নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হামলায় পাবনায় ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আহত
Published: 24th, January 2025 GMT
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ইব্রাহিম হোসেন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে পাবনার ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের সামনে তার ওপর হামলা হয় বলে ফেসবুক লাইভে এসে নিজেই জানান ইব্রাহিম হোসেন।
ঈশ্বরদী থানার ওসি শহিদুল ইসলাম শহিদ বলেন, “এ ঘটনায় শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ১১টা পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে কারখানায় হামলা-ভাঙচুর, ২ শ্রমিক আহত
ফরিদপুরে হামলায় ৩ ডিবি পুলিশ আহত
আহত ইব্রাহিম হোসেন ঈশ্বরদী পৌর শহরের পূর্বটেংরি এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে। তিনি পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
এলাকাবাসী জানায়, গতকাল রাত ১০টার দিকে ইব্রাহিম ও তার এক বন্ধু কলেজের সামনে বসে চা পান করছিলেন। এসময় ৩-৪ জনের একটি দল হাতে লাঠি নিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আহত অবস্থায় ইব্রাহিমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আহত সমন্বয়ক ইব্রাহিম হোসেন তার ফেসবুক আইডিতে একটি লাইভ ভিডিওতে হামলার ব্যাপারে জানান, পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাকিল হোসেনসহ আরো কয়েকজন লাঠি নিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় শাকিল তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র বের করে গুলি করার চেষ্টা করলে স্থানীয়দের তোপের মুখে পালিয়ে যান। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন।
ওসি শহিদুল ইসলাম শহিদ বলেন, “ঘটনাটি শোনামাত্রই আমরা ঘটনাস্থলে যাই। নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হামলার বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।”
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সংস্কার-নির্বাচনের খেলা বাদ দিয়ে বিচার করুন: সারজিস
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, সংস্কার না নির্বাচন আপনারা এই খেলা বাদ দিয়ে বিচার নিশ্চিত করুন। বর্তমান সরকারের বৈধতা হচ্ছে শহীদরা। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের হত্যাকাণ্ডের বিচারের আগে বাংলাদেশে কোনো কিছু প্রাসঙ্গিক হতে পারে না।
শুক্রবার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক সমাবেশে এ কথা বলেছেন তিনি। ‘জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে’ এই সমাবেশের আয়োজন করে ইনকিলাব মঞ্চ।
শাহবাগে এই উন্মুক্ত প্রান্তরে তারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের যে দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছেন, সেটা ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে পূরণ হওয়ার কথা ছিল বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন সারজিস আলম। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যখনই তাদের কাছে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা বলি, তারা আমাদের পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গির দোহাই দেয়।’
এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘যখন শাপলা চত্বর, পিলখানা এবং জুলাইয়ে হাজারো মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, তখন পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কোথায় ছিল?’
তবে সারজিস আলম তার বক্তব্যে আওয়ামী লীগ নিয়ে এই অবস্থান ব্যক্তকারী হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা উপদেষ্টা কিংবা পশ্চিমা কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেননি।
এ সময় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে সারজিস বলেছেন, ‘এই জেনারেশনকে (প্রজন্ম) ভয় করুন। যদি এই জেনারেশনের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আবেগ নিয়ে খেলা করেন, তাহলে এই জেনারেশন সকল ক্ষমতার বিপক্ষে গিয়ে যে কাউকে টেনেহিঁচড়ে ক্ষমতা থেকে নামাতে পারে।’
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদির সঞ্চালনায় সভায় শহীদ পরিবার এবং আহতরা, এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, আপ বাংলাদেশের সংগঠক আলী আহসান জুনায়েদ, ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের সেক্রেটারি শেখ মাহবুবুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশ থেকে চারটি দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো- আগামী ১০০ দিনের মধ্যে জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার শুরু করতে হবে এবং আওয়ামী লীগকে নির্বাহী আদেশ, আদালতের রায় ও রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। শাপলা চত্বরের ঘটনার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের সহায়তায় একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে শহীদদের তালিকা প্রকাশ ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে; পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে গঠিত কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সুপারিশমালা বাস্তবায়ন করতে হবে এবং দেশের সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগের গণহত্যার বিচারের বিষয়ে স্পষ্ট ধারা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।