবালেঙ্কা। মেলবোর্নের দুটির সঙ্গে গত বছর জিতেছিলেন ইউএস ওপেন। ফাইনালে পা দিয়ে ইতোমধ্যে বেশ কিছু কীর্তি গড়েছেন ২৬ বছর বয়সী বেলারুশ টেনিস তারকা। ২০১৭ সালে সেরেনা উইলিয়ামসের পর মেলবোর্নে টানা তিনবার ফাইনাল খেলছেন তিনি। ২০০২ সালে হিঙ্গিসের পর কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডস্লামের শিরোপামঞ্চে। তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে একটি গ্র্যান্ডস্লামে টানা ২০ ম্যাচ জয়ের কীর্তি আছে তাঁর। শনিবার জিতলেই সাবালেঙ্কার নামটি জড়িয়ে যাবে টেনিসের কয়েকজন কিংবদন্তির সঙ্গে। মার্গারেট কোর্ট, ইভোন গুলাগং, স্টেফি গ্রাফ ও মনিকা সেলেস তিনবার করে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছেন।
সাতবার চ্যাম্পিয়ন হলেও আমেরিকান সেরেনা উইলিয়ামস কখনোই টানা তিনবার ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে পারেননি। ‘আমার কাছে এটা ভাবতেই ভালো লাগছে, এমন একটা অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছি যে ম্যাচ জিতলে কিংবদন্তিদের কাতারে আমার নাম যুক্ত হবে।’
প্রতিপক্ষের সক্ষমতা এবং পরিসংখ্যান সম্পর্কে অবগত আছেন ম্যাডিসন। ফেব্রুয়ারিতে ৩০তম জন্মদিন পালনের আগে ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের স্বপ্নটা পূরণ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ তিনি। ফাইনালে ওঠায় ২০১৯ সালের পর প্রথমবারের মতো মেয়েদের র্যাঙ্কিংয়ে সেরা দশে চলে আসবেন ম্যাডিসন। সেটা ভাবনায় নেই তাঁর। গত বছরের অক্টোবরে বিয়ের জন্য মৌসুমের সমাপ্তি টানা ম্যাডিসন বিয়ে করেছেন তাঁর কোচ বিয়ন ফ্রাটাংগেলোকে। ২০১৭ সাল থেকে ম্যাডিসনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ানো বিয়ন তাঁর কোচ হন ২০২৩ সালে। আজকের ফাইনাল এমন একটি ম্যাচ, যেটি কিনা দু’জনের জন্যই প্রথমবার একসঙ্গে কোনো মেজর টুর্নামেন্ট জয়ের সুযোগ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ, ছেলেকে ফিরে পেতে মায়ের আকুতি
ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে যাওয়া ছেলেকে ফিরে পাওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী রবিনের মা রহিমা বেগম বলেন, ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে আমার আত্মীয় সাধনা বেগম সাধুনী আমাদের বাসায় বেড়াতে আসেন। নানা আলোচনা হয় তার সঙ্গে। আলোচনার একপর্যায়ে তিনি আমাদের ছোট ছেলে মো. রবিনকে ইতালি পাঠানোর প্রস্তাব করেন। আমরা পরিচিত লোক না থাকা, টাকা পয়সা না থাকা ইত্যাদি বলে প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানাই। তখনই সাধনা বেগম বলেন, তার নিজের ছেলেকে মো. মনির হোসেন নামে এক ব্যক্তি ইতালি পাঠিয়েছেন। আমরা বলি মনিরকে তো আমরা চিনি না। তখন তিনি সঙ্গে সঙ্গে মনির ও তার স্ত্রী দিনা ইসলামকে ফোন করে কথা বলেন। এর এক সপ্তাহ পরে মো. মনির তা স্ত্রী দিনা ইসলাম আমাদের বাসায় আসেন। তখন মনিরের সঙ্গে আমার ছেলেকে ইতালি ফ্লাইটে পাঠাতে হলে ১৪ লাখ টাকার মৌখিক চুক্তি হয়।
তিনি আরও বলেন, কিছুদিন পর অল্প টাকা সংগ্রহের কথা জানালে ২০২৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার সময় দালাল মনির ও তার স্ত্রী দিনা ইসলামসহ কয়েকজন আমাদের আদাবরের বাসায় আসেন। এসময় আমাদের ছেলে রবিনের পাসপোর্ট ও নগদ ৫ লাখ টাকা নেয় তারা। তখন দিনা ও সাধনা বলেন, দালাল মনির রবিনকে সঙ্গে করে নিয়ে ইতালি কর্মস্থলে যাবে। রবিনকে চাকরিতে যোগদান করিয়ে আবার যখন ঢাকায় ফিরবে তখন বাকি ৯ লাখ টাকা দিলেই হবে। এর এক সপ্তাহ পর ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রবিনকে নিয়ে দালাল মনির শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের উদ্দেশে যায়।
এসময় রবিনের বাবা বলেন, কিছু দিন পর খবর পেলাম ইতালি না নিয়ে লিবিয়ায় নিয়ে অন্ধকার ঘরে আটকে রাখে ছেলেকে। আটকাবস্থায় আমাদের সন্তানকে ভয়ানক শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন চালায়। নির্যাতন চলাকালীন সময়ই তারা ফোনে রবিনকে আমাদের সঙ্গে কথা বলায় টাকা পাঠানোর জন্য। রবিন নির্যাতনের যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে আমাদের জনায়- তোমরা দ্রুত টাকা না পাঠালে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে!
তিনি বলেন, একথা জানার পর আমরা মনির ও সাধনাকে বলি তোমরা আমার সন্তানকে দেশে ফিরিয়ে আনো। তাতে আমাদের সন্তানের ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়! সন্তানের জীবনের কথা চিন্তা করে তখন আমরা নিরুপায় হয়ে বিভিন্ন তারিখে মনিরের বাবা কালাম হাওলাদার, মনিরের স্ত্রী দিনা ইসলাম, সাধনার মেয়ে রেখা আক্তার ও মনিরের বোন সিমার ভিন্ন ভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেই। যার মানি রিসিট আছে। এছাড়াও পরবর্তীতে নগদে আরও টাকাসহ মোট ১৮ লাখ টাকা নেয় তারা।
এত টাকা দেওয়ার পরও গত বছরের মার্চ মাস থেকে আমরা আর ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। আমাদের ধারণা- এই মানব পাচারকারীরা আমাদের আদরের ধন রবিনকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। এমতাবস্থায় আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কাছে ভিক্ষা চাই, আমাদের সন্তানকে ফিরে পেতে তারা যেন একটা উদ্যোগ গ্রহণ করে।
রবিনের বাবা আরও বলেন, প্রায় এক বছর ধর ছেলের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ নেই। ছেলের সন্ধানে সংশ্লিষ্ট এম্বাসি এবং দপ্তরে যোগাযোগ করলে কোনো সহায়তা পাইনি। আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই।
সংবাদ সম্মেলনে রবিনের পরিবারের সদস্য ছাড়াও তার স্কুল শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।