৭২-এর সংবিধান দিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
Published: 24th, January 2025 GMT
গণপরিষদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, গণপরিষদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিন। গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এবং সম্ভাবনা নির্ধারিত হবে। এ মুহূর্তে আমাদের বহুদলীয় সংবিধান প্রয়োজন। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুজিববাদী সংবিধান থেকে বের হতে হবে। বিচার ও সংস্কারের প্রক্রিয়ায় কেউ কেউ বাধা সৃষ্টি করতে চায়, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো ষড়যন্ত্র করতে চায়, সবাই মাঠে প্রস্তুত থাকবেন। রক্ত আমরা দিয়েছি, আরও দেব রক্ত, বাংলাদেশের যাত্রা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
শুক্রবার বিকেলে শাহবাগে মার্চ ফর ইউনিটি অ্যান্ড জাস্টিস কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলকে নতুন সংবিধান গড়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ৭২-এর সংবিধান দিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় একদলীয় সংবিধান দিয়ে কখনও সম্ভব না। আমাদের বহুদলীয় গণতন্ত্রের একটি সংবিধান দিতে হবে। যে সংবিধান তৈরি হবে সেখানে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে যেসব শ্রমিক শহীদ হয়েছেন তাদের কথা থাকতে হবে। মায়েদের কথা, নারীদের কথা থাকতে হবে।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রজ্ঞা, রাজনৈতিক লড়াই ও দীর্ঘ ত্যাগতিতিক্ষাকে আমরা সম্মান করি। কিন্তু সেই মর্যাদা ও সম্মানের আসনে যদি তারা প্রতিষ্ঠিত হতে চায় এবং গত ৫৩ বছরে দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা, আমাদের করের টাকা বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া ও আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে নিয়ে বিদেশি শক্তিগুলোর খেলাধুলা প্রতিহত করতে চাইলে আমাদের একটি বহুদলীয় সংবিধান প্রয়োজন। চব্বিশের বাঘ ও বাঘিনীদের হাত ধরেই সেই নতুন যাত্রা ও সূর্যোদয় হবে।
সবাইকে গণপরিষদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আগামীর বাংলাদেশের সংকট সমাধানের জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে গণপরিষদ নির্বাচনের দিকে যেতে হবে। সেই গণপরিষদে আমরা এমন একটি সংবিধান চাই, যে সংবিধানে আমাদের আর কোনো রাষ্ট্রের কাছে গোলামির জিঞ্জির পরিধান করতে হবে না, যে সংবিধানের মাধ্যমে আর কোনো ফ্যাসিস্ট শক্তি বাংলাদেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন স র দ দ ন প টওয় র ন স র দ দ ন প টওয় র
এছাড়াও পড়ুন:
চা-মুড়ি ঐক্য পরিষদ
বাংলার এক নামকরা কলেজ। সেখানে আছেন আমাদের ‘মাস্টারমশাই’। নাম মফিজ স্যার। পড়ান রাষ্ট্রবিজ্ঞান। ক্লাসে ঢুকে ছাত্রদের রাজনীতি শেখান। ক্লাসের শুরুতেই বলেন, এই যে তোরা, বই না, আগে বুঝতে হবে ভোটের খেলা। এই দেশে ভোট মানে মাছ-ভাত, চায়ের কাপ আর বগল বাজানো স্লোগান।
ছাত্র– স্যার, বইটা খুলব নাকি?
স্যার– বই খুললে হবে না রে! আগে মানুষের মন খুলতে হয়।
এরপর শুরু হয় স্যারের গল্প। দেখো, ১৯৮২ সালে আমি ইউনিয়ন নেতা ছিলাম। স্লোগান দিতাম– ‘ভাত দে, কাপড় দে, ভোট দে’। তখনকার প্রেমও ছিল রাজনৈতিক। প্রেমিকার নাম ছিল গণতন্ত্রা।
ছাত্র শামীম– স্যার, ও তো সিনেমার নাম।
স্যার– আরে পাগলা, সব সিনেমা কি বাস্তব থেকে আসে?
একদিন কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচন হবে। ছাত্র সংসদ। দুইটা দল। একদিকে ‘চা-চক্র সংঘ’, আরেকদিকে ‘ঝালমুড়ি মঞ্চ’। সবাই হইচই।
রাব্বি দাঁড়ায় নির্বাচন করতে। স্লোগান দেয়– চা-মুড়ি হোক বিনামূল্যে, ভোট দাও রাব্বিকে।
স্যার ডাকে ও রাব্বি, তুই কি সত্যিই নেতাগিরি পারবি? নেতার তো ভাষণ দিতে হয়।
রাব্বি বলে– স্যার, আমি তো ভাইরাল লাইন জানি। যেমন– নেতা হতে হলে নাটক শিখো, মাইক ছাড়া মুখ খুলো না আর মানুষকে ভাবতে শেখাও যে তুমি ছাড়া এ দেশ শেষ!
স্যার খুশি। বলেন– ব্যাটা, তুই তো আমার থেকে বড় লিডার।
ভোটের দিন। চা-চক্র সংঘের ছেলেরা সবাই চায়ের কাপ হাতে। ঝালমুড়ি মঞ্চ ঝালমুড়ি বিলি করে।
মফিজ স্যার প্রিসাইডিং অফিসার। ঘোষণা দিলেন– এই ভোটে কেউ হারবে না। সবাই জিতবে। কারণ একটাই– গণতন্ত্র বাঁচাও।
শামীম চেঁচিয়ে বলল– স্যার, গণতন্ত্র কোথায়? আপনি তো চা-মুড়ি খেয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন।
স্যার হেসে বললেন– গণতন্ত্র মানেই তো আপস। যেই আপস করে, সেই জেতে।
এরপর ঘোষণা: নতুন কমিটি ‘চা-মুড়ি ঐক্য পরিষদ’। সভাপতি রাব্বি, সম্পাদক শামীম।
সবার স্লোগান– ‘চা-মুড়ির ঐক্য হোক, গণতন্ত্রের জয় হোক।’
স্যার মাইক্রোফোনে ঘোষণা দিলেন– এই হলো বাস্তব রাজনীতি। যত মিছিল, তত চা, তত মুড়ি আর কথায় কথায় ‘আমি তো ভালা না, ভালা লইয়া থাইকো।’
শেষে ছাত্রদের চিৎকার– বাহ্ স্যার বাহ্! আপনি না থাকলে রাজনীতি শিখতাম কীভাবে।
স্যার হেসে বললেন– বুঝলে বুঝপাতা, না বুঝলে তেজপাতা!
শেষে ক্যাম্পাসজুড়ে স্লোগান: ‘মুড়ি-চা খাই, নেতা স্যার ভাই!’
শামীম চেঁচিয়ে বলল– স্যার, গণতন্ত্র কোথায়? আপনি তো চা-মুড়ি খেয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন।
স্যার হেসে বললেন– গণতন্ত্র মানেই তো আপস।
সুহৃদ ঢাকা