ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি-নবজাতকের মৃত্যু, হাসপাতাল ভাঙচুর
Published: 24th, January 2025 GMT
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া ডিজিটাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর মরদেহ ফেলে পালিয়েছে ডাক্তারসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা হাসপাতালে গিয়ে ভাঙচুর চালিয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে ফুলছড়ি উপজেলার বাগবাড়ী গ্রামের কছের সরদারের মেয়ে ও সবুজ মিয়ার স্ত্রী শিরিন আক্তারকে (২৬) ডেলিভারির জন্য সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া ডিজিটাল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ভর্তির পর কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রসূতি মাকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ডেলিভারি করার সিদ্ধান্ত নেন।
এতে প্রসূতির স্বজনরা রাজি হলে চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়। এসময় পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ছাড়াই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের চেষ্টা করান তারা। ফলে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে প্রসূতির নবজাতক মেয়ের মৃত্যু হয়। পরে স্থানীয়রা হাসপাতালে হামলা করলে হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যায়। পরে রক্তের প্রয়োজনে হলে চিকিৎসক না থাকায় রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। রাত ১২টায় প্রসূতি মায়েরও মৃত্যু হয়।
প্রসূতির স্বজন ও স্বামী সবুজ মিয়ার অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। এই হাসপাতালে গত ৩ বছরে ১০ জনের বেশি রোগী ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। তাই হাসপাতালে বন্ধ করাসহ প্রসূতি মা ও নবজাতক হত্যার বিচারের দাবি জানাই।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মনোরঞ্জন কুমার বর্মন জানান, ঘটনাটি তদন্তের মাধ্যমে হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এই বিষয়ে সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম জানান, এই বিষয়ে ভুক্তভোগীর কোনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: ৬৫৩১ জনের ফলাফল বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের শুনানি কাল
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে নিয়োগ দিতে ৬ হাজার ৫৩১ জনের প্রকাশিত ফলাফল বাতিলসংক্রান্ত রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) শুনানির জন্য আগামীকাল সোমবার দিন রাখা হয়েছে।
আবেদনকারীপক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ দিন রাখেন।
এর আগে এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে ৬ হাজার ৫৩১ জনকে নিয়োগ দিতে প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফল এবং নির্বাচিত ব্যক্তিদের অনুকূলে নিয়োগপত্র ইস্যুর সিদ্ধান্ত আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গত বছরের ২৩ জুলাইয়ের পরিপত্র অনুসরণ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নতুন করে ফলাফল প্রকাশ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে নিয়মিত লিভ টু আপিল করা হয়। লিভ টু আপিলটি গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। সেদিন চেম্বার আদালত লিভ টু আপিলটি ২ মার্চ আপিল বিভাগে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। লিভ টু আপিলটি আদালতের আজকের কার্যতালিকায় ১৪ নম্বর ক্রমিকে ছিল।
আদালতে লিভ টু আপিলকারী পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক দিন সময় মঞ্জুর করে আদালত আগামীকাল (সোমবার) শুনানির জন্য রেখেছেন।’
২০২৩ সালের ১৪ জুন এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর ৬ হাজার ৫৩১ প্রার্থীকে নির্বাচন করে গত বছরের ৩১ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত ১১ নভেম্বরের এ-সংক্রান্ত আদেশ অনুসারে নির্বাচিত প্রার্থীদের অনুকূলে ২০ নভেম্বর নিয়োগপত্র ইস্যু করার কথা ছিল। তবে এই নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা অনুসরণের অভিযোগ তুলে ফলাফল প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিয়োগবঞ্চিত ৩১ প্রার্থী গত বছরের নভেম্বরে রিট করেন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরে ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। ৩১ অক্টোবর ও ১১ নভেম্বরের সিদ্ধান্তের কার্যক্রম স্থগিত করেন।
রুলে ৩১ অক্টোবরের ফলাফল প্রকাশের বিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগ বিষয়ে ১১ নভেম্বরের নির্দেশনা সংবলিত স্মারক কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহাপরিচালকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
হাইকোর্টের আদেশ (৩১ অক্টোবর ও ১১ নভেম্বরের সিদ্ধান্ত স্থগিত) স্থগিত চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। যা গত ৯ ডিসেম্বর আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে দিয়ে হাইকোর্টে এ-সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি রায় দেওয়া হয়।