বিপিএল দিয়ে জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন দেখছেন সাব্বির
Published: 24th, January 2025 GMT
ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফরমেন্স দেখিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলতি আসরে আলো ছড়াচ্ছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের মিডল অর্ডার ব্যাটার সাব্বির রহমান। কঠোর পরিশ্রম ও নিবিড় অনুশীলনের ফল হিসেবে নিজেকে আবারও প্রমাণ করতে পেরে জাতীয় দলে অন্তত পাঁচ থেকে সাত বছর খেলার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
গণমাধ্যমকে সাব্বির বলেন, ‘সবকিছু আল্লাহর উপর নির্ভর করে। কঠোর পরিশ্রম আর প্রস্তুতিতে মনোযোগ দিয়েছি। বিপিএলে আমার পারফরমেন্স দেখাতে পেরেছি। এখনও আমাদের দু'টি ম্যাচ বাকি আছে, সেই ম্যাচগুলোতেও ভালো খেলার চেষ্টা করব। এই ফর্ম ধরে রাখাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
২০১০ সালে এশিয়ান গেমসে স্বর্ণপদক জয়ী দলের হয়ে নজরকাড়া পারফরমেন্স দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আলোচনায় আসেন সাব্বির। তার ১৮ বলে অপরাজিত ৩৩ রানের ইনিংসে বাংলাদেশ দল শেষ পাঁচ ওভারে ৪৪ রান তোলে। পরবর্তীতে সাব্বির টি-টোয়েন্টি, ওয়ানডে এবং টেস্ট ফরম্যাটে নিজের দক্ষতা দেখান। তবে ২০১৯ সালের পর থেকে ফর্মহীনতায় ভুগতে শুরু করেন এবং জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন।
৩২ বছর বয়সী সাব্বির মনে করেন জাতীয় দলের বাইরে থাকা অবস্থায় অনুশীলন চালিয়ে যাওয়া কঠিন। তিনি বলেন, ‘জাতীয় দলে সাত বছর খেলার অভিজ্ঞতা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। জানতাম কীভাবে এবং কখন কাজ করতে হবে। রাজশাহীর মাঠে প্রতিদিন সকাল ৫টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নিজ উদ্যোগে অনুশীলন করেছি। এতে অনেক অর্থও বিনিয়োগ করতে হয়েছে।’
সাব্বির আরও জানান, স্থানীয় কোচদের ব্যস্ততার কারণে তিনি তাদের সাথে অনলাইনে যোগাযোগ করে নিজের অনুশীলনের ভিডিও পাঠিয়েছেন এবং তাদের মতামতের ভিত্তিতে কাজ করেছেন।
চলতি বিপিএলে চট্টগ্রামের বিপক্ষে ৩৩ বলে ৮২ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে নিজের সামর্থ্য আবারও প্রমাণ করেন সাব্বির। তার ইনিংসে ভর করে ঢাকা ক্যাপিটালস টানা ছয় ম্যাচের হার থেকে ঘুরে দাঁড়ায়। এর পরের ম্যাচে লিটন দাস ও তানজিদ তামিমের জোড়া সেঞ্চুরিতে দলটি বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৫৪ রানের রেকর্ড গড়ে।
সাব্বির বলেন, ‘এটি একটি দলগত খেলা। আমাদের এখনও দুটি ম্যাচ বাকি। প্লে-অফে জায়গা পেতে হলে সেগুলোতে জয়ী হতে হবে এবং অন্য দলের ফলাফলের দিকেও নজর রাখতে হবে। যদি দল হিসেবে খেলি, তবে জয় সম্ভব।’
সাব্বির মনে করেন এবারের বিপিএল আগের আসরগুলোর চেয়ে আলাদা। তিনি বলেন, ‘এই আসরে ২০০ বা তার বেশি রান করেও দলগুলো নিরাপদ নয়। কারণ প্রতিপক্ষ সহজেই সেই রান তাড়া করছে। ঢাকার উইকেটসহ সিলেট ও চট্টগ্রামের উইকেটও ব্যাটিংয়ের জন্য দারুণ ছিল। এতে ব্যাটসম্যানরা যেমন উপভোগ করেছে, তেমনি দক্ষ বোলারদের জন্যও চ্যালেঞ্জ রয়েছে।’
জাতীয় দলে ফেরার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিয়ে সাব্বির আরও বলেন, ‘আমার এখনও অনেক কিছু দেওয়ার বাকি। অন্তত পাঁচ থেকে সাত বছর দেশের হয়ে খেলতে চাই। এজন্য আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করব।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব ব র রহম ন ব প এল জ ত য় দল ব প এল
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে চট্টগ্রামে অনশনে বৈষম্যবিরোধীরা
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ জড়িত সবার ফাঁসির দাবিতে অনশন করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর জামালখানে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এ অনশন শুরু করেন তারা। পরে প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। রাত সাড়ে ৮টা এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অনশন চলছিল। এর আগে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য রাসেল আহমেদ বলেন, ‘বিপ্লবের ছয়মাস পূরণ হতে যাচ্ছে। আমরা এখনও এ সরকারের কাছে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। আমাদের ভাইদের রক্ত এখনও রাজপথে লেগে আছে। আমি এখানে বসলাম, যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেবে না আমরা এখান থেকে উঠব না। আমাদের লড়াই চলছে, চলবে। আমরা আমাদের আমরণ অনশন চালিয়ে যাব। আমরা বিচার চাই। বিচার ছাড়া কোনো কথা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ সরকার আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় বসেছে। ইউনূস সরকার কি করে। খুনি বাইরের দেশে বসে আছে। তাদের ধরে এনে ফাঁসির দড়িতে ঝুলাতে হবে। এটাই আমাদের শেষ কথা।’
রাসেল আহমেদ বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে যেভাবে ফ্যাসিবাদী কাঠামো গড়ে উঠেছিল, সেটাকে ভেঙে দিয়ে খুনি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমরা রাজপথে নেমে এসেছিলাম। এখন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে আমরা ন্যূনতম সংস্কার ও বিচার পাইনি। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আমাদের দুই হাজারের অধিক ভাই জীবন দিয়েছে। তারা রাজপথে সাহসিকতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের পেটোয়া বাহিনী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল।’
রাসেল আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার পর এখনও আমাদের খুনি হাসিনা, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের বিচারের দাবিতে রাজপথে নামতে হয়। আমাদের এ মুক্ত বাতাসে এখনও লাশের গন্ধ ভেসে বেড়ায়। বারবার আমাদের তাদের বিচারের দাবিতে আওয়াজ তুলতে হচ্ছে। এ অন্তর্বর্তী সরকারকে সেসব খুনিদের বিচার করার জন্যই ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। আজও ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুণ্ডাবাহিনী বীর চট্টলার বুকে মিছিল করেছে। খুনি হাসিনাসহ আমাদের ভাইদের যারা খুন করেছে, তাদের বিচার ও ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে এখন থেকেই আমরণ অনশন পালন করব।’
আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাকিলা সোলতানা বলেন, ‘এখনো তারা সড়কে আছেন। তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে।’
অনশনকারীদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- দ্রুত বিচার আইনে বিভাগীয় ট্রাইব্যুনাল গঠন করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ও উস্কানিদাতাদের গ্রেপ্তার-বিচার করা, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত এনে বিচার করা, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা করা, সব হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, অপরাধ ও নির্যাতনের বিচার করা, আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, আওয়ামী লীগ নেতাদের অবৈধভাবে অর্জিত সব অর্থ ও সম্পদ রাষ্ট্রীয়ভাবে বাজেয়াপ্ত করা, বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনা, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জীবনের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে গ্রহণ করতে হবে ও নতুন সংবিধান প্রণয়ন করাসহ রাষ্ট্রের যাবতীয় গণতান্ত্রিক সংস্কারের রূপরেখা প্রদান করতে হবে।