সেনাবাহিনীর সামরিক রীতি অনুযায়ী ঐতিহ্যবাহী ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১৭তম ‘কর্নেল অব দ্য রেজিমেন্ট’ হিসেবে অভিষিক্ত হলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, চট্টগ্রাম ‘দি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারের’ (ইবিআরসি) শহীদ এম আর চৌধুরী প্যারেড গ্রাউন্ডে অভিষেক অনুষ্ঠানে সামরিক রীতি অনুযায়ী ঐতিহ্যবাহী ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেন সেনাপ্রধান।

সেনাবাহিনী প্রধান শহীদ এম আর চৌধুরী প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছলে তাঁকে প্রচলিত সামরিক রীতি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে অভিবাদন জানানো হয়। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি চৌকস দল তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এর পর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের জ্যেষ্ঠতম অধিনায়ক এবং জ্যেষ্ঠতম মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার সেনাপ্রধানকে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ‘কর্নেল র‌্যাংক ব্যাজ’ পরিয়ে দেন। এ সময় সেনাপ্রধান উপস্থিত সবার উদ্দেশে তাঁর দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। পরে তিনি ইবিআরসির কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন করেন এবং স্মৃতি কানন প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ করেন।

অনুষ্ঠান শেষে সেনাপ্রধান ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৩৭তম বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন। এই রেজিমেন্টের উন্নয়ন, পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও দেশ-বিদেশে পরিচালিত কার্যক্রমের বিষয়ে মতবিনিময় করেন।

অনুষ্ঠানে সেনাসদর, আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড, স্থানীয় ফরমেশন এবং ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পদবির সদস্য এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ

বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।

সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।

জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।

জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।

এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।

আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।

বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।

বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।  পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ