জিতলেই সরাসরি বিশ্বকাপ নিশ্চিত। সমীকরণ যখন এমন ছিল তখন পেছনে ফিরে তাকানোর কোনো সুযোগ ছিল না। নিগার সুলতানা জ্যোতির দল জয় ভিন্ন অন্য কিছু চিন্তাও করছিলেন না।
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আরেকবার হারিয়ে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার ছাড়পত্র পেতে চেয়েছিলেন। সেই লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটাও ছিল দুর্দান্ত। শুরুর ব্যাটসম্যানরা আশা দেখাচ্ছিলেন বড় কিছুর। এরপর নাটকীয় বিপর্যয়। তাতে স্রেফ স্বপ্নভঙ্গ।
১১৮ রানে অলআউট হয়ে বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে হেরেছে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে। সিরিজ হারানোর বেদনার সঙ্গে যোগ হয়েছে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে খেলার ‘উটকো’ ঝামেলাও। যেখানে পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও থাইল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে হবে বাংলাদেশকে।
সেন্ট কিটসে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মুর্শিদা খাতুন ১ রানে ফেরেন ফ্রাসেরের বলে। সেখান থেকে ৬২ রানের জুটি গড়েন ফারজানা হক ও শারমীন আক্তার। কঠিন সময় পেরিয়ে দুই ব্যাটসম্যান থিতু হয়ে গিয়েছিলেন ২২ গজে। বুঝেশুনে শট খেলে রান তুলছিলেন অনায়েসে।
কিন্তু ২০তম ওভারে ফারজানা আউট হলে শুরু হয় বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয়। ৬৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানোর পর পরের ৫০ রান তুলতে ৮ অলআউট অতিথিরা। তাতেই স্বপ্নভঙ্গ হয়ে যায় সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার। ফারজানা ২২ রানে ফ্লেচারের বলে এলবিডব্লিউ হন। সর্বোচ্চ ৩৭ রান করা শারমীন আক্তার ম্যাথুউজের শিকার হন।
এরপর শুরু হয় ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিল। যেখানে কেউই দলের হাল ধরতে পারেননি। নিগার সুলতানা জ্যোতি ১১ রানে আউট হলে বড় কিছুর আশার শেষ হয়। শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে সোবহানা মোস্তারি ২৫ রান যোগ করে দলের রান একশ পেরিয়ে নিয়ে যান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে বল হাতে ৬.
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোনো ভুল করেনি। ২৭.৩ ওভারে জয় নিশ্চিত করে তারা। দুই ওপেনার হ্যারি ম্যাথুস (২২) ও কিয়ানা জোসেফকে (৩৯) সাজঘরের পথ দেখান নাহিদা আক্তার ও মারুফা আক্তার। সিমাইন ক্যাম্পেবল ২৫ ও ডেন্ড্রা ডোটিন ৩৩ রানে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ নিশ্চিত করে ২-১ ব্যবধানে।
এই ম্যাচ দিয়ে শেষ হলো আইসিসি ওমেন্স চ্যাম্পিয়ন শিপের লড়াই। সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছে স্বাগতিক ভারতসহ আইসিসি উইমেন'স চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষ ছয় দল। বাংলাদেশের পয়েন্ট এখন ২৪ ম্যাচে ২১। নিউ জিল্যান্ডের পয়েন্ট ২৪ ম্যাচে ২১। তবে রান রেট নিউ জিল্যান্ড অনেক এগিয়ে।অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা ও নিউ জিল্যান্ড পেয়েছে বিশ্বকাপ খেলার টিকিট।
ওয়ানডে সিরিজ শেষে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে।২৮ জানুয়ারি প্রথম টি-টোয়েন্টি হবে সেন্ট কিটসে। পরের দুইটি ম্যাচ একই ভেনু্যতে ৩০ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি।
ঢাকা/ইয়াসিন
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আর আ.লীগের রাজনীতি করব না: কাঠগড়ায় কামাল মজুমদার
কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেছেন, ‘আর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করব না। আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করব না। আমি আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই। প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও পদত্যাগ করলাম।’
আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে কাফরুল থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়।
এদিন আদালতে তোলার পর কাঠগড়ায় রাখা হয় তাকে। এরপর সকাল ১০টা ৭ মিনিটে বিচারক এজলাসে আসেন। এরপর বিচারকের উদ্দেশ্যে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘আমি ন্যায় বিচার চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমার ৭৬ বয়স, আমি ডায়াবেটিসের রোগী। চোখের ৭০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। আমার পরিবার সম্পর্কে কোনো খোঁজ খবর নিতে পারছি না। তাদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। আপনার (বিচারক) কাছে আমার আবেদন, আপনার কাছে সুবিচার চাই। একের পর এক মামলা দিয়ে আমাকে অত্যাচার করা হচ্ছে। এখন নাতি নাতনিদের নিয়ে খেলা করার সময়। কিন্তু জেলখানায় অত্যাচার করা হচ্ছে। এখন আল্লাহকে ডাকা ছাড়া কোনো উপায় নেই। কারা কর্তৃপক্ষ আমাকে ডিজিটাল কুরআন ও ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্র দিচ্ছে না। আমাকে ডিজিটাল কুরআন, ডায়াবেটিসের ওষুধ ও ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্র দেওয়া হোক।’
এরপর শুরু হয় আসামিদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনের ওপর শুনানি। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রিক কাফরুল থানার এক হত্যা মামলায় শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। গ্রেপ্তার দেখানো অন্যরা হলেন, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও অপর সাবেক আইজিপি এ. কে. এম শহিদুল হক। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।
পরে কাঠগড়া থেকে নামার সময় কামাল আহমেদ মজুমদার সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘রাজনীতি থেকে একেবারে অব্যাহতি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্যপদ থেকেও অব্যাহতি। আমার দলীয় কোনো পদ নেই। ৭৬ বছর বয়সে রাজনীতি করা যায় না। আমরা চাই নতুন নেতৃত্ব আসুক।’ এরপর তাকেসহ অন্যান্য আসামিদের সিএমএম আদালতের হাজতখানা প্রবেশ করানো হয়।
গত ১৯ অক্টোবর রাত সাড়ে বারেটার দিকে রাজধানীর গুলশানের একটি বাসা থেকে কামাল আহমেদ মজুমদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।