জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, উন্নয়নের নামে আওয়ামী লীগ ২৬ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। সেই আ.লীগ ফ্যাসিস্টদের আশ্রয় বাংলার মাটিতে হবে না। সব হত্যার বিচার চাই। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন কাজ করা হবে, সত্যের পথে দেশ গড়ার জন্য জামায়াতের পাশে থাকবেন।

শুক্রবার বেলা ১১টায় কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে জেলা জামায়াতের আয়োজনে কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে। শেখ হাসিনা সবসময় জামায়াতের কর্মীদের টিকিট ধরাতে চেয়েছেন, কিন্তু তিনি নিজে টিকিট ছাড়া দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। তার যদি দেশপ্রেম থাকতো তাহলে মাটি কামড়ে আগলে থাকতেন। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করতে পারেননি।

জামায়াত আমির বলেন, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত দীর্ঘ ৫৩ বছরের প্রত্যেকটি খুন, গুম ও অপকর্মের বিচার বাংলার মাটিতে হবে। যারা বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মের মানুষকে অত্যাচার করেছে, জমি দখল করেছে, ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করেছে, অন্যায়ভাবে সম্পদ লুণ্ঠন, ইজ্জতে হাত দিয়েছে- তাদের তালিকা তৈরি করে জনগণের সামনে প্রকাশ করার দাবি করছি।

জামায়াতের এই আমির আরও বলেন, কুড়িগ্রামের বড়াইবাড়ি যুদ্ধের প্রতিশোধ নিতে ভারতের মদদে পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটনো হয়েছিল। তারা আজ আমাদের সীমান্ত জোর করে দখলে নিতে চায়। জামায়াতের নেতাকর্মীদের নামে সবসময় মিথ্যাচার করেছে আ.

লীগ ফ্যাসিস্ট সরকার। আমাদের নেতা আজহারুল ইসলামকে জোর করে আটকে রেখেছে। আমরা কারোর দয়া চাই না। আমরা আইনি লড়াইয়ে আমাদের প্রিয় নেতাকে মুক্ত করে আনবো। 

তিস্তা মহাপরিকল্পনার বিষয়ে জামায়াত আমির বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা আওয়ামী লীগ বাস্তবায়ন করতে পারেনি। আমরা তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে চাই। দেশের খেদমত করার সুযোগ আসলে আমরা এ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করবো। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় প্রতিবছর রংপুর বিভাগের এই অবহেলিত জেলাগুলো ডুবে যায়। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার ১৫ বছর শুধু একটি জেলাকে উন্নয়ন করেছে। এই রংপুর বিভাগের দিকে বৈষম্য করা হয়েছে। আমরা এই এলাকাগুলোতে একদিকে রেখে উন্নয়ন নিয়ে কাজ করবো।

পরে তিনি জেলা সদরের মডেল মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করে বিএসএফরের হাতে নিহত কিশোরী ফেলানী খাতুনের বাড়িতে যান।

জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আব্দুল মতিন ফারুকীর সভাপতিত্বে কর্মী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জামায়াত ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ব্যারিস্টার সালেহীন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ নাহিদ, রামকৃষ্ণ মিশনের জেলা সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা উদয় শংকর চক্রবর্তী প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম আওয় ম ল গ

এছাড়াও পড়ুন:

জয়-পরাজয়ের যাত্রাই জীবন: জাহিদা ফিজ্জা কবির

‘জয়-পরাজয়ের যাত্রাই জীবন, বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে চলাই একমাত্র সমাধান, একমাত্র শান্তি’- কথাগুলো দেশের শীর্ষস্থানীয় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান সাজিদা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী জাহিদা ফিজ্জা কবিরের। সাজিদা ফাউন্ডেশনের সূচনাকাল থেকে শক্ত হাতে প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন তিনি। নিজেকে তিনি ভাবেন এমন একজন মানুষ, যার কাছে রয়েছে সবার ঠাঁই। 
 
'সবার জন্য উদারতা এবং সহমর্মিতা রয়েছে আমার মধ্যে। কিন্তু একই সাথে, সবসময়ে ডুবে রয়েছি কাজে, ব্যস্ততায়। কাউকে দেওয়ার মতো খুব বেশি সময় হয়ে ওঠে না। যেন ঢেউয়ের মতো, কখনোই বিশ্রাম নেই, সবসময়ে নিবিষ্ট, নিমজ্জিত রয়েছি নিজের দায়িত্বে', বলেন জাহিদা ফিজ্জা কবির।

মাত্র ২ জন মানুষ নিয়ে শুরু করে এখন ৬ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে সাজিদা ফাউন্ডেশনে, আর এতে উপকৃত হচ্ছেন প্রায় ৬০ লাখ মানুষ, যাদের বেশিরভাগই নারী। 

'যখন দেখি নতুন প্রজন্ম আমার মূল্যবোধ নিজের মাঝে লালন করছে, মানুষের প্রতি যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করছে, তখন আমার গর্ব হয়। জীবনভর শ্রম দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেছি এবং এখন সেটি নতুন প্রজন্মের হাতে তুলে দেওয়া আমার জন্য গর্বের বটে', বলেন তিনি।  

জাহিদা ফিজ্জা কবির বলেন, 'আমি মনে করি, ঐক্যবদ্ধ নারীদের মাঝে রয়েছে কঠোর শ্রম এবং লক্ষ্য অর্জনের পূর্ণ ক্ষমতা। একতার মাধ্যমেই তারা নিজের প্রতিভা বিকশিত করে দেশ ও পৃথিবীর উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেন। নিজস্ব এই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নারীরা সমাজের কল্যাণে ভূমিকা রাখতে পারেন।'

ইউনিভার্সিটি অব দ্যা ফিলিপাইনস থেকে সোশ্যাল ওয়ার্ক বিষয়ে স্নাতক করেন জাহিদা ফিজ্জা কবির। এরপর ভারমন্টের স্কুল ফর ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইনিং থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড ইন্টারকালচারাল ম্যানেজমেন্টে। এছাড়া অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে তার একটি পিজি ডিপ্লোমা রয়েছে অর্গানাইজেশনাল লিডারশিপ বিষয়ে। 

সাজিদা ফাউন্ডেশনের পক্ষে 'আইকনিক কম্পানিজ ক্রিয়েটিং আ বেটার ওয়ার্ল্ড ফর অল' সম্মাননা পেয়েছেন জাহিদা ফিজ্জা কবির। ওম্যান্স ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডব্লিউআইসিসিআই) বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিল (বিআইবিসি) থেকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।


জরুরি পরিস্থিতিতে সহায়তা প্রদানের জন্য বহু বছর ধরে জাহিদ ফিজ্জা কবিরের সহায়তায় সাজিদা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কাজ করছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ। বিশ্ব নারী দিবস-২০২৫ এ 'এক্সেলারেট অ্যাকশন-  এম্পাওয়ার্ড ওমেন, এম্পাওয়ারিং দা ফিউচার' ক্যাম্পেইনে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে তার অবদান।

উন্নতির জন্য কাজ করে চলেছেন যে নারীরা- তাদের জন্য জাহিদা ফিজ্জা কবিরের বার্তা হলো, 'নিজের প্রতি মনোযোগী হতে হবে, জানতে হবে নিজের সুপ্ত প্রতিভা কোথায় এবং খুঁজে বের করতে হবে নিজের দুর্বলতাগুলো। কাজ করতে গিয়ে নিজের সুখ-শান্তি বিসর্জন দেওয়া যাবে না, নিজের যত্ন নিতে হবে, বজায় রাখতে হবে আত্মসম্মান। এতে করে সবার উপকার করা সহজ হবে। জীবনের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য থাকতে হবে স্পষ্ট।'
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জয়-পরাজয়ের যাত্রাই জীবন: জাহিদা ফিজ্জা কবির