অ্যাপসের মাধ্যমে বিনিয়োগ, খোয়ালেন ১৩ লাখ টাকা
Published: 24th, January 2025 GMT
ফেসবুকে স্টক মার্কেটের একটি বিজ্ঞাপন দেখে অ্যাপসের মাধ্যমে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা বিনিয়োগের পর ভুক্তভোগী বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। তাঁর বিনিয়োগের অর্থ বেড়ে ডিজিটাল ওয়ালেটে দেখায় ৬৪ লাখ ৫ হাজার ২৮৭ টাকা। কিন্তু একটি টাকাও তিনি তুলতে পারেননি। বিনিয়োগসহ লভ্যাংশের টাকা ফেরত চাইলে প্রতারক চক্রের সদস্যরা তাঁকে আরও বিনিয়োগের পরামর্শ দেন। এ নিয়ে ধানমন্ডি থানায় মামলা হলে চক্রের বিষয়ে জানতে পারে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ডেমরা থেকে প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেপ্তাররা হলেন পাপ্পু কুমার সেন ও মো.
সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার (সাইবার) সুমন কুমার সাহা বলেন, ভুক্তভোগী ফেসবুক ব্যবহারের সময় আন্তর্জাতিক স্টক মার্কেটের বিজ্ঞাপন দেখে লিংকে প্রবেশ করেন। এরপর অজ্ঞাত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে তাঁর নম্বরে মেসেজ আসে। পরে আসামিরা ধাপে ধাপে নাম, এনআইডি, মোবাইল নম্বর দিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করিয়ে নেয়। তারা বাদীকে দুটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত করে। সেখানেও ভুক্তভোগীর পরিচিত অনেকে যুক্ত ছিল। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ট্রেডিং বিষয়ে কথাবার্তা হয়। আসামিদের কথামতো ভুক্তভোগী বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব নম্বরে ১৩ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৬ টাকা বিনিয়োগ করেন।
সুমন কুমার সাহা জানান, ওই অ্যাপসে ট্রেড করার পর ভুক্তভোগীর ডিজিটাল ওয়ালেটে প্রায় ৬৪ লাখ ৫ হাজার ২৮৭ টাকা দেখায়। পরে গ্রেপ্তার আসামিরা ভুক্তভোগীর সিটি ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখায় হিসাব নম্বরে পাঁচ হাজার টাকা ডিপোজিট করে। পরে আসামিদের কাছে তাঁর বিনিয়োগের টাকা ফেরত চাইলে তারা আরও বিনিয়োগ করতে বলে। একপর্যায়ে তিনি প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন।
সিআইডি সূত্র জানায়, আসামিরা যোগসাজশে এনআইডি কার্ড ছাড়া অবৈধভাবে সিম কার্ড সংগ্রহ করে। এ সিম কার্ড টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপসহ বিভিন্ন মাধ্যমে দেশি-বিদেশি গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করে। এসব নম্বর দিয়ে প্রতারণা করে আসছে চক্রটি। তারা ভুক্তভোগীদের থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে কৌশলে দেশের বাইরে পাচার করছে। গ্রেপ্তার দু’জনকে আদালতে তোলা হলে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জে নির্বাচন কর্মকর্তা ও কর্মচারী আটক
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে আটক করেছে পুলিশ। আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্যে সংযোজন- বিয়োজনসহ বায়োমেট্রিক জালিয়াতির অভিযোগে সোমবার রাত ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান ও ডাটা এন্ট্রি অপারেটর জুবায়ের আলম।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে।
সোমবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন শাখার উপ-পরিচালক তকবির আহমদ ও সহকারী প্রোগ্রামার আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে তদন্তকারী দল জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে আসে। রাতে অফিসে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ ডাটা এন্টি অপারেটরকে দেখতে পায় তদন্ত কমিটি। তখন নথিপত্রসহ অন্যান্য ডকুমেন্ট পর্যবেক্ষণ করে তারা দুর্নীতির তথ্য পান। বিশেষ করে এনআইডি সংক্রান্ত তথ্য সংযোজন-বিয়োজন এবং বায়োমেট্রিক জালিয়াতির প্রমাণ পায় তদন্তকারী দল। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তারা পুলিশকে কল দিয়ে অভিযুক্ত উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান ও ডাটা এন্ট্রি অপারেটর জুবায়ের আলমকে তাদের হেফাজতে দেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শুকুর মাহমুদ মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় এ প্রতিবেদককে জানান, নির্বাচন কমিশনের তদন্তকারী দলসহ তারা সরেজমিনে গিয়ে দুর্নীতির তথ্য পেয়েছেন। তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ দুজনকে পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
জগন্নাথপুর থানার ওসি রুল আমীন বলেন, দুজন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। কর্তৃপক্ষ মামলা করার পর তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে।