মাইজভাণ্ডার ওরশে লাখো ভক্তের মিলনমেলা
Published: 24th, January 2025 GMT
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে বিশ্বখ্যাত মাইজভান্ডার দরবার শরীফে ১১৯তম বার্ষিক ওরশ মাহফিল শুরু হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ওরশের প্রধান দিবসে সারাদেশে থেকে আসা লাখ লাখ ভক্ত অনুরাগিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে পুরো দরবারশরীফ।
উপমহাদেশের অন্যতম সুফী পীঠস্থান মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের অধ্যাত্ম শরাফতের প্রতিষ্ঠাতা ও মাইজভাণ্ডারী তরিকার মহান প্রবর্তক গাউছুলআজম মাইজভাণ্ডারী হজরত মাওলানা শাহসুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (ক.
জাতি-ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণী-পেশার সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে আত্মিক শুদ্ধি ও শান্তি প্রত্যাশী দেশ বিদেশের লক্ষ লক্ষ আশেক ভক্ত প্রতি বছর মাইজভাণ্ডার শরীফের সর্বপ্রধান ও সর্ববৃহৎ এই ওরশ শরীফকে উপলক্ষ্য করে সমবেত হয় দরবারে।
প্রতি বছরের মতো গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের মোন্তাজেম, জিম্মাদার ও সাজ্জাদানশীন আঞজুমানে মোত্তাবেয়ীনে গাউছে মাইজভাণ্ডারী কেন্দ্রীয় পরিষদের সভাপতি আলহাজ্ব শাহসুফি ডা. সৈয়দ দিদারুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)-এর সার্বিক ব্যবস্থাপানায় এ বছরও ওরশ শরীফ উপলক্ষে নানাবিধ ধর্মীয় ও সমাজকল্যাণমূলক কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার গাউছুলআজম মাইজভাণ্ডারীর (ক.) রওজা শরীফে গিলাফ চড়ানো, গোলাপ নির্বারণী, মিলাদ ও মোনাজাতের মাধ্যমে ওরশ শরীফের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বাদ এশা ‘মাইজভাণ্ডারী সাংস্কৃতিক পরিষদ’-এর উদ্যোগে জিকিরে সামা মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার ১০ মাঘ প্রধান দিবসে দিনব্যাপী কোরআনখানি ও জিকির দুপুর ১২ টায় মাইজভাণ্ডার শাহী ময়দানে কেন্দ্রীয় জুমার জামাত, বাদ এশা গাউছিয়া আহমদিয়া ভবন ময়দানে ‘শানে বেলায়েত মাহফিল’, রাত ১১ টায় গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারীর (ক.) দোয়ার মেহরাব হতে মিলাদুন্নবী, তাওয়াল্লাদে গাউছিয়া ও আখেরী মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। পরে উপস্থিত জায়েরীনদের মাঝে তাবারুক বিতরণের মাধ্যমে ওরশ শরীফের কার্যক্রম সমাপ্ত হবে।
ওরশ শরীফ সুপারভিশন কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী নায়েব মোন্তাজেম শাহজাদা সৈয়দ হোসেইন রাইফ নুরুল ইসলাম রুবাব মাইজভাণ্ডারী বলেন, “ওরশ শরীফ উপলক্ষে আগত আশেক ভক্তদের জন্য ইতোমধ্যে গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের পক্ষ হতে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল, পার্কিং, বৈঠক, নিরাপত্তা, স্যানিটেশন, আপ্যায়নসহ সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রশাসন ও এলাকাবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতার পাশাপাশি দরবারের পক্ষ হতে শত শত স্বেচ্ছাসেবকদের দল ওরশ শরীফের সমস্ত আয়োজন সুশৃঙ্খলভাবে সম্পাদন করার লক্ষ্যে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে।”
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, “ওরশ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে উপজেলা প্রশাসন হতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দরবারের আওলাদদের সাথে প্রশাসনিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা/রেজাউল/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত হয় ছ দরব র
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে, আহত ২
বিয়ানীবাজারে জামায়াত ও শিবির নেতাকর্মীর হামলার শিকার হয়ে পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার বিকেলে উপজেলার ঘুঙ্গাদিয়া গ্রামে উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আবুল খয়েরের বাড়িতে আসামি ধরতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই পুলিশ সদস্যকে জিম্মি করে রাখা হয়। খবর পেয়ে প্রায় ৫ ঘণ্টা পর তাদের উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- বিয়ানীবাজার থানার উপপরিদর্শক সৌরভ ও কনস্টেবল দেলোয়ার হোসেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল পৌর শহরের মাঝ বাজারে মতিন নামের এক যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করেন পৌরসভার নয়াগ্রামের জামিল আহমদ। এ ঘটনায় ওই দিন আব্দুল মতিন বাদী হয়ে বিয়ানীবাজার থানায় মামলা করেন। মামলায় একমাত্র আসামি করা হয় ঘুঙ্গাদিয়া গ্রামের জামিল আহমদকে।
গোপন সংবাদ পেয়ে পুলিশের এসআই সৌরভ ও কনস্টেবল দেলোয়ার হোসেন আসামি জামিল আহমদকে গ্রেপ্তারের জন্য ঘুঙ্গাদিয়া গ্রামে যান। এ সময় পুলিশ জানতে পারে, আসামি জামিল আহমদ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আবুল খয়েরের কেয়ারটেকার রুবেল আহমদের ঘরে অবস্থান করছেন। অভিযান চালাতে গেলে আবুল খয়ের তাদের বাধা দেন। বিনা অনুমতিতে অভিযান কেন করা হবে, সেটিও জানতে চান। একপর্যায়ে তিনি উপজেলা জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীকে বিষয়টি জানালে নেতাকর্মীরা আবুল খয়েরের বাড়ি ঘেরাও করে এসআই সৌরভ ও কনস্টেবল দেলোয়ারকে মারধর করেন।
খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ উজ্জামান এবং উপপরিদর্শক (তদন্ত) জুবেদ আলীসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে জিম্মিদশা থেকে দুই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, হঠাৎ চিৎকার শুনে তিনি সেখানে গিয়ে দেখতে পান, দুই পুলিশ সদস্য পৌর জামায়াতের নায়েবে আমির আবুল খয়েরের বাড়িতে বসে আছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে শত শত লোক এসে জড়ো হন। তারা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করেন। এমনকি মারধরও করেন। পরে জামায়াতের আমির তাদের ভেতরে নিয়ে যান। খবর পেয়ে থানার ওসি এলে রাত ৯টার দিকে তাদের ছাড়া হয়। শুনেছি, পুলিশ আসামির মোবাইল ট্র্যাকিং করতে করতে জামায়াত নেতার বাড়ি পর্যন্ত চলে আসে। একপর্যায়ে তারা বুঝতে পারে, ওই বাড়ির কেয়াটেকার রুবেলের রুমেই জামিলের অবস্থান।
এ বিষয়ে পৌর জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আবুল খয়ের সমকালকে বলেন, তার গাড়িচালক বাড়িতে পুলিশ আসার বিষয়টি তাকে জানান। এর পর তিনি পুলিশ সদস্যদের কাছে তার বাড়িতে আসার কারণ জানতে চান। তখন ওই দুই পুলিশ সদস্য তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। সংবাদ পেয়ে এলাকার লোকজন তার বাড়িতে চলে আসেন। তখন এলাকাবাসী অনেকটা উত্তেজিত হয়ে উঠলে তিনি ওই দুই পুলিশ সদস্যকে তার ঘরে নিরাপদে রাখেন। পরে ঘটনাস্থলে থানার ওসি ও উপপরিদর্শক (তদন্ত) এলে ওই পুলিশ সদস্যরা তার কাছে ভুল স্বীকার করেন। এমনকি তার সঙ্গে খারাপ আচরণের জন্য ক্ষমাও চান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, উপপরিদর্শক সৌরভ ও কনস্টেবল দেলওয়ারকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন মারধর করেছে। পরে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের একটি দল স্থানীয় জামায়াত নেতার বাড়ি থেকে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার থানার ওসি আশরাফ উজ্জামান সমকালকে বলেন, আমাদের লোকজন সেখানে অভিযানে গিয়েছিল। এ সময় এলাকাবাসীর সঙ্গে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।