বরাদ্দের দোকান ভাড়ায় খাটাচ্ছেন শিক্ষক-কর্মকর্তা, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
Published: 24th, January 2025 GMT
রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বরাদ্দের দোকান ভাড়ায় খাটানোর অভিযোগ উঠেছে। নামমাত্র মূল্যে প্রশাসন বরাদ্দ পেলেও সেগুলো বাইরের ব্যবসায়ীর কাছে তারা ভাড়া দিচ্ছেন কয়েক গুণ বাড়তি দামে। আবার বড় অঙ্কের টাকা জামানতও নিচ্ছেন। ফলে এসব দোকানের পণ্য বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ফটক-সংলগ্ন বাজারে ফার্মেসি, স্টেশনারি, লাইব্রেরি, মিনি রেস্টুরেন্ট, মুদি, সেলুন, মাছ-মাংস, ডিম, সবজি মিলে ২০ দোকান ও ১৪টি কাঁচাবাজারের স্টল রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানরত শিক্ষার্থী ছাড়াও আশপাশের প্রায় ১০ হাজার মানুষ এ বাজারের ওপর নির্ভরশীল। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্বল্প ভাড়ায় দোকান বরাদ্দ দিলেও তা তৃতীয় পক্ষের কাছে ভাড়া দিয়ে মুনাফা লুটছেন বরাদ্দ পাওয়া শিক্ষক-কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিটি কাঁচাবাজারের দোকান ১ হাজার এবং বড় দোকান ২ হাজার টাকায় ভাড়া দিয়েছে প্রশাসন। বেশির ভাগ দোকান বরাদ্দ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা। কিন্তু তারা এসব দোকান ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বাইরের খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন। দোকানপ্রতি দেড় থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানত নিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কম টাকায় দোকান বরাদ্দের উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের সুলভ মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা। কিন্তু বরাদ্দপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের চাতুরির কারণে এখানে সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম বাইরের বাজারের তুলনায় বেশি। মাছ-মুরগি কেজিতে ১০-২০ টাকা বেশি দিতে হয়। স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আল রাকিব বলেন, মিনি বাজারে সবজিসহ সব পণ্যের দাম তুলনামূলক বেশি। কেন বেশি রাখেন প্রশ্নে দোকানিরা জানান, দোকান পেতে তারা জামানত হিসেবে অনেক টাকা খরচ করেছেন। মাসে ভাড়াও অনেক বেশি। প্রশাসন জেনেও নির্বিকার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দোকানি জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সরাসরি তাদের দোকান ভাড়া দিলে সুলভ মূল্যে পণ্য সরবরাহ করতে পারতেন।
দোকান বরাদ্দ পাওয়া অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘দোকান পেতে আমাদের বড় বিনিয়োগ করতে হয়েছে। লাভের জন্যই করেছি। আমরা দুই হাজার টাকায় দোকান নিয়েছি বলে কি একই অর্থে ভাড়া দেব? তা ছাড়া প্রশাসন তো নিয়ম করেনি, আমরা কত টাকায় ভাড়া ওঠাতে পারব?’
উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল লতিফ বলেন, ‘বিষয়গুলো নিয়ে কাজ চলছে। নীতিমালার পর এক-দেড় মাসের মধ্যে নতুন কমিটির মাধ্যমে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে। আশা করছি, তখন বাজার হবে শিক্ষার্থীবান্ধব।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর মকর ত
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের কৃষিখাতে ৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ করবে পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটি
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত প্রভাব ফেলে এমন উদ্যোগে অর্থায়নকারী আন্তর্জাতিক তহবিল ‘পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটি’। কৃষকদের সহায়তা করতে দেশীয় প্রতিষ্ঠান আই-ফার্মারকে পাঁচ লাখ ডলারের এই সহায়তা দিচ্ছে তহবিলটি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নেক্সাস ফর ডেভেলপমেন্টের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এই তহবিলের অর্থায়ন আই-ফার্মারের মাধ্যমে দেশের ক্ষুদ্র কৃষকদের সরাসরি উপকৃত করবে। এই তহবিল কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে কৃষিপণ্য সংগ্রহ ও উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে মানসম্পন্ন কৃষি উপকরণ সময়মতো সরবরাহ নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
এই বিনিয়োগের মাধ্যমে পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটি ২০২৪ সালে তাদের আঞ্চলিক কার্যক্রমে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করার পর প্রথমবারের মতো এই খাতে প্রবেশ করল। ক্ষুদ্র কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম করে তুলছে আই-ফার্মার। প্রতিষ্ঠানটি কৃষকদের উচ্চমানের কৃষি উপকরণ, আর্থিক সহায়তা, কৃষি পরামর্শ, বিমা সুবিধা ও ন্যায্য বাজার সংযোগ নিশ্চিত করছে। কৃষক, সরবরাহকারী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে আই-ফার্মার উৎপাদন বাড়াতে, আয় বাড়াতে ও টেকসই কৃষি চর্চা প্রসারে ভূমিকা রাখছে।
নেক্সাস ফর ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক লরা আলসেনাস বলেন, বাংলাদেশে ক্ষুদ্র কৃষকেরা এখনও সহজ শর্তে অর্থ ও মানসম্মত কৃষি উপকরণ পাওয়ার জন্য নানারকম বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। আইফার্মারের উদ্ভাবনী মডেল কৃষি সরবরাহ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনেছে এবং কৃষকদের জন্য অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তৈরি করছে। পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটির এই বিনিয়োগের ঘোষণা তাদের প্রভাব আরও বিস্তৃত করতে এবং বাংলাদেশে আরও টেকসই ও স্থিতিশীল খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
আইফার্মারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহাদ ইফাজ বলেন, পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটির এই অর্থায়নের ঘোষণা আমাদের আরও বেশি কৃষককে সহায়তা দিতে সক্ষম করবে। এর মাধ্যমে আমরা আরও ভালো মানের কৃষি উপকরণ, সহজতর আর্থিক সহায়তা ও শক্তিশালী সাপ্লাই চেইন নিশ্চিত করতে পারবো, যা সরাসরি কৃষকের আয় ও জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটির মাধ্যমে নেক্সাস ফর ডেভেলপমেন্ট জলবায়ু পরিবর্তন, লিঙ্গ সমতা ও দারিদ্র্য বিমোচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কাজ করা প্রভাবশালী উদ্যোগগুলোকে সহায়তা করে আসছে। সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত এই তহবিলটি, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও বাংলাদেশে জলবায়ুবিষয়ক উদ্যোগগুলোর জন্য এই তহবিল আর্থিক সাহায্য প্রদান করে থাকে। এখন পর্যন্ত এই তহবিল থেকে ৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।