৯ ঘণ্টা বন্ধের পর দুই নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু
Published: 24th, January 2025 GMT
ঘন কুয়াশায় ফেরির মার্কিং বাতির আলো অস্পষ্ট হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘ নয় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং আরিচা-কাজিরহাট নৌপথের ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়।
এদিকে দীর্ঘ সময় ধরে ফেরি বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েন উভয় ঘাটে আটকে থাকা যানবাহনের যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সিরিয়াল অনুযায়ী যানবাহন পারাপার শুরু হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের সহ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো.
তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা থেকে ঘন কুয়াশায় দুর্ঘটনা এড়াতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট বন্ধ রাখা হয়। টানা ৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর এ নৌরুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। দীর্ঘ সময় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় উভয়ঘাটে যানবাহন সিরিয়ালে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সিরিয়াল অনুযায়ী যানবাহন পারাপার শুরু হয়েছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে পর্যাপ্ত ফেরি থাকায় দ্রুত যানবাহন পারাপার সম্ভব হচ্ছে।”
অন্যদিকে মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট নৌপথেও দীর্ঘ নয় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আবু আবদুল্লাহ বলেন, “ঘন কুয়াশায় মাঝরাতে ফেরির মার্কিং বাতির আলো অস্পষ্ট হয়ে আসায় আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা থেকে ৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সকাল সাড়ে ১০টায় স্বাভাবিক হয়।”
চলতি শীত মৌসুমের শুরু থেকে পদ্মা ও যমুনা নদী অববাহিকায় কুয়াশায় ফেরিসহ নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) নাসির মোহাম্মদ চৌধুরী। তিনি বলেন, “পদ্মা নদীর দৌলতদিয়া, পাটুরিয়া ও আরিচা এবং যমুনা নদীর কাজিরহাট নৌপথে সতর্কতার সঙ্গে ফেরিসহ নৌযান চলাচল করতে হচ্ছে।”
ঢাকা/চন্দন/ইমন
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট
আগামী ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এখন চলছে প্রতিমার বেচাকেনা। এবার প্রতিমার দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রীয়া থাকলেও কারিগররা বলছেন, জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় প্রতিমার দামও কিছুটা বাড়তি।
পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আশীর্বাদ লাভের আশায় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুধু বাড়িতেই নয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দেবীর পায়ে অঞ্জলী দিয়ে অনেক শিশুর শিক্ষাজীবন শুরু হবে।
এ পূজার প্রধান অনুসঙ্গ হলো প্রতিমা। ফলে জেলা শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ী, সদর উপজেলার সাতপাড়, বৌলতলী, কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, ঘাঘর বাজারসহ অনেক স্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এসব হাটে আনা এক একটি প্রতিমা প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে রাসপূর্ণিমা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
পুটিয়ার কৃষ্ণপুরে চলছে কাত্যায়নী পূজা
এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিমার দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, দাম সাধ্যের মধ্যে আবার কেউবা বলছেন দাম আগের চেয়ে বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে, এর মধ্যেও বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসব হাট থেকে কিনে নিচ্ছেন পছন্দমতো প্রতিমা। হাটে শুধু প্রতিমাই নয় বিক্রি হচ্ছে ফুল, মালা, মিষ্টিসহ পূজার অন্যান্য উপকরণও।
রীতি অনুযায়ী বিদ্যার দেবী সরস্বতি পূজার পাশাপশি বসন্ত পঞ্চমীতে গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, কলম ও বাদ্যযন্ত্রের পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শীত ঋতুর অবসান হয়ে বসন্ত ঋতুর আগমন বার্তা ঘটবে।
প্রতিমা কিনতে আসা উত্তম সাহা বলেন, “শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীতে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে। এবার বাড়িতে পূজা করাব। ছেলেকে নিয়ে হাটে প্রতিমা কিনতে এসেছি। ঘুরে ফিরে পছন্দমত প্রতিমা কিনেছি। আমি মনে করি, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।”
অপর ক্রেতা নারু গোপাল বলেন, “প্রতিবছর এখানে প্রতিমার হাট বসে। এবে এবার প্রতিমার আমদানি একটু কম। তারপরেও দেখে বুঝে দরদাম করে একটি প্রতিমা কিনেছি। এবার আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পূজা হবে।”
অপর ক্রেতা পরিমল চন্দ্র ঢালী বলেন, “এক একটি প্রতিমা ২০০ তেকে ১০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে। হাটে এসে প্রতিমা দেখছি। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমার দাম একটু বেশি।”
গোপালগঞ্জ শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীর হাটে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা উত্তম পাল বলেন, “এবার ২০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে ১০টি বিক্রি করা হয়েছে। তবে এবার ক্রেতার সংখ্যা একটু কম। আশা করি, বাকি দুই দিনও বেচাকেনা হবে।”
কার্ত্তিক পাল বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রাম থেকে ৩০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি বিক্রির জন্য। চার থেকে পাঁচটি প্রতিমা বিক্রি করেছি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, তাতে প্রতিমা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ প্রতিমা তৈরির অনুসঙ্গের যে দাম তাতে খরচও উঠছে না।”
স্বপন পাল নামে এক বিক্রেতা বলেন, “প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত ছোন, রংসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম প্রতিবছর বেড়েই চলছে। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেই দামে বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তারপরেও বাব-দাদার পেশা আমরা ধরে রেখেছি।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ