শ্রেণিকক্ষ ও বেঞ্চ সংকট: খোলা আকাশের নিচে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান
Published: 24th, January 2025 GMT
দীর্ঘদিন ধরে শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষার্থীদের বসার জন্য বেঞ্চের সংকটে শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করতে বাধ্য হচ্ছেন জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার আকলাশ শ্যামপুর শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তাদের অভিযোগ, নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তীব্র শীত কিংবা ও তীব্র রোদে মাঠের মধ্যে ক্লাস নিতে হচ্ছে তাদের।
জানা গেছে, উপজেলার সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে আলমপুর ইউনিয়নে আকলাশ শ্যামপুর শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অবস্থান। ১৯৪৫ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সেই সময়ে স্থানীয় এবং ম্যানেজিং কমিটির উদ্যোগে শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করে সেখানে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হয়। পরবর্তী ১৯৯৪ এবং ২০১০ সালে পৃথক দুটি ভবন নির্মাণ করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।
ভবন দুটিতে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ, শিক্ষক কক্ষ, লাইব্রেরি, কম্পিউটার ল্যাব, ছাত্রীদের কমন রুম ও বিজ্ঞানাগার হিসেবে ব্যবহার করার কারণে শ্রেণিকক্ষের সংকট দেখা দেয়। বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ৯টি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন হয়। সেখানে ৬টি শ্রেণিকক্ষের মধ্যে শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে বসাতে হয়।
বিদ্যালয়ে পড়ুয়া ৮ম শ্রেণির ছাত্র রাহাদ হোসেন বলেন, গত বছর থেকে শ্রেণিকক্ষের পরিবর্তে খেলার মাঠে ক্লাস করতে হয়। অনেক সময় মাটিতে বসে ক্লাস করতে এসে বই, খাতাসহ পরনের কাপড়ে ধুলাবালি এবং কাদা জমে ময়লা হয়। এভাবে স্কুলে এসে পড়ালেখা করতে মন চায় না। দ্রুত শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করা প্রয়োজন।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিকুল আলম শফিক বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই বিদ্যালয়ের ব্যাপক সুনাম ও খ্যাতি রয়েছে। অথচ অবকাঠামো কম। খেলার মাঠে পাঠদান দেওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কথা শুনতে হয়। সার্বিক বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ভবন নির্মাণের দাবি জানাই।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজিজুল হাসান জোয়ারদার বলেন, প্রতিদিনের শিক্ষার্থীর উপস্থিতি হিসেবে ৯টি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন। সেখানে ৬টি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। বাকি ৩টি শ্রেণিকক্ষের অভাবে বিদ্যালয়ের মাঠে ক্লাস করাতে বাধ্য হচ্ছি। কয়েক বছর ধরে শ্রেণিকক্ষ সংকটের বিষয়টি জেলা, উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু কোনও সমাধান এখনও হয়নি।
জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিন বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে। সেখানে শ্রেণিকক্ষের সংকট দেখা দিয়েছে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে জেলাভিত্তিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য চাহিদা চাইলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ওই বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের ব্যাপারে জোর সুপারিশ করা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ভবন ন র ম ণ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ধানখেতে ইঁদুর মারার বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণ গেল কৃষকের
বরগুনার তালতলীতে ধানখেতে ইঁদুর মারার ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কাদের মুন্সী (৬৫) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের বড় আমখোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বড় আমখোলা গ্রামে বোরো ধান চাষ করেন একই গ্রামের সিদ্দিক ও নাসির মিয়া। তাঁরা ধানখেতে ইঁদুর মারার জন্য বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে রাখেন। এর পাশেই বোরো ধান চাষ করেন কৃষক কাদের মুন্সী। তিনি গতকাল বিকেল ৪টার দিকে তাঁর ধানখেত দেখতে গেলে আর বাড়ি ফিরে আসেননি। সন্ধ্যায় বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে রাত ৮টার দিকে ধানখেতে পাতা বৈদ্যুতিক ফাঁদের পাশে তাঁকে পাওয়া যায়। পরে স্বজনেরা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় নিহত ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ক্ষত দেখা যায়। এ ঘটনার পর থেকে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পাতা কৃষক সিদ্দিক ও নাসির মিয়া পলাতক।
নিহত কাদেরের ছেলে তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাবা বিকেলে ধানখেত দেখতে যান। পরে সন্ধ্যায় বাড়িতে না ফেরায় খোঁজাখুঁজি করি। একপর্যায়ে প্রতিবেশী সিদ্দিক ও নাসির মিয়ার খেতে পাতা বিদ্যুতের ফাঁদে বাবার মরদেহ দেখতে পাই।’
তালতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা আইরিন আলম বলেন, কৃষক কাদের মুন্সীকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তিনি মারা গেছেন।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল বলেন, নিহত কৃষকের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।