গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতাকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা
Published: 25th, January 2025 GMT
রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ হোসাইন মিথুনকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে তার সমর্থকরা। গতকাল শুক্রবার ভোরের এ ঘটনায় নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনারসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, ব্যবসায়ী হত্যাচেষ্টার মামলায় নরসিংদী থেকে গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতা রাসেলের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মিথুনকে ধরা হয়। ভোর ৪টার দিকে বাধার মুখে পড়তে হবে বলে ধারণা করেনি পুলিশ। তবে নিউমার্কেট থানার সামনেই অবস্থান করছিল মিথুনের সমর্থকরা। তারা পুলিশের গাড়ি থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় তাদের মারধর, ধাক্কাধাক্কি ও ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশ সদস্যরা আহত হন। পরে থানা থেকে বাড়তি পুলিশ গিয়ে ছয় হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলো– বশির ইসলাম, মোহাম্মদ হাসান, মোহাম্মদ ইমন, মাসুম মাহমুদ, মোহাম্মদ আলামিন ও আকবর আলী।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম সমকালকে বলেন, হামলাকারীদের নামে আলাদা মামলা হয়েছে। তাদের মধ্যে বশিরের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বাকি পাঁচজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে ১০ জানুয়ারি এলিফ্যান্ট রোডে মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের সামনে দোকান মালিক সমিতির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হককে কুপিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ‘ইমন গ্রুপের’ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নিউমার্কেট থানায় মামলা করেন সমিতির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুল হাসান। সেদিন তাঁর ওপরও হামলা চালানো হয়।
তদন্ত সূত্র জানায়, ছাত্রদল নেতা রাসেল জিজ্ঞাসাবাদে বলেন, তাঁকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেন মিথুন। তিনি ইমন গ্রুপের হোতা সানজিদুল হাসান ইমনের হয়ে ধানমন্ডি এলাকায় চাঁদাবাজি করেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজধানীর পূর্বাচল থেকে মিথুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার ঘটনায় করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মিথুনকে বহনকারী পুলিশের গাড়ি নিউমার্কেট থানায় ঢোকার সময় আসামির সমর্থকদের বাধার মুখে পড়ে পুলিশ। তখন পুলিশ সদস্যরা সবাইকে সরে যেতে বললেও তারা নির্দেশ অমান্য করে। এ সময় লাঠি, রড ও চাপাতি নিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়।
হামলায় নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার তারিক লতিফ, এসআই আরব আলী, এসআই ফিরোজ আহমেদ, এসআই খন্দকার মেসবাহসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন।
এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সহকারী কমিশনার গাড়ি থেকে নেমে মিথুনের সমর্থকদের সরে যেতে অনুরোধ করেন। সরে না যাওয়ায় তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় পুলিশের। এক পর্যায়ে মিথুনকে নিয়ে পুলিশ থানার ভেতরে চলে যায়। থানার বাইরে থেকে পুলিশকে উদ্দেশ করে হুমকি দেয় কয়েকজন।
এর আগে ব্যবসায়ী এহতেশামুল হকের ওপর হামলার ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের সামনে চার-পাঁচজন এহতেশামুলকে চাপাতি দিয়ে কোপাচ্ছে। পাশে দাঁড়িয়ে ছিল আরও ছয়-সাতজন। সবাই ছিল মুখোশ পরা। চাপাতির আঘাতে এহতেশামুল রাস্তায় লুটিয়ে পড়লেও তাঁকে কোপানো হয়।
মিথুনসহ দুই নেতা বহিষ্কার
ছাত্রদলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসাইন মিথুন ও সহ-সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল হাসান রাসেলকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো। অধিকতর তদন্ত করে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির গতকাল এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন। সেই সঙ্গে তারা ছাত্রদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে বহিষ্কৃত দুই নেতার সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল প ল শ সদস য ছ ত রদল ন ত র ছ ত রদল ব যবস র ওপর র সমর
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’