যশোর চৌগাছা উপজেলার বেড়গোবিন্দপুর বাওড়ে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে সাতজন আহত হয়েছেন। এসময় ঘটনাস্থলে পরিত্যাক্ত অবস্থায় একটি পিস্তল ও দুইটি মোটরসাইক উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুর ১২ টার দিকে ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছেন চৌগাছা থানার ওসি আনোয়ার হোসেন।

আহতরা হলেন- হুদপাড়া গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে শরিফুল (৩০), রবিউল ইসলামের ছেলে শাহদুল ইসলাম (৩০), চাঁদপুর গ্রামের অমির হোসেনের ছেলে কামরুল ইসলাম (৩২), পৌরসভার বিশ্বাস পাড়ার মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে উজ্জল হোসেন (৪০), কুটিপাড়ার মৃত মশিয়ার রহমানের ছেলে গোলাম মোস্তফা (৬০), কারিগর পাড়ার তাইজুল ইসলামের ছেলে আব্দুস সামাদ (৫৫) ও যশোর সদর উপজেলার আব্দুলপুর গ্রামের জহুর আলী ছেলে বিএনপি নেতা কালাম হোসেন (৫৭)। 

আরো পড়ুন:

কিশোরগঞ্জে জমি দখল নিয়ে সংঘর্ষ, যুবদল নেতাসহ আহত ১৫ 

সিলেটে তুচ্ছ ঘটনায় দু’ গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, উপজেলার বেড়গোবিন্দপুর বাওড়টিতে উপজেলা মৎসজীবী লীগের সভাপতি ও সদর ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল কাশেম সরকারি ইজারার মাধ্যমে মাছ চাষ করছেন। গত ৫ আগস্টের পরে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব সালাহউদ্দীন ও চৌগাছা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহিমকে ২০ শতাংশ লাভ্যাংশ দেওয়ার শর্তে মাছ চাষ করেন আবুল কাশেম। কিছুদিন আগে আবুল কাশেম যশোর জেলা বিএনপি নেতা কালাম হোসেনের কাছে বাওড়ের ২০ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দেন। 

আজ কালাম চৌগাছা বিএনপির একটি পক্ষের ১৫-২০ জনকে সঙ্গে নিয়ে বাওড়ে মাছ ধরতে যান। এসময় সালাউদ্দীন ও আব্দুর রহিমের লোকজন বাধা দেন তাদের। একপর্যয় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের সাতজন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে দুই পক্ষের লোকজন পালিয়ে যায়। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এক রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল ও দুইটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। 

ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, “গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে বাওড়ের মাছ লুট হয়ে যাচ্ছিল। বাওড়ে মাছ টিকিয়ে রাখতে প্রথমে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব সালাউদ্দীন ও চৌগাছা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহিমকে একটি চুক্তির মাধ্যমে সাময়িক সময়ের জন্য বাওড়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে বাওড় সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিএনপি নেতা কালামের কাছে বাওড়ের ২০ শতাংশ শেয়ার ৬০ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়।”  

উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ সালাম বলেন, “বাওড়ের যারা অঘটন ঘটিয়েছে সেটি তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। দল এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সাপোর্ট করবে না। যারা অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের ব্যাপারে জেলায় জানানো হবে। দল সিদ্ধান্ত নেবে।”

চৌগাছা থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, “বাওড়ের মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুটি মোটরসাইকেল ও এক রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। আইনী ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”

ঢাকা/প্রিয়ব্রত/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ব এনপ আহত ল ইসল ম ব এনপ র স ঘর ষ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

১৫ জেলেকে অপহরণের অভিযোগ, আটক ৩ বনদস্যু

বঙ্গোপসাগরের চিসখালি নামক স্থানে ট্রালারসহ ১৫ জেলেকে অপহরণ করেছে বনদস্যু মজনু বাহিনীর সদস্যরা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় আশপাশে থাকা অন্য ট্রলারের জেলেরা এগিয়ে এসে একটি বন্দুক ও ৩৬ রাউন্ড গুলিসহ তিন বনদস্যুকে আটক করে। পরে জব্দকৃত অস্ত্র এবং আটককৃতদের কোস্ট গার্ডের কাছে সোপর্দ করেন তারা।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে দুবলার চর ফিসারম্যান গ্রুপের সভাপতি কামাল উদ্দিন আহম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে, গতকাল সোমবার রাতে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের মান্দরবাড়িয়ার চিসখালি নামক স্থানে মাছ ধরার সময় জেলেদের অপহরণের ঘটনাটি ঘটে।

আরো পড়ুন:

বিএনপি মামলা বাণিজ্য শুরু করেছে: ইব্রাহীম মোল্লা

রূপগঞ্জে আড়ত দখল নিয়ে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৬

আটক জলদস্যুরা হলেন- মাইজে ভাই হিসেবে পরিচিত জাহাঙ্গীর হোসেন, শ্যামনগর উপজেলার আব্দুল আজিজের ছেলে রবিউল ইসলাম ও রহমত আলী। তারা তিনজন আত্মসমর্পণকারী বনদস্যু মজনুর দলের সদস্য।

দুবলার চর ফিসারম্যান গ্রুপের সভাপতি কামাল উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, “দুবলার চরের আলোকোল থেকে জেলেরা কয়েকটি ট্রালার নিয়ে মান্দরবাড়িয়ার বাহির সাগরের চিসখালি নামক স্থানে মাছ ধরতে যান। গতকাল রাতে বনদস্যু মজনু বাহিনীর ১০-১৫ জন সদস্য দুটি ট্রলারে এসে মাছধরা অবস্থায় জেলেদের ওপর হামলা চালায়। অস্ত্রের মুখে তারা ১৫ জেলেকে অপহরণ করে একটি ট্রলারে করে নিয়ে যায়।”

তিনি আরো বলেন, “এসময় আশপাশে থাকা মাছ ধরা অন্য ট্রলার এগিয়ে আসে। ওইসব ট্রলারের জেলেরা একটি বন্দুক ও ৩৬ রাউন্ড গুলিসহ তিন বনদস্যুকে আটক করে। পরে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক জলদস্যুদের সুন্দরবনের কোস্ট গার্ডের কাছে সোপর্দ করেন তারা। অপহৃত জেলেদের এখনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।”

শ্যামনগর থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবীর মোল্লা বলেন, “আটক বনদস্যুদের বাগেরহাটের মোংলা থানায় হস্তান্তর করেছে কোস্ট গার্ডে। এখনো অপহৃতদের পরিবার আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি। কোস্ট গার্ড অপহৃতদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৮ রুটের বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার
  • ন্যায্য মূল্যের পণ্য থেকে সাধারণ নাগরিকদের বঞ্চিত করায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল
  • ১৫ জেলেকে অপহরণের অভিযোগ, আটক ৩ বনদস্যু