রাজধানীতে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় নিউমার্কেট থানার মামলায় গ্রেপ্তার মোহাম্মদ হোসাইন ওরফে মিথুনের এক দিনের রিমান্ডে মঞ্জুর করেছেন আদালত। আরেক মামলায় মিথুনের এক সমর্থক বশির ইসলামের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। গ্রেপ্তার অন্য পাঁচ জনের রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। 

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন। 

আরো পড়ুন: গ্রেপ্তার মিথুনকে থানা থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা, ৮ পুলিশ আহত

আরো পড়ুন:

যুবদল কর্মী শাওন হত্যা মামলায় এসআই কনক রিমান্ডে

 
ফের রিমান্ডে রাজশাহীর সাবেক এমপি আসাদ

কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলেন- মোহাম্মদ হাসান (২১), মোহাম্মদ ইমন (২৫), মাসুম মাহমুদ (৩২), মোহাম্মদ আলামিন (৩০) ও আকবর আলী (২১)।

এদিন সাত আসামিকে আদালতে হাজির করে নিউমার্কেট থানা পুলিশ।

মিথুনের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার সাব-ইন্সপেক্টর বায়েজিদ বোস্তামী। অপর ছয় আসামির তিনদিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন একই থানার অপর সাব-ইন্সপেক্টর এরশাদ হোসাইন। 

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকা থেকে মিথুনকে গ্রেপ্তার করে নিউমার্কেট থানায় আনা হয়।

মিথুনের মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, আসামিরা ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন সময়ে মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারে দলবদ্ধ হয়ে এসে মার্কেটের ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা দাবি করতে থাকে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামিরা মার্কেটের ব্যবসায়ীদের নানাভাবে ভয়-ভীতি ও হুমকি দিয়ে হয়রানি করেন। গত ১০ জানুয়ারি রাত ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে আসামিরা এলিফ্যান্ট রোডের রাস্তায় ব্যবসায়ী এহতেশামুল হকের ওপর হামলা করে। হামলায় তিনি শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মকভাবে জখম প্রাপ্ত হন। এ ঘটনায় এলিফ্যান্ট রোড কম্পিউটার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ওয়াহেদুল হাসান দীপু ১০ জনের নাম উল্লেখসহ নাম না জানা ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে নিউমার্কেট থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। 

অপর মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত শুক্রবার ভোর ৪ টার দিকে একটি মামলার গ্রেপ্তার আসামি মো.

হোসাইন ওরফে মিথুনকে নিউমার্কেট থানার গেইটে আনলে এজাহারনামীয় আসামিরা কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের উপর লাঠি, লোহা, রড, চাপাতি নিয়ে হামলা করে। আসামিদের আক্রমণে নিউমার্কেট জোনের সহকারী পুলিশ সুপার তারিক লতিফসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য জখম হন। এ ঘটনায় নিউ মার্কেট থানার উপ-পরিদর্শক মো. ওমর ফারুক ১৪ জন এজাহারনামীয় ও ৩০ থেকে ৩৫ জন নাম না জানা ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশের কর্তব্য পালনে বাধা প্রদান ও হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। 

ঢাকা/মামুন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ র কর ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনে সেনা তত্ত্বাবধানে নদী খনন

যশোরের দুঃখ ভবদহ জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের পথে হাঁটছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আশপাশের নদী খনন করা হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার জলাবদ্ধ এলাকা পরিদর্শনে এ কথা জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
পরিদর্শনে তাঁর সঙ্গে ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এ সময় রিজওয়ানা বলেন, ‘দুর্গত এলাকার মানুষ ও পানি বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানে সবকিছু করা হবে। এবার বর্ষায় জলাবদ্ধতা ঠেকাতে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে শিগগির ভবদহ এলাকার নদী খনন করা হবে।’
ভবদহের জলাবদ্ধতা প্রায় চার দশকের। ভুক্তভোগীরা জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানে টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (টিআরএম) চালু ও আমডাঙ্গা খাল সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে পাউবো পাম্প দিয়ে পানি বের করতে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও দূর হয়নি দুর্দশা।

তিন উপদেষ্টার আসার খবরে গতকালও ভবদহের ২১ ভেন্ট স্লুইসগেটের কাছে জড়ো হয়ে ভুক্তভোগীরা আবারও টিআরএম চালুর দাবি জানান। এক পর্যায়ে কয়েকজন টিআরএমের বিরোধিতা করে স্লোগান দিলে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। স্থানীয়দের দাবি, ঘের মালিকদের ভাড়া করা লোক বিক্ষোভ করেছেন।
ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, পাউবো কর্মকর্তারা ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসন করতে চান না। তারা সমস্যা জিইয়ে রেখে প্রতি বছর প্রকল্পের নামে শত শত কোটি টাকার ব্যবসা করতে চান। টিআরএম ছাড়া জলাবদ্ধতা দূর হবে না জেনেও এমন প্রকল্প মূলত স্থানীয় ঘের মালিকদের সুবিধার জন্য নিচ্ছে পাউবো। তবে এবার আমডাঙ্গা খাল খননের জন্য দরপত্র হয়েছে। এটি টিআরএমের অংশ। তিন উপদেষ্টা আসায় স্থায়ী সমাধান হবে বলে আমরা আশাবাদী।

পরিদর্শন শেষে ভবদহ কলেজ মাঠে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, ভবদহ সমস্যা রাতারাতি সমাধান করা যাবে না। তবে স্বল্পকালীন সমাধান হিসেবে আমডাঙ্গা খাল খনন করে পানি বের করা হয়েছে। ফলে অনাবাদি ২০ হাজারের মধ্যে প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে চলা সেচপাম্পের ৪৬ শতাংশ বিদ্যুৎ বিল কমিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ। এলাকার জন্য কৃষি ব্যাংকের ঋণের সুদ মওকুফে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ সময় উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান উপস্থিত অর্ধশতাধিক কৃষক। তারা উপদেষ্টাকে বলেন, পাউবো আপনাকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মূল বিষয় আড়াল করেছে। পানি নেমে যাওয়া জমির মাত্র ২০ শতাংশে ধান আবাদ হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ