গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া ডিজিটাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর মরদেহ ফেলে পালিয়েছে ডাক্তারসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা হাসপাতালে গিয়ে ভাঙচুর চালিয়েছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে ফুলছড়ি উপজেলার বাগবাড়ী গ্রামের কছের সরদারের মেয়ে ও সবুজ মিয়ার স্ত্রী শিরিন আক্তারকে (২৬) ডেলিভারির জন্য সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া ডিজিটাল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ভর্তির পর কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রসূতি মাকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ডেলিভারি করার সিদ্ধান্ত নেন।

এতে প্রসূতির স্বজনরা রাজি হলে চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়। এসময় পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ছাড়াই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের চেষ্টা করান তারা। ফলে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে প্রসূতির নবজাতক মেয়ের মৃত্যু হয়। পরে স্থানীয়রা হাসপাতালে হামলা করলে হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যায়। পরে রক্তের প্রয়োজনে হলে চিকিৎসক না থাকায় রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। রাত ১২টায় প্রসূতি মায়েরও মৃত্যু হয়।

প্রসূতির স্বজন ও স্বামী সবুজ মিয়ার অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। এই হাসপাতালে গত ৩ বছরে ১০ জনের বেশি রোগী ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। তাই হাসপাতালে বন্ধ করাসহ প্রসূতি মা ও নবজাতক হত্যার বিচারের দাবি জানাই।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মনোরঞ্জন কুমার বর্মন জানান, ঘটনাটি তদন্তের মাধ্যমে হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এই বিষয়ে সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম জানান, এই বিষয়ে ভুক্তভোগীর কোনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.

সাজিয়া আফরিন জানান, বিষয়টি শুনেছি। বিস্তারিত জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের মতো আইনগত অধিকার পেল নিউজিল্যান্ডের পাহাড়

মানুষের মতো আইনগত অধিকার পেল নিউজিল্যান্ডের একটি পাহাড়। বহু বছর পর এমন আইন প্রণয়ন করা হয়। এর মানে তারানাকি মাউঙ্গা (মাউন্ট তারানাকি) নিজের মালিকানা কার্যকরভাবে পাবে। এটি পরিচালনায় একসঙ্গে কাজ করবে স্থানীয় উপজাতি, ইউয়ি এবং সরকারের প্রতিনিধিরা। খবর বিবিসির

এই আইন প্রণয়নের লক্ষ্য উপনিবেশ আমলে তারানাকি অঞ্চলে ভূমি বাজেয়াপ্ত, অবিচারের শিকার হওয়া মাওরিরা ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

আলোচনার জন্য সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী পল গোল্ডস্মিথ বলেছেন, ‘অতীতের ভুলের কারণে যে বেদনা রয়ে গেছে, তা আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। যাতে ইউয়িদের নিজস্ব আকাঙ্ক্ষা ও সম্ভাবনাকে উপলব্ধি করে তাদের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আমরা সহায়তা করতে পারি।’

গত বৃহস্পতিবার জীবন্ত সত্তা ঘোষণার তারানাকি মাউঙ্গা কালেক্টিভ রিড্রেস বিলটি নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টে পাস হয়। তাতে পর্বতটি একটি আইনি নাম পেয়েছে এবং এর আশপাশের চূড়া ও জমিকে দেওয়া হয়েছে সুরক্ষা।

পর্বত, পূর্বপুরুষ, জীবিত প্রাণীসহ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে যে মাওরি বিশ্বদর্শন রয়েছে, সেটির স্বীকৃতি মিলেছে বিলটি পাসের মধ্য দিয়ে।

রাজনৈতিক দল থে পাথি মাওরির (মাওরি পার্টি) সহ-নেতা ডেবি নারওয়ে-প্যাকা বলেন, ‘আমাদের মাউঙ্গা টুপুনা (পূর্বপুরুষের পর্বত) অবিচার, অজ্ঞতা ও ঘৃণার শৃঙ্খল থেকে আজ মুক্তি পেয়েছে।’

নারওয়ে প্যাকা নিউজিল্যান্ডের পশ্চিম উপকূলে আটজন তারানাকি ইউয়িদের মধ্যে একজন, যার কাছে পর্বতটি পবিত্র। এলাকাটির আরও শত শত মাওরি নাগরিক বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে উপস্থিত হয়েছিলেন বিলটির আইনি রূপান্তর দেখতে।

বিবিসি লিখেছে, পর্বতটি আর আনুষ্ঠানিকভাবে ‘এগমন্ট’ নামে পরিচিত হবে না, যে নামটি ১৮ শতকে দিয়েছিলেন ব্রিটিশ পরিব্রাজক জেমস কুক। এখন এটি ‘তারানাকি মাউঙ্গা’ নামে পরিচিত হবে। আর চারপাশ ঘিরে থাকা জাতীয় উদ্যানটিও পাবে মাওরি নাম।

যে চুক্তির মাধ্যমে নিউজিল্যান্ড একটি দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আদিবাসীরা জমি ও সম্পদের নির্দিষ্ট অধিকার পেয়েছিল; সেই ওয়েটাঙ্গি চুক্তি লঙ্ঘনের জন্য ক্ষতিপূরণের সর্বশেষ প্রয়াস তারানাকি মাউঙ্গা বন্দোবস্ত।

১৮৬০ এর দশকে তারানাকি পর্বত এবং স্থানীয় মাওরিদের কাছ থেকে ১০ লাখেরও বেশি একর জমি বাজেয়াপ্তের ঘটনায় সরকারের তরফে ক্ষমা প্রার্থনার অংশ হিসেবেও দেখা হচ্ছে এই বন্দোবস্তকে।

পল গোল্ডস্মিথ স্বীকার করেছেন যে, ‘চুক্তি লঙ্ঘনের অর্থ হল হোয়ানু (বৃহত্তর পরিবার), হাপু (উপ-উপজাতি) এবং তারানাকির ইউয়ির ব্যাপক পরিসরের ক্ষতি; যা বহু দশক ধরে অপূরণীয় হয়ে দাঁড়ায়।’

তিনি আরও বলেন, পর্বতটিতে প্রবেশাধিকার আর পরিবর্তন হবে না এবং নিউজিল্যান্ডের সব বাসিন্দা এই জায়গাটি পরিদর্শন করতে পারবে এবং আগামী প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্দান্ত এ জায়গাটি উপভোগ করতে পারবে। 

নিউজিল্যান্ডে এর আগেও প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের জীবন্ত সত্তার স্বীকৃতি পাওয়ার নজির রয়েছে। ২০১৪ সালে উরেওয়েরা বন প্রথম এই জাতীয় মর্যাদা অর্জন পায়। এরপর ২০১৭ সালে এমন স্বীকৃতি পায় হোয়াংগানুই নদী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানুষের মতো আইনগত অধিকার পেল নিউজিল্যান্ডের পাহাড়
  • নারী অধিকার লঙ্ঘনে যুক্ত থাকলে আইনগত ব্যবস্থা 
  • শেরপুরে ২০ টন নকল সার জব্দ
  • নাটোরে ঐতিহ্যবাহী গাঁওয়ালী শিরনি উৎসব