হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গভীর অরণ্যে এশিয়াটিক ব্ল্যাক প্রজাতির একটি ভালুকের সন্ধান পাওয়া গেছে। বিরল এই প্রজাতির বন্য ভালুক অত্যন্ত আক্রমণাত্মক স্বভাবের হয়। এরমধ্যে বনের ভেতরে পর্যটকসহ জনসাধারণের প্রবেশে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে উদ্যান কর্তৃপক্ষ। 

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে এসব তথ্য দেন সাতছড়ি বন্যপ্রাণি বিট কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ।

মামুনুর রশিদ জানান, চুনারুঘাটের রঘুনন্দন পাহাড়ে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের অবস্থান। ২৪৩ হেক্টর আয়তনের এ উদ্যানের পাশ ঘেঁষে আছে ৯টি চা-বাগান। উদ্যানের ভেতরে টিপরা পাড়ায় পাহাড়ি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ২৪টি পরিবারের বসবাস। ১৯৭ প্রজাতির জীবজন্তু ও ১৫০ থেকে ২০০ প্রজাতির পাখি আছে উদ্যানে। বাংলাদেশের সংরক্ষিত এ বনাঞ্চল পাখিদের অভয়াশ্রম। বনের ভেতরে লজ্জাবতী বানর, উল্লুক, চশমাপরা হনুমান, মুখপোড়া হনুমান, কুলু বানর, মেছোবাঘ, মায়া হরিণও আছে।

সাতছড়ির টিপরা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বাসিন্দা হারিস দেববর্মা শৌখিন ফটোগ্রাফার হিসেবে পরিচিত। তিনি বনের ভেতরে প্রাণ-প্রকৃতির নানা ছবি তোলেন। সম্প্রতি তিনি উদ্যানের গভীর অরণ্যে ছবি তুলতে গিয়ে বিরল প্রজাতির বন্য ভালুকের (এশিয়াটিক ব্ল্যাক প্রজাতি) সন্ধান পান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি প্রাণীটির ছবি তোলেন।

হারিস দেববর্মা বলেন, “আমি বিরল প্রজাতির ভালুকটি দেখে বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে এই বনে ওদের বসবাস আছে। দেখা মাত্রই ছবি তুলতে দেরি করিনি। পরে সেই ছবি প্রাণী বিশেষজ্ঞদের দেখানোর পর নিশ্চিত হই যে প্রাণীটি এশিয়াটিক কালো ভালুক।”

বন বিভাগ বলছে, এশিয়াটিক ব্ল্যাক জাতের এ ভালুক বিলুপ্তপ্রায়। এরা অত্যন্ত আক্রমণাত্মক স্বভাবের হয়। বন বিভাগের কর্মকর্তাদের ধারণা, ছোট-বড় মিলিয়ে বনে এ প্রজাতির ১০ থেকে ১২টি ভালুক আছে। এ প্রজাতির ভালুকের কালো পশম, একটি হালকা বাদামি মুখ ও বুকে একটি স্বতন্ত্র সাদা বা ক্রিমি প্যাঁচ থাকে, যা কখনো কখনো ইংরেজি ‘ভি’ অক্ষরের মতো দেখতে হয়। প্রাপ্তবয়স্ক ভালুকের ওজন ৬০ থেকে ২০০ কেজি। গড় ওজন ১৩৫ কেজি। সর্বভুক এ প্রাণী পোকামাকড়, বিটল লার্ভা, অমেরুদণ্ডি প্রাণি। মৌমাছি, ঘাস, ছাল, শিকড়, কন্দ, ফল ইত্যাদি খায়।

বিট কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, “আমাদের ভিলেজার হারিস দেববর্মার মাধ্যমে আমরা প্রথম সাতছড়িতে এ ধরনের ভালুক থাকার বিষয়টি জানতে পারি। পরে আমরা অনুসন্ধান করে সত্যতা পাই। এটি বিরল প্রাণী। এটির সংরক্ষণে আমরা কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছি। পর্যটকদের উদ্যানের ভেতরে প্রবেশে নিরাপত্তাঝুঁকি থাকার বিষয়টি সতর্ক করেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ এর দ্বারা আক্রান্ত হয়নি।”

ঢাকা/মামুন/টিপু 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

একশ’র আগে প্রথম উইকেট হারাল জিম্বাবুয়ে

বৃষ্টি বিঘ্নিত সিলেট টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৫ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংস থেকে জিম্বাবুয়ের পাওয়া ৮২ রানের লিড শোধ করে জয়ের জন্য সফরকারীদের ১৭৪ রানের লক্ষ্য দিয়েছে। ওই লক্ষ্য তাড়ায় দুর্দান্ত শুরু করা জিম্বাবুয়ে ৯৫ রানে প্রথম উইকেট হারিয়েছে।

জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে জয়ের লক্ষ্যে ২৪ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ১০৭ রানে ব্যাট করছে। জয়ের জন্য ৬৭ রান দরকার তাদের। ক্রিজে থাকা ওপেনার ব্রায়ান বেনেট ৪৬ রানে খেলছেন। তার সঙ্গী নিক ওয়েলস। এর আগে ওপেনার বেন কারেন ৪৪ রান করে আউট হয়েছেন।

প্রথম বলেই আউট শান্ত, ব্যর্থ মিরাজ: বাংলাদেশ দল সিলেট টেস্টে অধিনায়ক শান্তর ব্যাটে আশা দেখছিল। তিনি ৬০ রান করে অপরাজিত ছিলেন। তৃতীয় দিন নির্ভার ব্যাটিং করতে দেখা গেছে তাকে। কিন্তু চতুর্থ দিন ক্রিজে ফিরে প্রথম বলেই আউট হয়ে যান এই বাঁ-হাতি ব্যাটার।

তার মতো হতাশ করেন মেহেদী মিরাজও। তিনি ক্রিজে এসে ব্যাট তুলে খেলতে শুরু করেন। ১১ রান করে ফিরে যাওয়ার আগে ছক্কাও হাঁকান। এরপর টেলেন্ডে বাংলাদেশ দলকে বিপদে ভরসা দেওয়া তাইজুল ইসলাম ব্যর্থ হয়ে ফিরলে চাপটা প্রবল হয় বাংলাদেশ দলের ওপর।

জাকেরের লড়াই: সকালে দ্রুত উইকেট হারানোর পর এক প্রান্ত দিয়ে লড়াই চালিয়ে যান জাকের আলী। তিনি শেষ ব্যাটার হিসেবে ১১১ বল খেলে ৫৮ রান করে আউট হন। চারটি চার ও একটি ছক্কা মারেন। জাকেরকে সঙ্গ দিতে পারেননি টেলেন্ডে খালেদ আহমেদ। তবে হাসান মাহমুদ৫৮ বল খেলে ১২ রান করেন। তাদের জুটি থেকে আসে ৩৫ রান।

প্রথম ইনিংসে বিপর্যয়: সিলেট টেস্টে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ দল। ১৯১ রানে অলআউট হয়ে যায় শান্ত, মুমিনুল, মুশফিকরা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে মুমিনুল ৫৬ ও শান্ত ৪০ রানের ইনিংস খেলেন। জাকের আলী ২৮ রান যোগ করেন। জিম্বাবুয়ের ব্লেজিং মুজুরাবানি ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ৩টি করে উইকেট নেন। মেধেভেরে ও নায়োচি নেন দুটি করে উইকেট।

জিম্বাবুয়ের লিড: প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ে দারুণ ব্যাটিং শুরু করে। তবে নাহিদ রানা ও মেহেদী মিরাজের বলে তাদের নাগালে রাখা সম্ভব হয়েছিল। জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে ২৭৩ রান তোলে। ৮২ রানের লিড নেয়। দলটির হয়ে ওপেনার ব্রায়ান বেনেট ৫৬ ও শন উইলিয়ামসন ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন। মিরাজ ৫টি ও নাহিদ নেন ৩ উইকেট।

সম্পর্কিত নিবন্ধ