সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন কাঠামো দশম গ্রেডে উন্নীত করার দাবিতে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে শাহবাগ ছেড়েছেন শিক্ষকেরা।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাত পৌনে ৮টায় রাজধানীর শাহবাগে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে থেকে ফিরে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষক প্রতিনিধি মনিবুল হক বসুনিয়া।

তিনি বলেন, “আজ আমরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবির স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টা বিদেশে অবস্থান করছেন। সেজন্য আমাদেরকে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষের অনুরোধের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। এর মধ্যে দশম গ্রেট বাস্তবায়নের ঘোষণা দিতে হবে। যদি এই সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হয় তাহলে এ পরবর্তী সময়ে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।”

আরো পড়ুন:

যমুনা অভিমুখে যেতে বাধা, প্রাথমিক শিক্ষকরা শাহবাগে

দশম গ্রেডের দাবিতে রাজপথে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা

তিনি আরো বলেন, “আমরা আর ঢাকায় আসবো না। স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে কর্মবিরতি পালন করব। তবে আমরা প্রত্যাশা করছি, এর মধ্যেই আমাদের এই দাবি বাস্তবায়ন করা হবে।”

এ সময় আরেক শিক্ষক প্রতিনিধি খাইরুন নাহার লিপি বলেন, “আমরা আজ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছি। তবে এর জেরে যদি দেশের কোন প্রান্তে আমাদের কোন সহকর্মীকে হয়রানি করা হয়  তাহলে আমরা রাস্তায় নেমে আসব। আমরা প্রত্যাশা করছি, আমাদের এই দাবি বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষ সদয় হবেন।”

এর আগে রাজধানীর জাতীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিক্ষকরা যমুনা অভিমুখে রওনা হলে শাহবাগে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। সেখানেই তারা বসে পড়েন। পরে সরকারের সঙ্গে কথা বলে যমুনায় স্মারকলিপি দিতে যাওয়ার অনুমতি পান বিক্ষোভরত শিক্ষকরা।

শুক্রবার সকাল থেকে রাজপথে রয়েছেন সরকারি প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা। তাদের দাবি একটাই- ‘পে-স্কেলের দশম গ্রেডে অন্তর্ভুক্তি’।‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি দিয়ে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন প্রাথমিকের শিক্ষকরা। বিশেষ করে ঢাকা ও আশপাশের জেলার শিক্ষকরাই সমাবেশ ভরে তোলেন। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে যোগ দেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।

প্রাথমিক শিক্ষকরা কয়েক বছর ধরে বেতন বৈষম্য দূরীকরণ ও দশম গ্রেডে উন্নীতকরণের জন্য আন্দোলন করে আসছে। ২০২৪ সালজুড়ে ঢাকায় অনেক কর্মসূচি দিয়েছে সরকারি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমন্বয় পরিষদ। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ছিল তেমন একটি কর্মসূচি। সেদিনই তারা দাবি পূরণের লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো.

আব্দুল হাকিমের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। তবে তাতে সাড়া দেয়নি সরকার।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দশম গ র ড শ ক ষকর সহক র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়েছে।

আজ বুধবার রাষ্ট্রপক্ষ পেপারবুক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে এ শুনানি শুরু করে। বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ শুনানি গ্রহণ করছেন।

এর আগে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে হাইকোর্টের প্রকাশিত কার্যতালিকায় দেখা যায়, বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলগুলো আজ বুধবার শুনানির জন্য কার্যতালিকাভুক্ত রয়েছে।

এর ধারাবাহিকতায় আজ বেলা ১১টার দিকে রাষ্ট্রপক্ষ পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) থেকে পড়ে শোনানোর মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু করে। রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শামীমা সুলতানা দিপ্তি পেপারবুক থেকে উপস্থাপন করছেন।

মামলায় ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালত রায় দেন। রায়ে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত এবং কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাগর দেব; কক্সবাজারের বাহারছড়ার মারিশবুনিয়া গ্রামের মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিন।

কোনো মামলায় বিচারিক আদালতে রায়ে আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত।

এ ছাড়া দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিদের জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল ও বিবিধ আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। সাধারণত ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের করা এসব আপিল ও আবেদনের ওপর একসঙ্গে শুনানি হয়ে থাকে।

সিনহা হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর রায়সহ নথিপত্র ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পৌঁছে, যা একই বছর ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।

অন্যদিকে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে ২০২২ সালে আসামিরা পৃথক আপিল ও জেল আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স মামলা শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) প্রস্তুত করতে হয়। পেপারবুক প্রস্তুতসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে প্রধান বিচারপতি মামলাটি শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টের ওই দ্বৈত বেঞ্চ নির্ধারণ করেন।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন কর্মকর্তা পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন সিনহা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ