যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) দেশটির সাতটি অঙ্গরাজ্য থেকে তিন দিনে প্রায় ৫৩৮ অনথিভুক্ত অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া ৩৭৩ জনকে আটক করা হয়। তাদের কারও কারও বিরুদ্ধে নিউইয়র্ক ও নিউ জার্সির শহরগুলোতে নানা অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

নিউইয়র্কে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে এল সালভাদরের একজন এমএস-১৩ গ্যাং সদস্য। তিনি জ্যামাইকার একজন নাগরিক। অপ্রাপ্তবয়স্ক একজনকে যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত তিনি। এছাড়া হন্ডুরাসের একজন নাগরিক রয়েছেন যিনি মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর দায়ে অভিযুক্ত। এ রকম অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বোস্টন, ডেনভার, ফিলাডেলফিয়া, আটলান্টা, সিয়াটল, মিয়ামি ও ওয়াশিংটন, ডিসিতে। 

নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে অভিবাসীদের আটকে রাখা বা বিতাড়িত করতে বাধ্য করতে পারে না। তিনি বলেন, ‌‘প্রেসিডেন্ট সংবিধানকে একতরফাভাবে পরিবর্তন করতে পারেন না। আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অফিসের সঙ্গে কাজ করতে রাজি, তবে আমরা দুর্বল বা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষা করব, যার মধ্যে অভিবাসী সম্প্রদায়ও অন্তর্ভুক্ত।’

এদিকে নিউইয়র্ক সিটির স্কুলগুলো বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, কোনো পরিস্থিতিতেই আইসিই এজেন্টদের স্কুলে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া যাবে না। সোমবার শপথ নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ১০০টি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন তার মধ্যে কয়েকটি সরাসরি অভিবাসনবিরোধী ছিল। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণের পথ বন্ধ করে দেন। পাশাপাশি এমন একটি আদেশে সই করেন, যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে শুরু হয় বিতর্ক। তা হলো– নথিপত্রহীন বাবা-মা যদি যুক্তরাষ্ট্রে সন্তান জন্ম দেন, তবে ওই সন্তান দেশটির নাগরিক হতে পারবে না। প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেওয়ার পরপরই ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ নির্বাহী আদেশ সাময়িক স্থগিত করেছেন আদালত। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের সিয়াটলে ফেডারেল বিচারক জন কুফনার এ আদেশ দেন। আদেশটি স্থগিত করতে ওয়াশিংটনের অ্যাটর্নি জেনারেল নিক ব্রাউন এ আবেদন করেছিলেন।

আদালত ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশকে ‘পুরোপুরি অসাংবিধানিক’ বলে বর্ণনা করেন। বিচারক জন কুফনার বলেন, ‘আমি চার দশক ধরে (আদালতের) এ বেঞ্চে আছি। আমি আর কোনো মামলা এত স্পষ্ট দেখিনি।’ ওয়াশিংটন ছাড়াও অ্যারিজোনা, ইলিনয় ও ওরেগন অঙ্গরাজ্যে এদিন এসব মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার বাতিল প্রসঙ্গে আইনজীবীদের দাবি, প্রেসিডেন্ট বা ফেডারেল এজেন্সি সংবিধান অনুসারে এ ধরনের শর্ত আরোপ করার অধিকার রাখে না।

এ বিষয়ে কুইন্সের একটি শহরের মেয়র অ্যাডামস বলেছেন, শিশুরা স্কুলে যাবে। যাদের স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন, তারা হাসপাতালে যাবে। যারা অপরাধের শিকার, তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলবে। আমরা সবার জন্য দাঁড়াবো, চিহ্নিত ও অনথিভুক্ত উভয়ের জন্য। নিউইয়র্কে বর্তমানে প্রায় ৪ লাখ অনথিভুক্ত অভিবাসী রয়েছে।

নিউ জার্সির নিউয়ার্ক শহরের মেয়র রাস বারাকা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার তার শহরে আইসিই এজেন্টরা একটি অভিযান চালিয়েছে। পরে ইউএস ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট এজেন্টরা নিউয়ার্কের একটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে অনথিভুক্ত বাসিন্দাদের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদেরও আটক করেছে, কিন্তু কোনো ওয়ারেন্ট দেখায়নি। আমাদের শহর মানুষের ওপর এভাবে অবৈধ সন্ত্রাস চালানো সহ্য করবে না।

প্রসঙ্গত, নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি ও কানেকটিকাটসহ ২২টি রাজ্য এবং ডিসি ও সান ফ্রান্সিসকো ট্রাম্পের আদেশের বিরুদ্ধে ফেডারেল কোর্টে মামলা করেছে, যেখানে অনথিভুক্ত অভিবাসী শিশুদের নাগরিকত্ব বাতিল করার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বাবার ভুলের জন্য ক্ষমা চাইলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

বাবার ঠিকাদারি লাইসেন্স নিয়ে মুখ খুলেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার পর নিজ ফেসবুকে পেইজে বাবার ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।  

ফেসবুকে আসিফের দেওয়া পোস্টটি তুলে দেওয়া হলো- প্রথমেই আমার বাবার ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি। গতকাল রাত ৯টার দিকে একজন সাংবাদিক কল দিয়ে আমার বাবার নামে ইস্যুকৃত ঠিকাদারি লাইসেন্সের বিষয়ে জানতে চাইলেন। বাবার সাথে কথা বলে নিশ্চিত হলাম তিনি জেলা পর্যায়ের (জেলা নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার এর কার্যালয় থেকে ইস্যুকৃত) একটি লাইসেন্স করেছেন। বিষয়টি উক্ত সাংবাদিককে নিশ্চিত করলাম। 

তিনি পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, নিউজও হলো গণমাধ্যমে। নানা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে তাই ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজনবোধ করলাম। আমার বাবা একজন স্কুলশিক্ষক। আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভুঁইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। স্থানীয় একজন ঠিকাদার কাজ পাওয়ার সুবিধার্থে বাবার পরিচয় ব্যবহার করার জন্য বাবাকে লাইসেন্স করার পরামর্শ দেন। বাবাও তার কথায় জেলা নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার থেকে একটি ঠিকাদারি লাইসেন্স করেন। রাষ্ট্রের যেকোনো ব্যক্তি ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে যেকোন লাইসেন্স করতেই পারে। তবে আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় বাবার ঠিকাদারি ব্যবসায় জড়ানো স্পষ্টভাবেই কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট। বিষয়টি বোঝানোর পর আজ বাবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাইসেন্সটি বাতিল করা হয়েছে। উল্লেখ্য, মধ্যবর্তী সময়ে উক্ত লাইসেন্স ব্যবহার করে কোন কাজের জন্য আবেদন করা হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জবি রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবিতে কুশপুত্তলিকা দাহ, ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম
  • রিয়ালের আগ্রহ নিয়ে মুখ খুললেন অ্যালিস্টার 
  • ‘কিছু লোকজনের অনুরোধে’ ঠিকাদারি লাইসেন্স নিয়ে ‘বিব্রত’ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা
  • সরকার বাংলাদেশকে উৎপাদন ও অর্থনৈতিক কেন্দ্রে রূপান্তর করতে চায়: বিনিয়োগকারীদের প্রধান উপদেষ্টা
  • দুর্লভ হীরা চুরি, প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার খেলা
  • ‘জুয়েল থিফ’
  • বাবার ঠিকাদারি লাইসেন্স ইস্যুতে ক্ষমা চাইলেন উপদেষ্টা আসিফ
  • বাবার ঠিকাদারির লাইসেন্স ছিল, জানিয়ে ক্ষমা চাইলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
  • রহস্যময় ‘জুয়েল থিফ: দ্য হাইয়েস্ট বিগিন্স’
  • বাবার ভুলের জন্য ক্ষমা চাইলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ