হাজার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী গ্রহণে কতটা প্রস্তুত মেক্সিকো
Published: 24th, January 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত হাজার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশীকে গ্রহণ করার পরিকল্পনা মেক্সিকোর জন্য বেশ উচ্চাভিলাষী। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সীমান্তে ৯টি কেন্দ্র স্থাপন করা হবে; পার্কিংয়ের স্থান, স্টেডিয়ামসহ বিভিন্ন স্থানে বানানো হবে বড় বড় তাঁবু। সেখানে থাকবে ভ্রাম্যমাণ রান্নাঘর। এসব কিছুর দেখভাল করবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। এ প্রচেষ্টার নাম দেওয়া হয়েছে ‘মেক্সিকোর আলিঙ্গন’।
গতকাল বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, মেক্সিকোর কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে বেশ আগে থেকেই পর্যালোচনা করছেন।
গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এরই মধ্যে অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কার্যক্রম চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন। বিশাল এ কর্মযজ্ঞ সম্পাদনে মার্কিন সরকারের ৩৪টি ফেডারেল সংস্থা ও ১৬টি অঙ্গরাজ্যের সরকার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশ নেবে। তারা ফেরত পাঠানো লোকজনকে নিজ নিজ দেশে পৌঁছে দেওয়াসহ চিকিৎসা সুবিধা দেবেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেক্সিকোতে গিয়ে এ লোকজন যাতে চাকরির সুযোগ পান, সেজন্য এ বিষয়ে তারা ওই দেশের সরকারের সঙ্গেও কথা বলবেন।
অপরদিকে মেক্সিকোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আইসলা রদ্রিগেজ বলছেন, সীমান্তের ওপার থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের গ্রহণ করতে তারা প্রস্তুত আছেন। ফেরত পাঠানোর কারণে এ বাসিন্দারা নিজ নিজ বাড়ি ফেরা ও স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবম বিপুলসংখ্যক বাসিন্দাকে এভাবে ফেরত পাঠানোর ঘটনাকে ‘একতরফা’ বলে বর্ণনা করেছেন। এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে তিনি ‘সম্মত নন’ বলেও ইতোমধ্যে জানিয়েছেন। সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে ৪০ লাখের মতো মেক্সিকোর নাগরিক আছেন, যাদের বৈধতার কোনো নথি নেই। কেবল মেক্সিকোই নয়, যুক্তরাষ্ট্রে গুয়েতেমালার অনেক নথিপত্রহীন বাসিন্দা আছেন।
অভিবাসনবিষয়ক একটি সংস্থার সঙ্গে কাজ করেন সার্গিও লুনা। তিনি বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে এ ধরনের একটি পরিবেশ সৃষ্টি হবে– তার জন্য প্রস্তুত ছিল না মেক্সিকো। অভিবাসীবিষয়ক দেশটির আরেকটি সংস্থার পরিচালক গেব্রিয়েল হারনান্দেজ বলেন, ‘আমাদের কোনো প্রস্তুতি নেই। কারণ, সে ধরনের আর্থিত সামর্থ্য আমাদের নেই। আমরা এটিকে জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচনা করছি; এটি যেন ভূমিকম্প।’
বিবিসি জানায়, নথিপত্রহীন অভিবাসন প্রত্যাশীদের তাড়ানোর কর্মসূচিতে অংশ নিতে মেক্সিকো সীমান্তে ১০ হাজার সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা করছেন ট্রাম্প। এরই মধ্যে দেড় হাজার সেনাকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। তারা আপাতত আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে অংশ নেবেন না। এরই মধ্যে মেক্সিকো তাদের অভ্যন্তরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিপুলসংখ্যক অভিবাসন প্রত্যাশীকে গ্রহণ করতে আশ্রয়কেন্দ্র গঠনের কাজ শুরু করেছে।
ট্রাম্পের কড়াকড়ির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে শুরু হয়েছে নথিপত্রহীনদের ধরতে অভিযান। গত মঙ্গলবার ৩০৮ জনকে আটক করা হয়েছে। মার্কিন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের দাবি, যাদের আটক করা হয়েছে, তারা বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। এ ধরনের অন্তত সাত লাখ বাসিন্দা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাদের আটকের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্কুল, গির্জা ও হাসপাতালে অভিযান চালানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অতীতে এসব স্থানে অভিযান চালানো যেত না।
সিবিএস নিউজ জানায়, সিন কারেনকে গোয়েন্দাপ্রধান করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। গত জুলাইয়ে পেনসিলভানিয়ায় হত্যাচেষ্টার শিকার হলে ট্রাম্পকে আগলে রাখেন কারেন।
নিজেকে ‘ক্ষমা’ করে যাননি বাইডেন
সদ্য সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁর মেয়াদের শেষ দিকে অনেককে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে গেছেন। তিনি ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে হামলার তদন্তে থাকা বেশ কয়েকজনকেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। এ নিয়ে ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি সবাইকে ক্ষমা করে গেছেন। মজার বিষয়। দুঃখের বিষয় নিজেকে ক্ষমা করে যাননি।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
কানাডায় নির্বাচন: মার্ক কার্নির লিবারেল সদর দপ্তরে উৎসব শুরু
কানাডায় ভোট গ্রহণ শেষে চলছে গণনা। ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল আসতে আরও খানিকটা সময় লাগবে। তবে এরই মধ্যে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির দল লিবারেল পার্টির সদর দপ্তরে উৎসব শুরু হয়ে গেছে। কারণ, দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিবিসি বলেছে, এবার লিবারেল সরকার হতে চলেছে।
কানাডার ৩৪৩ আসনের হাউস অব কমন্সে লিবারেল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, নাকি তাদের সংখ্যালঘু সরকার গঠন করতে হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে মার্ক কার্নিই যে প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, তা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বিবিসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, লিবারেল ১৫৬টি আসনে এগিয়ে আগে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন করতে চাই ১৭২টি আসন। খুব একটা পিছিয়ে নেই প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টি। দলটি ১৪৭ আসনে এগিয়ে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, আমাদের নির্বাচন থেকে দূরে থাকুন। কানাডা সব সময় গর্বিত, সার্বভৌম ও স্বাধীন দেশ থাকবে এবং আমরা কখনো ৫১তম অঙ্গরাজ্য হব না।—পিয়েরে পলিয়েভর, বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির নেতাপুরোপুরি বদলে যাওয়া এক নির্বাচনী পরিবেশে গতকাল সোমবার ভোট দিয়েছেন কানাডার জনগণ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপ এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করার ইচ্ছা দেশটিতে নির্বাচনের আগে প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছিল।
ট্রাম্পের এ ধরনের হুমকি কানাডায় দেশপ্রেমের জোয়ার সৃষ্টি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে লিবারেল পার্টির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী মার্ক কার্নির প্রতি জনসমর্থন বেড়ে যায়।
লিবারেল ১৫৬টি আসনে এগিয়ে আগে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন করতে চাই ১৭২টি আসন। খুব একটা পিছিয়ে নেই প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টি। দলটি ১৪৭ আসনে এগিয়ে।অথচ যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক কথাবার্তা শুরু হওয়ার আগে জরিপে প্রতিদ্বন্দ্বী পিয়েরে পলিয়েভরের কনজারভেটিভ পার্টি থেকে সামান্য পিছিয়ে ছিল কার্নির লিবারেল দল। ট্রাম্প কানাডাকে নিয়ে আক্রমণাত্মক কথা বলা শুরু করলে কানাডীয়দের মধ্যে দেশপ্রেমের জোয়ার ওঠে এবং জরিপের পূর্বাভাসে হঠাৎ বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
ভোটের দিন সকালেও ট্রাম্প কানাডাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন। ট্রাম্প লিখেছেন, কানাডা যদি যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম কাঙ্ক্ষিত অঙ্গরাজ্য হয়, তবে শূন্য শুল্কের সম্মুখীন হবে।
লিবারেল পার্টির সদর দপ্তরে সমর্থকদের উল্লাস