Samakal:
2025-03-03@20:13:51 GMT

৪৫ লাখ টাকা নিয়েও মেরে ফেলা হলো

Published: 24th, January 2025 GMT

৪৫ লাখ টাকা নিয়েও মেরে ফেলা হলো

দিনের পর দিন ছোট একটি কামরায় বন্দি রেখে মারধর করা হয়েছে। নানা কৌশলে আদায় করা হয়েছে মুক্তিপণের টাকা। এভাবেই কেটে গেছে তিনটি বছর। বাঁচার জন্য আকুতি ছিল ছেলেটার; কিন্তু বাঁচতে পারল না। দফায় দফায় ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়েও এলো তার মৃত্যুর খবর। 
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন মাদারীপুর সদর উপজেলার খোঁয়াজপুর ইউনিয়নের পখিরা গ্রামের নাজিম উদ্দিন মহাজন। তিনি রাকিব মহাজনের বাবা। বুধবার রাতে রাকিবের মৃত্যু সংবাদ পান তিনি। এরপর থেকে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের মাতম।
রাকিবের মতো হাজারো যুবককে ইতালি পাঠানোর কথা বলে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা। গেল বছর লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে জেলার শতাধিক মানুষ মারা গেছেন। পাঁচ শতাধিক দালালের বিরুদ্ধে ২০০ মামলা হয়েছে। মামলায় জামিন পেয়ে তারা আবার দালালিতে যুক্ত হয়। ভয়ংকর এ দালাল চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান পুলিশ সুপার মো.

সাইফুজ্জামান। 
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, টগবগে যুবক রাকিব মহাজন। তিন বছর আগে সদর উপজেলার পখিরা গ্রামের জাহাঙ্গীর মৃধা তাঁকে ইতালি পাঠানোর স্বপ্ন দেখায়। পরিচয় করিয়ে দেয় ভায়রা শরীয়তপুর সদর উপজেলার ধানুকা ইউনিয়নের ছোট বিনোদপুর গ্রামের সোহাগ মাতুব্বরের সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে ২৭ লাখ টাকায় চুক্তি করে ২০ বছর বয়সে ইতালি যাবেন। দালালের সঙ্গে লিবিয়ায় পাড়ি জমান রাকিব। সেখানে নিয়ে তাঁকে আটকে ফেলা হয়। কথিত গেমঘরে (টর্চার সেল) রেখে আরও টাকা আদায় করতে দিনের পর দিন নির্যাতন চালাতে থাকেন সোহাগ মাতুব্বর। পরে রাকিবের বাবা নাজিমউদ্দিন ধারদেনা করে আরও ৫ লাখ টাকা দেন সোহাগকে। তাতেও কাজ হয়নি। এভাবে দুই বছর চার মাস পেরিয়ে যায়। অসহ্য যন্ত্রণায় দিন পার করতে থাকেন রাকিব। কৌশলে সোহাগের গেমঘর থেকে বেরিয়ে যান। পড়েন আরেক দালাল মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের ব্রাম্বনদী গ্রামের মাজেদ খলিফার খপ্পরে। তাঁকেও গত ৮ মাস আগে ১৫ লাখ টাকা দেয় রাকিবের পরিবার। তিনিও টাকা নিয়ে আরও টাকার জন্য নির্যাতন চালান। এক পর্যায়ে রাকিব গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। লিবিয়ার একটি হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর দালাল মাজেদ খলিফাই রাকিবের পরিবারকে জানান। পরিবারের কাছে মৃতদেহের ছবি ও ভিডিও পাঠান। 
রাকিবের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। নির্মম নির্যাতনে জড়িত দালালদের উপযুক্ত বিচার দাবি করেন স্বজনরা। 
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দালাল জাহাঙ্গীর মৃধা। তিনি বলেন, ‘রাকিবকে বিদেশে পাঠিয়েছে সোহাগ। সে আমার ভায়রা হয়। তাই আমাকে জড়ানো হচ্ছে। অথচ আমি যে টাকা নিয়েছি, এ কথা কেউ প্রমাণ করতে পারবে না। লেনদেনের সময়ও ছিলাম না। রাকিব অসুস্থ হয়ে লিবিয়ায় মারা গেছে। সোহাগ বরং তার চিকিৎসা করেছে। এর বেশি কিছু আমি জানি না।’ 
এদিকে রাকিবের মৃত্যুর সংবাদ জানার পরে দালাল মাজেদ খলিফার পরিবার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এ কারণে তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে এখনও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সদর উপজ ল র ন র পর পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ