আড়াইহাজারে পুলিশ কনেস্টবল ও মাদক ব্যবসায়ীকে পুলিশে দিলো জনতা
Published: 24th, January 2025 GMT
আড়াইহাজারে ছিনতাই ও মাদক ব্যবসায় সহযোগিতার অভিযোগে ইমরান হোসেন নামে এক পুলিশ কনেস্টবল ও মাদক ব্যবসায়ী মাসুমকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা। আটক পুলিশ সদস্য ইমরান হোসেন জেলার রূপগঞ্জ থানায় কর্মরত। তিনি একসময় আড়াইহাজারে কর্মরত ছিলেন।
মাসুম উপজেলার মারুয়াদী দেওয়ানপাড়া গ্রামের নাঈমের ছেলে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের মারুয়াদী এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
স্থানীয়রদের অভিযেগ, আটক ইমরান দীর্ঘদিন ধরে আড়াইহাজারের ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের মারুয়াদী এলাকায় স্থানীয় অপরাধীদের সঙ্গে মিশে বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিলেন। পুলিশের পোশাক ও হাতকড়া ব্যবহার করে ছিনতাই ও মাদক ব্যবসায় সহযোগিতা করতেন তিনি।
আড়াইহাজার থানার ওসি এনায়েত হোসেন বলেন, আটক ইমরান হোসেনকে ঘটনাস্থলে কী কারণে গিয়েছেন তা জানা যায়নি। আমরা তাকে রূপগঞ্জ থানায় সোপর্দ করেছি।
নারায়ণগঞ্জ সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) মেহেদী হাসান বলেন, সন্দেহজনকভাবে একজন পুলিশ কনেস্টবলকে আটক করা হয়েছে। জনগণের দাবি, তিনি ওই এলাকায় এসে বিভিন্ন অপকর্ম করছিলেন। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব যবস য় ন র য়ণগঞ জ ইমর ন
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী দোসরা বিএনপির ব্যানারে, নানা অপকর্ম : ক্ষোভ
সিদ্ধিরগঞ্জে ৫ আগস্টের পর একটি অপরাধী বাহিনী সংগঠিত হয়েছে। এই বাহিনীর সদস্যরা পতিত আওয়ামী দোসর হিসেবে চিহ্নিত ছিলো। ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর নিজেদের বিএনপির লোক পরিচয় দিয়ে গত ৫ মাস ধরে নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে তারা। এতে বিএনপির ভাবমূর্তি বিনস্ট হচ্ছে।
তাদের বিচরণ আদমজী ইপিজেড, কদমতলী, সিদ্ধিরগঞ্জ পুল, মিজমিজি ক্যানেলপাড়, চিটাগাংরোড ও হিরাঝিল এলাকায়। এই বাহিনীর সদস্যরা হলো-সিদ্ধিরগঞ্জের ২নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহসভাপতি সোহাগ, আওয়ামী লীগ কর্মী শেফা, যুবলীগ কর্মী বাদল, ফিরোজ, নিশান, আকতার, রিতু, লিটন, আলম, সুমন এবং জাতীয় পার্টির বর।
এই বাহিনীর নেতৃত্বে রয়েছে আদমজীর লোহা চোর আকরাম। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও বিএনপির ভাবমূর্তি নস্ট করার জন্য লোহা চোর আকরাম এই বাহিনী গড়ে তুলেছে।
তবে স্থানীয় বিএনপি বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, আকরাম হোসেন ওরফে লোহা চোর আকরামের নানা অপকর্মের ইঙ্গিত পেয়ে সম্প্রতি গিয়াস উদ্দিন তাকে নিজের কাছ থেকে দুরে সরিয়ে দিয়েছেন।
তাছাড়া ৫ আগস্টের পর একটি গোয়েন্দা সংস্থার গোপন তদন্তে আদমজী ইপিজেডে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টাকারী হিসেবে লোহা চোর আকরামের নাম উঠে আসে।
তারা আরও জানান, গিয়াস উদ্দিন লোহা চোর আকরামকে সরিয়ে দেয়ায় এবং বিএনপির কোন নেতাকর্মী তার সাথে না থাকায় সে আওয়ামী দোসদের নিয়ে এই বাহিনী গড়ে তুলেছেন। এই বাহিনীর সদস্যরা আকরামের পুর্ব পরিচিত।
আকরাম নিজেকে বিএনপির নেতা পরিচয় দিলেও বিএনপিতে তার কখনো কোন পদপদবী ছিল না এবং বর্তমানেও নাই বলে জানিয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির একাধিক নেতা।
এদিকে স্থানীয়দের তথ্যমতে, সোহাগ হচ্ছে লোহাচোর আকরামের শ্যালক। সে সিদ্ধিরগঞ্জের দুই নং ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহসভাপতি।
আওয়ামীলীগ আমলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়ার সাথে সখ্যতা থাকায় সানারপাড় ও মৌচাক বাসস্ট্যান্ডে ব্যাপক চাঁদাবাজি করে। এবং সবশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হাজী ইয়াছিন মিয়ার সাথে সকল আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়েছে।
সেই সকল ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ঘাটলেই পাওয়া যাচ্ছে। ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগের পতনের পর কিছুদিন গা-ঢাকা দিয়ে ছিল। পরে আকরামের শেল্টারের প্রকাশ্যে আসে।
১৯ ডিসেম্বর ইপিজেডের সামনে মিনিবাসস্ট্যান্ডে কথিত মানবাধিকার সংগঠনের শীত বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানের মঞ্চে আকরামের সাথে সোহাগকে দেখা যায়। বতর্মানে লোহা চোর আকরামের পক্ষে আদমজী ইপিজেডে ফ্যাক্টরীর কর্মকর্তাদের হুমকি-ধামকি দিয়ে ব্যবসা দেখা শোনা করে।
শেফা সুমিলপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। পুতা ফিরোজ ছিল নারায়ণগঞ্জ জেলা বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি সিরাজ মন্ডলের সাথে। নিশান সিরাজমন্ডলের সহযোগি সম্রাটের সাথে থেকে ইপিজেডে ব্যবসা করেছে। মাদক সেবন ও বিক্রির সাথেও সে জড়িত।
আওয়ামী লীগ কর্মী হিসেবে বাদল দীর্ঘদিন আদমজী ইপিজেডে ব্যবসা করেছে। ৫ আগস্টের পর আকরাম তাকে দলে টানে। এখন সে আকরামের অফিসিয়াল কাজকর্ম দেখা শোনা করে। লিটন আকরামের সাথে গাড়িতে থাকে। থানায় আকরামের সোর্স হিসেবে কাজ করে। থানার গোপন খবরা খবর ও তথ্য আকরামের কাছে পাচার করে।
রিতু আকরামের অগ্নিপতি। সে বীরমুক্তি যোদ্ধা নান্নুর ছেলে যুবলীগকর্মী আল আমিনের সাথে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে আদমজী ইপিজেডে ব্যবসা করেছে। যুবলীগের পরিচয়ে রিতু ইইপজেডে ব্যবসা করলেও এখন আকরামের অর্থনৈতিক বিষয় দেখা শোনা করে।
সুমন আকরামের কথিত ভাতিজা পরিচয়ে ইপিজেডে হুমকি-ধামকি দিয়ে ব্যবসা দখল করার মিশনে থাকে সব সময়। আকতার যুবলীগের খোকনের কর্মী ছিল। এখন আকরামের জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করে।
আলম ইপিজেডে সারাদিন ঘুরাঘুরি করে ব্যবসা খোঁজ রাখে। এবং আকরামকে সেই তথ্য দেয়। জাতীয় পাটির রব কদমতলী দশ তলার সামনে জায়গা দখল করে অবৈধভাবে গড়ে তোলা আকরামের কাঁচাবাজর থেকে টাকা তুলতো। কিন্তু সোমবার সেই বাজার উচ্ছেন করে দেয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী আরও জানায়, হীরাঝিল এলাকার লোহা চোর আকরামের অফিসে বসেই সকল অপকর্মের শলাপরামর্শ হয়। এবং আদমজী ইপিজেডের পাশে মিনিবাস স্ট্যান্ডে কথিত মানবাধিকার অফিসে বসে আড্ডাবাজি ও ইপিজেডে আসা যাওয়ার পথে নারী শ্রমিকদের ইভটিজিং করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই অফিসে আকরাম বাহিনীর সদস্যরা আড্ডাবাজি করে।
আকরাম তার এই বাহিনীকে দিয়ে কদমতলী দশতলার সামনে ৯৫ শতাংশ জায়গা দকল করে রাতের অন্ধকারে কাচাবাজার গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে জমির মালিক এক ঘন্টার নোটিশে সেই বাজার উচ্ছেদ করে দেয়। কিন্তু আকরাম ঘটনাস্থলে যায়নি ক্ষুদ্র ব্যবসায়িদের রোষানলের ভয়ে।
ওই ব্যবসায়িরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে উচ্ছেদের সময় অভিযোগ করেন। মোটকথা আকরাম বাহিনীর নানা অপকর্মের কারণে সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপির ভাবমূর্তি নস্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।