বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর বাংলাদেশে অনেক বার সরকার পরিবর্তন হয়েছে। সরকারের ধরন পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু কখনোই চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সমস্যার সম্মুখীন হয়নি। প্রতিটি সরকার চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে বলে উল্লেখ করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। গত বুধবার চায়না মিডিয়া গ্রুপ বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। বুধবার বেইজিং থেকে সাংহাই যাওয়ার সময় সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.

তৌহিদ হোসেন গত ২০ জানুয়ারি থেকে দ্বিপক্ষীয় সফরে চীনে রয়েছেন। গত ২১ জানুয়ারি বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন। আজ শুক্রবার উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আলোচনা বিষয়ে প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতা ও ব্যাপ্তি অনেক বেশি। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সহযোগিতার সম্পর্ক আছে। আলোচনায় সব বিষয়ই এসেছে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আলোচনায় বাণিজ্য, উন্নয়ন প্রকল্প, বিনিয়োগ– এই জিনিসগুলো প্রাধান্য পেয়েছে। রাজনৈতিক কিছু বিষয় নিয়েও আলাপ-আলোচনা হয়েছে। আমাদের সরকার তো অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকার তো দীর্ঘ মেয়াদে থাকবে না। এটা নিয়ে হয়তো কারও মনে দ্বিধা থাকতে পারে– সরকার কতদিন থাকবে। এই সময়ে বিনিয়োগ বা চুক্তিতে যাওয়া কতটুকু লাভজনক হবে, কিংবা টেকসই হবে কিনা ইত্যাদি। আমার মনে হয়, এই সফরের মাধ্যমে যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছিল, সেগুলো খুব সহজে দূর করা গেছে। 

দুই দেশের সম্পর্কের ধারাবাহিকতার প্রসঙ্গ টেনে তৌহিদ হোসেন বলেন, এই সফরে যাদের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি, তাদের বলেছি, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক কোনো বিশেষ সরকার বা রাজনৈতিক দলের ওপর নির্ভর করে না। ১৯৭৫ সালে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর আমরা এ বছর সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী পালন করছি। আমাদের সরকার অনেক বার পরিবর্তন হয়েছে। সরকারের ধরন পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু কখনোই চীনের সঙ্গে সম্পর্ক সমস্যার সম্মুখীন হয়নি। 

এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সরকারি সফরে চীনে অবস্থানরত পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন চীনা অটোমোবাইল কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক যানবাহন (ইভি) উৎপাদন কারখানা স্থাপনের কথা বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন। সাংহাইয়ের উপকণ্ঠে উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন বৈদ্যুতিক যানবাহন উৎপাদন কারখানা পরিদর্শনকালে তিনি এ আহ্বান জানান। 

বুধবার সন্ধ্যায় সাংহাই শিল্প ও বাণিজ্য ফেডারেশনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। আলোচনার সময় তারা চীনা উৎপাদকগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বিশেষ করে চট্টগ্রামে অবস্থিত চীনা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কারখানা স্থাপন এবং চট্টগ্রাম ও সাংহাইয়ের মধ্যে বিমান যোগাযোগ বিষয়ে আলোকপাত করেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র উপদ ষ ট পরর ষ ট র উপদ ষ ট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কখনও বলিনি আমি আর অভিনয় করব না: নাঈম

নব্বই দশকের জনপ্রিয় নায়ক নাঈম। তবে এখন অভিনয়ে নেই। নানা ইস্যুতে আছেন আলোচনায়। ১৯৯৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমায় ‘চাচা, হেনা কোথায়?’  সংলাপটি কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। এ সংলাপকে কেন্দ্র করে আলোচনায় উঠে এসেছেন তিনি। সংলাপ ও সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির নানা প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন

কেমন আছেন?
আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি। নিজের মানসম্মান নিয়ে বেঁচে আছি। সবাই আমাকে এবং আমার পরিবারকে ভালোবাসে। এ ভালোবাসা নিয়েই জীবন চলে যাচ্ছে। 

হঠাৎ করে ভাইরাল হলো ‘‘চাচা, হেনা কোথায়?’ সংলাপটি, এটার সঙ্গে তো আপনিও আলোচনায় এলেন...
দেখুন, ফিল্ম অনেক বড় বিষয়। প্রায় তিন দশক আগেও একটি সিনেমার ডায়ালগ নিয়ে মানুষ এখনও আলোচনা করছে। ‘চাচা, হেনা কোথায়? তার একটি দৃষ্টান্ত। গত এক মাস হলো আমি শুধু দেখছি, কীভাবে এটা পুরো দেশের মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়েছে। এটার দ্বারা প্রমাণ হয়, ভালো সিনেমা, ভালো সংলাপ ও ভালো শিল্পী কতটা দর্শকের মাঝে বেঁচে থাকেন। বিশেষ করে ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমার নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী বাপ্পারাজ-শাবনাজসহ পুরো টিমকে ধন্যবাদ জানাই। শাবনাজ যেহেতু এখন আমার জীবনসঙ্গী। সেই সূত্র ধরেই হয়তো আলোচনায়।

বাপ্পারাজ-শাবনাজ জুটি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
এটা তো পুরো দেশের মানুষের জানা। বাপ্পারাজের মতো অভিনেতা পাওয়া কঠিন। আমার স্ত্রী হিসেবে বলব না, ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমাসহ সব সময়ই ও ভালো অভিনয় করেছে। জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। তারা দু’জনই এককথায় অসাধারণ অভিনয়শিল্পী। 

দর্শক তো এখনও আপনাকে অভিনয়ে চায়। অভিনয়ে ফেরার কোনো পরিকল্পনা আছে?
সেটা নির্ভর করবে নির্মাতা ও প্রযোজকের ওপর। তারা যদি আমার ইমেজ, স্টাইল ও প্রেজেন্টেশন নিয়ে ভেবে গল্প বানান আর আমার যদি ভালো লাগে, তাহলে অবশ্যই করব। একটা সময় আমি সিনেমা থেকে অনেক দূরে চলে গেছি। তবে আমি কখনও বলিনি যে, আমি অভিনয় করব না কিংবা সিনেমা নির্মাণ করব না। এখনও আমার ইচ্ছে করে ভালো গল্প নিয়ে একটা সিনেমা বানাব। সিনেমা তো আমার ভেতরে। আমি তো কাজ করতে চাই। ক্যামেরার পেছনে বা সামনে; একটা সময় অবশ্যই আমি করব। তবে সময়টা বলতে পারছি না। 

আমাদের সিনেমা শিল্পকে এগিয়ে আপনার কোনো পরামর্শ আছে কী? 
অনেক ধরনের মানুষ নিয়ে একটা সিনেমা বানাতে হয়। এখানে নির্মাতা, শিল্পী, টেকনিশিয়ানসহ অনেক বিষয় মাথায় রেখে চিন্তা করতে হয়। একটা  ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়াবে কীভাবে; এটা নিয়ে আমার একটা চিন্তা থাকতে পারে। আমার একার উদ্যোগ বা চিন্তা দিয়ে হবে না। এ ক্ষেত্রে সবার সমান প্রচেষ্টা থাকতে হবে। তা হলে একটা ইন্ডাস্ট্রি আপনা আপনিই এগিয়ে যাবে।

আপনি তো সাংস্কৃতিক পরিবারের ছেলে...
হ্যাঁ, আমি নবাব স্যার সলিমুল্লাহর প্রপৌত্র। এজন্য আমি গর্ববোধ করি। উপমহাদেশে ১৯৩৮ সালে কিন্তু ঢাকার নবাব পরিবার থেকেই প্রথম সবাক চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়। তখন আমাদের পরিবার থেকেই ছিল নির্মাতা, নায়ক ও ক্যামেরাম্যান। অর্থাৎ আমি যে পরিবারে বড় হয়েছি, এটা ছিল একটা সাংস্কৃতিকমনা পরিবার।

সিনেমা হল সংকট নিয়ে কী বলবেন?
আমাদের ভালো সিনেমা বানাতে হবে। তাহলে তো দর্শক সিনেমা হলে আসবে। ভালো সিনেমা না বানিয়ে দর্শকদের বলব আপনারা হলে আসছেন না কেন? এটা তো ঠিক না। আগে আমাদের ভালো সিনেমা বানাতে হবে। তাহলে দর্শক সিনেমা হলে আসবে। হল এমনিতে বাড়বে। এখানে সবার প্রচেষ্টা থাকতে হবে। কারও একার প্রচেষ্টায় হবে না।

সিনেমার স্বর্ণযুগ কি ফিরিয়ে আনা সম্ভব?
অবশ্যই সম্ভব। ‘না’ বলে আমার কাছে কথা নেই। তবে টাইম লাগে। সবাই মিলে একযোগ হয়ে যদি একটা প্ল্যাটফর্ম দাঁড় করাতে পারি, তাহলে সব সম্ভব।

ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র অনেকেই বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন কিন্তু আপনি গ্রামে চলে গেলেন কেন?
ঢাকায় আমার দাদার বাড়ি আর টাঙ্গাইল নানার বাড়ি। ছোটবেলা থেকে নানার বাড়িতেই আমি বড় হয়েছি। গ্রামের মাটির সঙ্গে তো প্রতিটা মানুষ জড়িত। আমরা বিভিন্ন বিভাগের মানুষ। কর্মজীবনে আমাদের ঢাকায় থাকতে হয়। ঈদের ছুটিতে আমরা কীভাবে বাড়ি চলে যায়! তো কোনো সময় আমি চিন্তাও করিনি যে বিদেশে স্থায়ী হবো। সব সময় ভেবেছি, এ দেশেতে আমার জন্ম, এ দেশের মাটিতে যেন আমার মৃত্যু হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নানার ৫শ টাকা নেওয়ায় বকুনি, অভিমানে লুকানো শিহাব মারা গেল বস্তাচাপায়
  • স্ত্রী-শ্যালিকাকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বর্ণালংকার-ফোন নিয়ে লাপাত্তা সামিউল
  • কেন মেয়ের সব ছবি মুছে ফেললেন আলিয়া
  • ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে পারেন ট্রাম্প
  • কখনও বলিনি আমি আর অভিনয় করব না: নাঈম
  • ‘যদি’ ‘কিন্তু’ ‘অথবা’ ছাড়াই ভুল সংশোধন করে নেব: হাসনাত আবদুল্লাহ