সাতছড়ি বনে বিলুপ্তপ্রায় এশিয়াটিক ব্ল্যাক জাতের ভালুক
Published: 24th, January 2025 GMT
হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গভীর অরণ্যে এশিয়াটিক ব্ল্যাক প্রজাতির একটি ভালুকের সন্ধান পাওয়া গেছে। বিরল এই প্রজাতির বন্য ভালুক অত্যন্ত আক্রমণাত্মক স্বভাবের হয়। এরমধ্যে বনের ভেতরে পর্যটকসহ জনসাধারণের প্রবেশে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে উদ্যান কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে এসব তথ্য দেন সাতছড়ি বন্যপ্রাণি বিট কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ।
মামুনুর রশিদ জানান, চুনারুঘাটের রঘুনন্দন পাহাড়ে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের অবস্থান। ২৪৩ হেক্টর আয়তনের এ উদ্যানের পাশ ঘেঁষে আছে ৯টি চা-বাগান। উদ্যানের ভেতরে টিপরা পাড়ায় পাহাড়ি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ২৪টি পরিবারের বসবাস। ১৯৭ প্রজাতির জীবজন্তু ও ১৫০ থেকে ২০০ প্রজাতির পাখি আছে উদ্যানে। বাংলাদেশের সংরক্ষিত এ বনাঞ্চল পাখিদের অভয়াশ্রম। বনের ভেতরে লজ্জাবতী বানর, উল্লুক, চশমাপরা হনুমান, মুখপোড়া হনুমান, কুলু বানর, মেছোবাঘ, মায়া হরিণও আছে।
সাতছড়ির টিপরা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বাসিন্দা হারিস দেববর্মা শৌখিন ফটোগ্রাফার হিসেবে পরিচিত। তিনি বনের ভেতরে প্রাণ-প্রকৃতির নানা ছবি তোলেন। সম্প্রতি তিনি উদ্যানের গভীর অরণ্যে ছবি তুলতে গিয়ে বিরল প্রজাতির বন্য ভালুকের (এশিয়াটিক ব্ল্যাক প্রজাতি) সন্ধান পান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি প্রাণীটির ছবি তোলেন।
হারিস দেববর্মা বলেন, “আমি বিরল প্রজাতির ভালুকটি দেখে বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে এই বনে ওদের বসবাস আছে। দেখা মাত্রই ছবি তুলতে দেরি করিনি। পরে সেই ছবি প্রাণী বিশেষজ্ঞদের দেখানোর পর নিশ্চিত হই যে প্রাণীটি এশিয়াটিক কালো ভালুক।”
বন বিভাগ বলছে, এশিয়াটিক ব্ল্যাক জাতের এ ভালুক বিলুপ্তপ্রায়। এরা অত্যন্ত আক্রমণাত্মক স্বভাবের হয়। বন বিভাগের কর্মকর্তাদের ধারণা, ছোট-বড় মিলিয়ে বনে এ প্রজাতির ১০ থেকে ১২টি ভালুক আছে। এ প্রজাতির ভালুকের কালো পশম, একটি হালকা বাদামি মুখ ও বুকে একটি স্বতন্ত্র সাদা বা ক্রিমি প্যাঁচ থাকে, যা কখনো কখনো ইংরেজি ‘ভি’ অক্ষরের মতো দেখতে হয়। প্রাপ্তবয়স্ক ভালুকের ওজন ৬০ থেকে ২০০ কেজি। গড় ওজন ১৩৫ কেজি। সর্বভুক এ প্রাণী পোকামাকড়, বিটল লার্ভা, অমেরুদণ্ডি প্রাণি। মৌমাছি, ঘাস, ছাল, শিকড়, কন্দ, ফল ইত্যাদি খায়।
বিট কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, “আমাদের ভিলেজার হারিস দেববর্মার মাধ্যমে আমরা প্রথম সাতছড়িতে এ ধরনের ভালুক থাকার বিষয়টি জানতে পারি। পরে আমরা অনুসন্ধান করে সত্যতা পাই। এটি বিরল প্রাণী। এটির সংরক্ষণে আমরা কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছি। পর্যটকদের উদ্যানের ভেতরে প্রবেশে নিরাপত্তাঝুঁকি থাকার বিষয়টি সতর্ক করেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ এর দ্বারা আক্রান্ত হয়নি।”
ঢাকা/মামুন/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সামারিক শক্তিতে মিয়ানমারের চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ
চলতি বছর সামরিক শক্তির দিক থেকে মিয়ানমারের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার প্রকাশিত সূচকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই র্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সামরিক বাজেট। সেনাবাহিনীর আকার, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর শক্তিকেও বিবেচনা করা হয়েছে সমীক্ষায়।
গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সূচক অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপরে পরে রয়েছে রাশিয়া, চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া। পরমাণু শক্তিধর হলেও পাকিস্তানের অবস্থান ১২ নম্বরে। তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে ৩৫তম অবস্থানে। বাংলাদেশের আগে রয়েছে উত্তর কোরিয়া ও আর্জেন্টিনা। আর বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমার রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৬ কোটি ৬১ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে মোট সেনা সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৭ হাজার ৪০০ সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ২৫ হাজার ১০০ সেনা।
অন্যদিকে, মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যা ৫ কোটি ৭৫ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। মিয়ানমারের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার। মিয়ানমারের রিজার্ভ সৈন্য রয়েছে ২০ হাজার। দেশটির বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৫ হাজার সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ১৬ হাজার সেনা।
ঢাকা/শাহেদ